Logo
শিরোনাম

ফেসবুকে শুক্রাণুদাতা খুঁজে মা হচ্ছেন ব্রিটিশ নারীরা!

প্রকাশিত:সোমবার ০১ মার্চ ২০২১ | হালনাগাদ:বুধবার ১৫ নভেম্বর ২০২৩ | ২২৫০জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image
পরিকল্পনা মতো শুক্রাণুদাতার সঙ্গে ক্লো এবং তার স্বামীও মোট ৬ বার দেখা করেছিলেন। ক্লো এতে একবার গর্ভবতী হয়েছিলেন ঠিকই, কিন্তু তার মিসক্যারেজ বা গর্ভপাত হয়ে যায়

ব্রিটেনে যেসব দম্পতির সন্তান হচ্ছে না, তাদের অনেকেই নানা কারণে জাতীয় স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় উপযুক্ত চিকিৎসা পান না। ফলে তাদের অনেকেই গর্ভধারণের জন্য ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপ থেকে স্পার্ম ডোনার বা শুক্রাণুদাতা খুঁজে নিচ্ছেন।

বছর খানেক ধরে সন্তান নেবার চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন ক্লো এবং তার সঙ্গী। কিন্তু কিছুতেই তার গর্ভসঞ্চার হচ্ছিল না। পারিবারিক ডাক্তার তাদের জাতীয় স্বাস্থ্য সেবা বা এনএইচএসের স্থানীয় ফার্টিলিটি ক্লিনিকে যাওয়ার পরামর্শ দেন। সেখানে বিভিন্ন পরীক্ষার পর দেখা যায়, ক্লোর সঙ্গীর শুক্রাণুর কিছু সমস্যা রয়েছে এবং তাই গর্ভধারণ করতে হলে তাকে একজন দাতার শুক্রাণু নিতে হবে। ক্লিনিক থেকে তাদের শুক্রাণুদাতার তালিকা দেয়া হয়। সেই তালিকায় মাত্র একজন উপযুক্ত দাতার সন্ধান পেলেন তারা।

তার শুক্রাণু ব্যবহার করে ২০১৭ সালের অক্টোবরে ক্লোর প্রথম আইভিএফ বা কৃত্রিম গর্ভসঞ্চারের চেষ্টা করা হলো। কিন্তু তাতে কোনও কাজ হলো না। তখন ক্লিনিক থেকে ক্লোকে বলা হলো, তারা আইসিএসআই নামে আরেকটি পদ্ধতি চেষ্টা করে দেখতে পারেন- যাতে সরাসরি ডিম্বাণুর ভেতরে শুক্রাণু প্রবেশ করিয়ে দেয়া হয়।

কিন্তু এ পদ্ধতিটি আরও ব্যয়বহুল এবং এর খরচ তাদেরকেই বহন করতে হবে। ক্লো বলছিলেন, আমাদের পক্ষে তখন হাজার হাজার পাউণ্ড খরচ করা সম্ভব ছিল না। ততদিনে ক্লো আর তার সঙ্গী বিয়ে করেছেন। তার স্বামীই একদিন বললেন, অনলাইনে একজন শুক্রাণু দাতার খোঁজ করলে কেমন হয়? ক্লো তাই করলেন। তবে তার বন্ধুরা ও পরিবার যাতে ব্যাপারটা জানতে না পারে- সে জন্য তিনি একটা ভুয়া নাম নিয়ে ফেসবুকে কিছু গ্রুপে যোগদান করলেন এবং কয়েকদিনের মধ্যে একজন সম্ভাব্য শুক্রাণু দাতা পেয়েও গেলেন।

সেই শুক্রাণু দাতা লোকটি তার মেডিকেল ও পারিবারিক ইতিহাস জানালেন। তার কোনও যৌনরোগের সংক্রমণ হয়েছিল কিনা- তা চেক করার দলিলপত্রও দিলেন। এসব কিছুর পর ক্লো যেখানে থাকতেন, তার কয়েক মাইল দূরে একটি কারপার্কে লোকটির সঙ্গে দেখা করার পরিকল্পনা করা হলো। পরিকল্পনা মতো শুক্রাণুদাতার সঙ্গে ক্লো এবং তার স্বামীও মোট ৬ বার দেখা করেছিলেন। ক্লো এতে একবার গর্ভবতী হয়েছিলেন ঠিকই, কিন্তু তার মিসক্যারেজ বা গর্ভপাত হয়ে যায়। প্রতিবার তারা সেই দাতা লোকটিকে তার শুক্রাণুর জন্য ৫০ পাউণ্ড এবং যাতায়াতের জন্য ১০ পাউণ্ড দিয়েছিলেন।

এর মধ্যে শুরু হলো করোনাভাইরাস মহামারি। লকডাউনের কারণে কোথাও যাতায়াত করার ওপর বিধিনিষেধ থাকায় ক্লো এবং তার স্বামী ভিন্ন উপায় বের করলেন। তারা ফেসবুক থেকেই অন্য একজন শুক্রাণুদাতা খুঁজে বের করলেন। এই লোকটি এলেন ক্লোর বাড়িতে। এবার ক্লো সাফল্য পান। তিনি এখন সন্তানসম্ভবা। তিনি বলেন, আমরা ভীষণ আনন্দিত। অনেক দিন চেষ্টার পর এখন আমাদের একটি সন্তান হতে যাচ্ছে, পরিবার হতে যাচ্ছে- যা আমরা দুজনে অনেকদিন ধরে চেয়ে আসছি।

ক্লো এবং তার স্বামী যে সন্তানের জন্য একজন শুক্রাণুদাতা ব্যবহার করেছেন, তা তারা তাদের পরিবার বা বন্ধুদের বলেননি। একটা কারণ হচ্ছে- ক্লোর স্বামী যে সন্তান উৎপাদনে অক্ষম তা তারা কাউকে জানতে দিতে চান না। আরেকটা কারণ হলো- কিছু লোক আছে যারা ভাববে যে এটা একটা গুরুতর অন্যায় কাজ করেছেন তারা। ক্লো বলছেন, সৌজন্যবোধ থেকেই তিনি তার গর্ভবতী হবার কথা শুক্রাণুদাতাকে জানিয়েছেন। তবে তিনি বলছেন, এ শিশুর ওপর দাতার কোন অধিকার থাকবে না এবং সন্তানের জন্ম সনদেও থাকবে ক্লোর স্বামীর নাম।


আরও খবর