Logo
শিরোনাম

হিল্লা বিয়ে নিয়ে ফতোয়া জারি, ৯ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২৪ আগস্ট ২০২১ | হালনাগাদ:শনিবার ২৫ নভেম্বর ২০২৩ | ১৯৩০জন দেখেছেন
Image

পঞ্চগড় প্রতিনিধি:

পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলায় হিল্লা বিয়েতে রাজি না হওয়ায় দম্পতিকে একঘরে করে রাখার ঘটনায় ফতোয়া প্রদানকারী ৯ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।

দেবীগঞ্জ আমলি আদালতের বিচারক এম এম মাহবুব ইসলাম গ্রেপ্তারি পরোয়ানাটি গত রবিবার (২২ আগস্ট) জারি করলেও তা মঙ্গলবার (২৪ আগস্ট) বিকেলে প্রকাশ পায়।

এর আগে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পরিপ্রেক্ষিতে গত বুধবার (১১ আগস্ট) পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মতিউর রহমান স্বপ্রণোদিত হয়ে বিষয়টি আমলে নিয়ে দেবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে তদন্তের নির্দেশ দেন। এবং রবিবার (২২ আগস্ট) এর মধ্যে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দেন। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী দেবীগঞ্জ থানা পুলিশ উপজেলার সুন্দরদীঘি ইউনিয়নের সলিমনগর এলাকায় সরেজমিনে তদন্ত করে গত রবিবার আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে।

আদালত সূত্রে জানা যায়, দেবীগঞ্জে সলিমনগর এলাকায় মৌখিক তালাকের জেরে এক দিনমজুর দম্পতিকে সমাজপতিদের একঘরে রাখার ঘটনাটি বিভিন্ন অনলাইন সংবাদমাধ্যম ও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। বিষয়টি আদালতের দৃষ্টিগোচর হয়। সার্বিক বিবেচনায় অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মতিউর রহমান দ্য কোট অব ক্রিমিনাল প্রসিডিউরের ১৯১ (১) সি ধারায় বিষয়টি আমলে নেন। বিষয়টি তদন্ত করে গত রবিবার ওই আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দেবীগঞ্জ থানা ওসিকে আদেশ দেন। পরে পুলিশের দেওয়া তদন্ত প্রতিবেদনে আয়নাল ও জামিরন দম্পতিকে হিল্লা বিয়েতে বাধ্য করতে প্রায় চার মাস ধরে একঘরে করে রাখার অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা প্রতীয়মান হয়। পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদনটি আমলে নিয়ে আদালত সমাজপতি শাহজাহান আলী, মুফতি আনোয়ার হোসেন, নাসির উদ্দীন, আমির চাঁন, শহীদ, ছোরমান আলী, জুলহক, মোস্তফা ও রাসেলের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।

পঞ্চগড় জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) আমিনুর রহমান জানান, ফতোয়া প্রদানের বিষয়ে উচ্চ আদালতের নিষেধজ্ঞা রয়েছে। তারপরও যাঁরা মনগড়া ফতোয়া দিয়ে সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেন, তাঁদের জন্য এ ধরনের পরোয়ানা দিয়ে আদালত সঠিক সিদ্ধান্ত দিয়েছেন।

দেবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জামাল হোসেন জানান, আমরা আদালতের নির্দেশনায় ঘটনাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেছি। তবে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাটি এখনো হাতে পাইনি। পরোয়ানা হাতে পেলেই অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উল্লেখ্য, গত রবিবার (১৮ এপ্রিল) দিনমজুর আয়নাল ও জামিরনের দম্পতির মধ্যে পারিবারিক বিষয় নিয়ে ঝগড়া হয়। এ সময় রাগের মাথায় স্ত্রীকে তিন তালাকের ঘোষণা দেন আয়নাল। বিষয়টি স্থানীয় গ্রাম্য মাতবরদের কানে পৌঁছাতেই শুরু হয় বিপত্তি। মাতবরেরা জামিরনকে হিল্লা বিয়ে দিতে বলেন। এতে রাজি না হওয়ায় ওই দম্পতিকে প্রায় চার মাস একঘরে করে রাখেন মাতবরেরা।

জানা যায়, আয়নাল ও জামিরনের ৩৫ বছরের সংসার। তাঁদের চার সন্তানের মধ্যে দুই মেয়ে ও এক ছেলেকে বিয়ে দিয়েছেন তাঁরা।


আরও খবর