Logo
শিরোনাম

দশম ও একাদশ নির্বাচন নিয়ে অতিমাত্রায় বিতর্ক হচ্ছে: সিইসি

প্রকাশিত:রবিবার ৩১ জুলাই ২০২২ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২১ নভেম্বর ২০২৩ | ৯৬০জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

২০১৪ ও ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে অতিমাত্রায় সমালোচনা ও বিতর্ক হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে রোববার ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংলাপে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে ১৩ সদস্যের প্রতিনিধি দল সংলাপে অংশ নেয়। তাদের মধ্যে ছিলেন উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আমির হোসেন আমু, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, কর্নেল (অব.) ফারুক খান, ড. আব্দুর রাজ্জাক ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ। অপরদিকে কমিশনের পক্ষে সিইসি ছাড়াও চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সিইসি বলেন, নির্বাচন কমিশন (ইসি) নিয়ে সমালোচনাও তীব্র ও তিক্ত। একইসঙ্গে আগামীতে নিরপেক্ষ থেকে অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করে সমালোচনা ও বিতর্কের ঊর্ধ্বে থাকার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।

২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন করে কাজী রকিবউদ্দিন আহমেদ কমিশন। আর ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন করে কে এম নূরুল হুদা কমিশন। এই দুই জাতীয় নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক মহলে রয়েছে নানা সমালোচনা। দশম সংসদে ১৫৪ আসনিই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পাশাপাশি একাদশ জাতীয় নির্বাচনে একাধিক কেন্দ্রে শতভাগ ভোটসহ রাতে ভোট হওয়ার অভিযোগ রয়েছে।

সিইসি বলেন, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করা কমিশনের সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ দায়িত্ব। একইভাবে নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা করা সরকারের সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ দায়িত্ব। আমরা সে দায়বদ্ধতা থেকেই সংলাপের আয়োজন করেছি।

১৯৭০ সাল থেকে আমরা নির্বাচন দেখে এসেছি। ১৯৫৪ সালের নির্বাচন আমরা জানি। ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচন এক অর্থে সাম্প্রতিক। রাষ্ট্রপতি শাসিত নির্বাচন পদ্ধতিতে রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন হয়েছেন। সংসদীয় পদ্ধতিতে ১৯৯১ সাল থেকে সম্ভবত নির্বাচন হচ্ছে।

হাবিবুল আউয়াল বলেন, ইতোপূর্বে আমরা প্রায় চার-পাঁচ পর্বে সংলাপের আয়োজন করেছি। সেসব সংলাপে সুধীজন তাদের মতামত উপস্থাপন করেন। নির্বাচনে অর্থ ও পেশিশক্তির প্রভাব, সহিংসতা, ভোট কারচুপি, কেন্দ্র দখল, ব্যালট পেপার ছিনতাই করে বাক্স ভরাট করা, ভোটকেন্দ্রে আসতে ও ভোটদানে বাধা, আমলাতন্ত্রের পক্ষপাতিত্ব, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সদস্যদের ভূমিকা, নির্বাচন কমিশনের নির্লিপ্ততা ইত্যাদি বিষয়ে মতামত উঠে এসেছে। আমরা সবার মতামত পর্যালোচনা করে পরবর্তীতে সবাইকে অবহিত করেছি।

কমিশন প্রধান বলেন, সংলাপে বেশকিছু বিষয় উঠে এসেছে। অনেক দল মনে করছে একদিনে নির্বাচন করা সমীচীন হবে না। ভারতের মতো পৃথক দিনে হওয়া উচিত। তারা ভোটে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য সংখ্যায় অপ্রতুলতার কথাও উল্লেখ করেছে। অনেকে বলেছেন সেনাবাহিনী মোতায়েন করার জন্য। সেনাবাহিনীর প্রতি জনমানুষের আস্থা অনেক বেশি বলে তারা মনে করছে। আমরা কোনো সিদ্ধান্ত নেইনি।

আরেকটি বিষয়ে সংকট থেকে যাবে, তা হলো ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম)। ইভিএম নিয়ে পক্ষ-বিপক্ষ দুদিকেই সমর্থন পেয়েছি। অধিকাংশ দল ইভিএম বিশ্বাস করছে না। এর ভেতরে কী জানি একটা আছে। আমরা ইভিএম ব্যবহার করেছি। ফল হিসেবে ৭১ শতাংশ পর্যন্ত ভোট কাস্ট হয়েছে। আমরা সিদ্ধান্ত নেব স্বাধীনভাবে। কিন্তু পুরোপুরি ঐকমত্য নেই।

আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কর্মপদ্ধতি ঠিক করতে নিবন্ধিত ৩৯টি রাজনৈতিক দলকে সংলাপের আহ্বান জানায় ইসি। ১৭ জুলাই শুরু হওয়া চলমান সংলাপে অংশ নিয়েছে ২৮টি দল। বিএনপিসহ সমমনা ৯টি দল ইসির এ সংলাপ বর্জন করেছে। বাকি দুটি রাজনৈতিক দল সংলাপে অংশ নেয়ার জন্য সময় বাড়ানোর অনুরোধ করেছে।


আরও খবর