ঝিল কুটুম ক্যাফের সাথে-সাথে আমার স্বপ্নও পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। নিজের ব্যস্ততার কারণে লাভজনক এই প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনার দায়িত্ব দিয়েছিলাম অন্য একটি ম্যানেজমেন্টের হাতে। কিন্তু আগুনে পুড়ে যাওয়ার পর সেই ম্যানেজমেন্টের লোকজন কৌশলে সটকে পরেছে। আর আমি পরেছি অথৈই সমুদ্রে। এভাবেই কথাগুলো বলেছিলেন রাজধানীর হাতিরঝিলে থাকা ঝিল কুটুম ক্যাফের স্বত্বাধিকারী আশরাফুল আলম সুমন ওরোফে আনন্দ কুটুম।
আনন্দ কুটুম বলেন, ব্যবসায়ী-সামাজিক ও পারিবারিক নানা ব্যস্ততার কারণে ঝিল কুটুম ক্যাফেতে ঠিকমত সময় দিতে পেরে উঠছিলাম না। এ কারণে চলতি বছরের ১৫ মে খন্দকার আব্দুল ওয়াহেদ তার ছেলে পরশ এবং তাদের ম্যানেজিং পার্টনার কামালকে সম্মিলিতভাবে ঝিল কুটুম ক্যাফে পরিচালনার দায়িত্ব দেই।
তাদের সাথে অফিশিয়াল চুক্তি সম্পাদন করার কথা থাকলেও উভয়পক্ষের ব্যস্ততাজনিত কারণে লিখিত চুক্তি সম্পাদন করা সম্ভব হয়নি। তবে তাদের সাথে মৌখিক চুক্তি ও বিশ্বাসের ওপর ভিত্তি করে তারা গত ১৫ মে থেকে আমার প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে আসছে এবং সেই মোতাবেক তারা মে মাসের অর্ধেক ভাড়া প্রদান করেছে। কিন্তু চলতি মাসের ১০ তারিখ ভাড়া দেওয়ার কথা থাকলেও তারা গড়িমসি করে সময়ক্ষেপণ করতে থাকে।
আনন্দ কুটুম বলেন, যে দিন (১৪ই জুন) ঝিল কুটুম ক্যাফেতে অগ্নিকাণ্ড হয় সেদিন আমার ক্যান্সার আক্রান্ত মায়ের অপারেশন নিয়ে হাসপাতালে ছিলাম এবং পরিচিত একজনের মাধ্যমে জানতে পারি ঝিল কুটুম ক্যাফেতে আগুন লেগেছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আসতে-আসতে আনুমানিক এক কোটি ২০ লক্ষ টাকার সম্পত্তি (২০২০ সালের ইনভেস্টমেন্ট অনুযায়ী) পুরোটাই পুড়ে কয়লা হয়ে যায়।
তিনি আরও বলেন, এ অগ্নিকাণ্ডের পর যারা এটি পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন তারা আমার সাথে কোন প্রকার যোগাযোগ করেনি। বরং আমি যতোবার খন্দকার আব্দুল ওয়াহেদের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছি ততোবারই তিনি ফোন কেটে দিয়েছেন। পরবর্তীতে তার ম্যানেজিং পার্টনার কামালের মাধ্যমে জানিয়েছেন যে তিনি এই রেস্টুরেন্ট নিয়ে আর কোনো ধরণের আলোচনায় বসতে ইচ্ছুক নন বা কোন প্রকারের ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য নন।
আনন্দ কুটুম বলেন, এখন ঘটনাদৃষ্টে মনে হচ্ছে এই অগ্নিকাণ্ড কোনো দুর্ঘটনা নয় বরং এটি সম্পূর্ণ উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে ঘটানো হয়েছে। একাধিক কর্মচারীর সাথে আলাপ করে জানতে পেরেছি যে, যে ছেলেটির দ্বারা রেস্টুরেন্টে আগুন লেগেছিলো সেই ছেলেটি গা ঢাকা দিয়েছে এবং কেউ তার সাথে যোগাযোগ করতে পারছে না। আমি এই ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত করে সত্য তুলে আনার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আহবান জানাই।
এবিষয়ে ঝিল কুটুম ক্যাফের স্বত্বাধিকারী আনন্দ কুটুম হাতিরঝিল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (৯৯১,তাং ১৮ জুন ২০২৩) দায়ের করেছেন।
সাধারণ ডায়েরি বিষয়ে জানতে হাতিরঝিল থানা দায়িত্বরত কর্মকর্তা সাথে মুঠোফেনে যোগাযোগ করা হলে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত কর্মকর্তার সাথে কথাবলার পরামর্শ দেয়।