Logo
শিরোনাম

ছাত্রীকে রাতভর নির্যাতন-বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ ছাত্রলীগ নেত্রীর

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৩ | হালনাগাদ:রবিবার ২৬ নভেম্বর ২০২৩ | ২৪৭৫জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) প্রথম বর্ষের এক নবীন ছাত্রীকে রাতভর র‍্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে।

রোববার দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে এ ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে। ভুক্তভোগী ফুলপরি ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। র‍্যাগিংয়ের সময় অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেত্রীরা শারীরিক নির্যাতন করে এবং বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করে রাখে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীর। গত সোমবার সকালে ভয় পেয়ে হল ছেড়ে বাসায় চলে যান ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী।

র‍্যাগিংয়ের নামে শারীরিক ও মানসিকভাবে হেনস্তার বিচার ও নিরাপত্তা চেয়ে মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) প্রক্টর ও ছাত্র-উপদেষ্টা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী । অভিযুক্ত সানজিদা চৌধুরী বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী।

লিখিত অভিযোগে ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী বলেন, গত ৮ ফেব্রুয়ারি আমার ওরিয়েন্টেশন ক্লাস শুরু হওয়ার জন্য আমি ৭ ফেব্রুয়ারি দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের ৩০৬ নং রুমে এলাকার (পাবনা) পরিচিত এক আপুর রুমে গেস্ট হিসেবে উঠি। যথাযথভাবে সবাইকে সম্মানপূর্বক রুমে অস্থায়ীভাবে অবস্থান করি। এরপর ১১ ও ১২ তারিখে ২ দফায় ওই হলের আবাসিক ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা আপুর নেতৃত্বে ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২০- ২১ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী তাবাচ্ছুম আপুসহ নাম না জানা আরও অন্তত ৭-৮ জন র‍্যাগিংয়ের নামে আমাকে চরমভাবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে। এবং আমাকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করে রাখেন। এমনকি তারা আমাকে জীবননাশের হুমকিও প্রদান করেন।

লিখিত অভিযোগে ওই ছাত্রী আরও বলেন, আমার বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী তাবাচ্ছুম নামের এক আপু আমাকে দেখা করতে ডাকে কিন্তু আমি অসুস্থ থাকায় যথাসময়ে তার রুমে যেতে পারিনি। এরপর থেকেই তারা আমার ওপর চড়াও হতে থাকে এবং তাদের রুমে গেলে আমার সঙ্গে খারাপ আচরণ করে, ভয়ভীতি প্রদর্শন করতে থাকে। আমাকে হল থেকে ঘাড় ধরে বের করে দেয়ার হুমকি দেয়। তারা অভিযোগ করতে থাকেন তাদের না জানিয়ে কেন হলে উঠেছি। অথচ আমি আবাসিক শিক্ষার্থী হিসেবে নয় গেস্ট হিসেবে সাময়িক সময়ের জন্য উঠেছিলাম। এরপর রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) রাত ১১টায় অন্তরা আপুসহ তার সাথে থাকা ৭-৮ জন আমাকে গণরুমে নিয়ে যেয়ে এলোপাতাড়িভাবে চড় থাপ্পড় মারতে থাকে। আপু আমাকে কেন মারছেন বলতে গেলে তারা আমার মুখ চেপে ধরে থাকেন এবং সজোরে চোয়ালে থাপ্পড় মারে। এছাড়া আমাকে বলতে থাকে, আমরা কি করতে পারি জানিস তুই? আমাদের সম্পর্কে তোর কোন আইডিয়া আছে?

আমি কান্না করে তাদের পা ধরে মাফ চাইতে গেলে তারা আমাকে পা দিয়ে লাথি মারেন। অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন, গামছা দিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে ধরে রাখেন, একটা ময়লা গ্লাস চেটে পরিষ্কার করিয়ে নেন। এছাড়া আমাকে বলতে থাকে যাতে এই বিষয়টা কোনভাবেই বাইরে না যায়, আর যদি বলিস তাহলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও ভাইরাল করে দেবো। ভিডিওগুলো তাদের সংরক্ষণে আছে। এসময় অন্তরা বলেন, যদি তুই প্রশাসনের কাছে কোন প্রকার অভিযোগ দিস তাহলে মেরে কুত্তা দিয়ে খাওয়াবো। এরপর আমাকে রাত সাড়ে ৩টায় ছেড়ে দেয়। এ কারণে পরেরদিন প্রাণের ভয়ে আমি ক্যাম্পাস ছেড়ে গ্রামের বাড়ি পাবনাতে চলে যাই।

এবিষয়ে সানজিদা চৌধুরী অন্তরা বলেন, আমি যদি এসবকিছু করে থাকি তাহলে সে প্রমাণ করুক। এ বিষয়ে আমি আর কিছু বলতে চাই না।

ইবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত বলেন, আমরা বিষয়টি খোঁজখবর নিবো। অভিযোগ প্রমাণিত হলে সাংগঠনিকভাবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ বিষয়ে হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. শামসুল আলম বলেন, প্রথম বর্ষের এক মেয়ে কয়েকজন সিনিয়রদের সঙ্গে খারাপ ব্যাবহার করেছে বলে অভিযোগ করেছিলো কয়েকজন ছাত্রী। পরে আমি প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যদের সাথে নিয়ে বিষয়টি মিটমাট করে দেই। পরে কিছু হয়েছে নাকি জানি না। লিখিত অভিযোগ পেলে আমরা হল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি খতিয়ে দেখে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, বিষয়টি জেনেছি। উভয় পক্ষের কথা শুনে বিষয়টি যাচাই বাছাই করে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, এ বিষয়টি আমি শুনেছি। র‌্যাগিং তো একটা অপ্রত্যাশিত ঘটনা। কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে এ বিষয়গুলো অ্যালাউ করে না। সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে বিষয়টি বিস্তারিত খোঁজ খবর নিয়ে পদক্ষেপ নেয়া হবে।


আরও খবর

রাজধানীর ৯০ ভাগ হিজড়াই নকল

শনিবার ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৩