Logo
শিরোনাম

আগাম ধান কেটে হিসাব মিলছে না হাওরের কৃষকদের

প্রকাশিত:বুধবার ২০ এপ্রিল ২০22 | হালনাগাদ:শুক্রবার ২৪ নভেম্বর ২০২৩ | ৯৭৫জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

নেত্রকোনার খালিয়াজুরী উপজেলার ধনু নদের পানি ক্রমাগতভাবে বেড়ে চলেছে। পানি বাড়তে থাকায় হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধে ব্যাপক চাপ পড়ছে। কিন্তু এখনো কোনো বাঁধ ভেঙে ফসলহানির ঘটনা ঘটেনি। বুধবার (২০ এপ্রিল) সকাল পর্যন্ত বিপৎসীমার ২৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে আগাম পূর্বাভাসের কারণে হাওরে এরইমধ্যে ৭২ ভাগ ধান কাটা হয়ে গেছে বলে জানিয়েছে জেলার কৃষি বিভাগ। তবে হাওরে কিছুটা কাঁচাধান কাটায় খরচের সঙ্গে উৎপাদনের হিসাব মেলাতে পারছেন না কৃষকরা। আবার সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অনেক কম মূল্যে বাজারে ধান বিক্রি করছেন চাষিরা।

স্থানীয় কৃষকরা বলছেন, বোরোতে বিঘাপ্রতি ন্যূনতম ২০ থেকে সর্বোচ্চ ২৪ মণ পর্যন্ত ফলন হয়। এক বিঘায় খরচ পড়ে গড়ে বারো হাজার টাকা। এর মধ্যে বীজ ১২০০ টাকা, চাষ ৬০০ টাকা ও বপন ২০০০ টাকা, সার ও পানি ৬ হাজার ৫০০ টাকা, ধান কাটা ২ হাজার টাকা ও মাড়াই ১৫০০ টাকা। এর সঙ্গে জমি যদি পত্তন নিতে হয়, তারও খরচ আছে। নিজের শ্রমের মজুরিও রয়েছে।

এবার ধানের সরকার নির্ধারিত দাম প্রতি মণ ১০৮০ টাকা। সে অনুযায়ী ২০ মণের দাম আসে ২১ হাজার ৬০০ টাকা। খরচ বাদে হাতে থাকার কথা ৭৮০০ টাকা। কিন্তু আগাম বন্যার ভয়ে আধাপাকা ধান কাটার কারণে ফসলের উৎপাদন কমে গেছে। পাশাপাশি বাজার মূল্য কম থাকায় দুশ্চিন্তায় চাষিরা।

পানির চাপে ধনু নদের তীরে অবস্থিত কীর্তনখোলাসহ হাওরের বিভিন্ন ফসলরক্ষা বাঁধ ঝুঁকিতে পড়েছে। ফোল্ডা-২-এর আওতায় ৫৫ কিলোমিটার ওই বাঁধের ৭ কিলোমিটার অংশে কিছু দূর পরপর ফাটল ও ধস দেখা দিয়েছে। তবে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মোহন লাল সৈকত, খালিয়াজুরী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ এইচ এম আরিফুল ইসলামসহ পাউবো ও উপজেলা প্রশাসনের লোকজন স্থানীয় কৃষক ও শ্রমিক নিয়ে সার্বক্ষণিকভাবে মেরামতের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।

জেলা কৃষি সম্পসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, নেত্রকোনায় এ বছর প্রায় ১ লাখ ৮৪ হাজার হেক্টর জমিতে বোরোর আবাদ হয়েছে। এরমধ্যে বিআর-২৮ জাতের ধান আবাদ হয়েছে প্রায় ৬৫ হাজার হেক্টর জমিতে। হাওরাঞ্চলে এ বছর ৪০ হাজার ৯৬৫ হেক্টর জমিতে ২ লাখ ৬২ হাজার ৪৯৩ মেট্রিক টন ধানের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। যার বর্তমান মূল্য ৭০৮ কোটি ৭৩ লাখ ১১ হাজার টাকা। আর জেলায় বোরো উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১১ লাখ ৬ হাজার ৭৩০ মেট্রিক টন ধান।

পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মোহন লাল ঘটনাস্থল থেকে বলেন, বাঁধে পানি ও বাতাসের প্রচুর চাপ রয়েছে। ফলে কীর্তনখোলা বাঁধের ছয়টি অংশে নতুন করে ফাটল ও ধস দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে চারটি অংশে বড় ধরনের ফাটল দেখা দিয়েছিল। কিন্তু তাৎক্ষণিকভাবে শ্রমিক নিয়ে বাঁশ, কাঠ, চাটাই, খড়, মাটি, বালু ও জিও ব্যাগ ফেলে বাঁধ রক্ষা করা হয়েছে।

খালিয়াজুরী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এএইচএম আরিফুল ইসলাম বলেন, পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী, তিনি ও প্রশাসনের অন্য কর্মকর্তারা দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে রাতদিন বাঁধে অবস্থান করে বাঁধ রক্ষায় কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। ধনু নদের পানি বিপৎসীমার ২৭ সেন্টিমিটার ওপরে থাকলেও এখনো ফসলরক্ষা বাঁধ টিকিয়ে রাখা হয়েছে।

খালিয়াজুরি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. জসিম উদ্দিন বলেন, হাওরে যেসব কৃষক কম মেয়াদী অর্থাৎ ১৪০ থেকে ১৫০ দিনের ধান লাগিয়েছেন সেগুলো সব কাটা হয়ে গেছে। তবে বেশি মেয়াদী জাতের ধান এখনো ক্ষেতে আছে। এসব ধান এখনো আধাপাকা। এ বছর খালিয়াজুরীর ছোট-বড় ৮৯টি হাওরে প্রায় সাড়ে ২১ হাজার হেক্টর বোরো ধানের আবাদ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৭২ শতাংশ ধান কাটা শেষ হয়েছে।

নেত্রকোনার জেলা প্রশাসক কাজি মো. আবদুর রহমান বলেন, কৃষকরা যাতে নিজের উৎপাদিত ফসল ঘরে তুলতে পারেন সেজন্য আমরা রাতদিন চেষ্টা করে হাওড়ের বাঁধগুলো টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করছি। গত ১৬ দিন ধরে আমরা পর্যায় ক্রমে বাঁধে অবস্থান করছি। বাঁধে পাহারার ব্যবস্থা করেছি। এজন্য মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত হাওরের প্রায় ৭২ ভাগ ফসল কাটা হয়েছে।

নিউজ ট্যাগ: নেত্রকোনা

আরও খবর

শখের নার্সারিতে সফল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মনির

মঙ্গলবার ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

জয়পুরহাটে ৮৫৫ হেক্টর জমিতে ভুট্টার চাষ

মঙ্গলবার ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২৩