Logo
শিরোনাম

খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিল হয়েছে ৫ হাজার ৯৬০ কোটি টাকা

প্রকাশিত:বুধবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২২ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৩ | ৬৪৫জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

করোনা মহামারির কারণে ছোট-বড় অনেক ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হ‌য়েছে। অনেকে আগে থে‌কেই নিয়‌মিত ঋণ শোধ কর‌ছেন না। আবার অনিয়ম দুর্নীতি ক‌রে দেওয়া ঋণও আদায় কর‌তে পার‌ছে না সংশ্লিষ্ট ব্যাংক। এসব কারণে বাড়‌ছে খেলা‌পি ঋণ। যা বাড়িয়েছে ঋণ পুনঃতফসিলের পরিমাণ। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বল‌ছে, চলতি বছরে প্রথম ছয় মা‌সে (জানুয়ারি-জুন) ৫ হাজার ৯৬০ কোটি টাকার ঋণ পুনঃতফসিলের অনুমোদন দিয়েছে ব্যাংক। এ সময় সুদ মওকুফ করেছে ২ হাজার ৮১৬ কোটি টাকা।

খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অনেকে অনিয়ম, দুর্নীতি, রাজনৈতিক প্রভাব, ও পরিচালনা পর্ষদের স‌ঙ্গে আঁতাত ক‌রে নেওয়া ঋণ ফেরত দি‌চ্ছেন না। আবার কেউ ঋণ অন্য খাতে ব্যবহারের কারণেও খেলাপি হয়ে গেছে। এছাড়া খেলা‌পিরা একের পর এক ছাড় পা‌চ্ছে, এ কার‌ণে অনেকে এখন ঋণ শোধ কর‌ছে না আ‌রও ছাড় পাওয়ার আশায়।  সব কার‌ণে খেলাপি স‌ঙ্গে ঋণ পুনঃতফসিলের পরিমাণ বাড়ছে। এতে ঋণের টাকা আগামী‌তে ফেরত পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, প্রথম ছয় মা‌সে পুনঃতফসিল করা ঋণের মধ্যে রাষ্ট্র মালীকানাধীন ব্যাংকগুলো করেছে ১ হাজার ৩০ কোটি এবং বেসরকারি ব্যাংক করেছে ৪ হাজার ১৫০ কোটি টাকা। বাকি ৭৭৯ কোটি টাকা পুনঃতফসিল করেছে বিশেষায়িত ব্যাংক। ত‌বে ব্যাংকাররা বলছেন, নথিপত্রে ব্যাংকগু‌লো খেলাপি ঋণ যত দেখা‌চ্ছে, বাস্তবে এ চিত্র আ‌রও ক‌য়েক গুণ বে‌শি। কারণ অনেক প্রভাবশালী গ্রুপের ঋণ আদায় না ক‌রেও বছরের পর বছর নিয়‌মিত দেখা‌নো হ‌য়। আবার একই ঋণ একা‌ধিকবার পুনঃ তফসিল করে ঋণ নিয়মিত রাখা হয়।

তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গে‌ছে, ২০১৯ সালে ৫২ হাজার কোটি টাকারও বেশি ঋণ পুনঃতফসিল সুবিধা দেওয়া হয়। ওই সময় সুদ মওকুফ হয় ১ হাজার ৭৭১ কোটি টাকা। ঋণ পুনঃতফসিল কিংবা মওকুফ, সুবিধা দেওয়ার সব‌চে‌য়ে এগিয়ে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলো। ত‌বে সুবিধা দিয়েও কাঙ্ক্ষিত ঋণ আদায় করা সম্ভব হচ্ছে না। ২০২০ সালে ১৩ হাজার ৪৬৯ কোটি এবং ২০২১ সালে ৬ হাজার কোটি টাকা পুনঃতফসিল করা হয়। ২০১৯ সাল থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের দেওয়া উদার ছাড় নীতির কারণে, দেশের ঋণ খেলাপিরা প্রতি ১০০ টাকা ঋণে দুই টাকা ডাউন পেমেন্ট দিয়ে ১০ বছর পর্যন্ত পুনঃতফসিল সুবিধা নিয়েছেন। সেটাই ছিল সুবর্ণ সুযোগ ঋণ খেলাপিদের। করোনা শুরুর বছর (২০১৯ সালে) সবচেয়ে বেশি ঋণ পুনঃতফসিলের সুবিধা নিয়েছেন তারা। ওই সু‌বিধার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় ২০২২ সালের ১৮ জুলাই ঋণ পুনঃতফসিলের সুবিধা দিয়ে নতুন নির্দেশনা জারি ক‌রে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। নতুন নির্দেশনায় মাত্র আড়াই থেকে সাত শতাংশ ডাউনপেমেন্ট দি‌য়ে ২৯ বছর পর্যন্ত ঋণ নিয়মিত রাখার সুযোগ দেওয়া হয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ১৩ লাখ ৯৮ হাজার ৫৯২ কোটি টাকা। এর মধ্যে ১ লাখ ২৫ হাজার ২৫৭ কোটি টাকা ছিল খেলাপি, যা দেশের ব্যাংক খাতের মোট বিতরণ করা ঋণের ৮ দশমিক ৯৬ শতাংশ। গত মার্চ শেষে দেশের ব্যাংক খাতের বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ছিল ১৩ লাখ ২৯ হাজার ৭৩৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ছিল ১ লাখ ১৩ হাজার ৪৪০ কোটি টাকার ঋণ। গত ডিসেম্বর শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৩ হাজার ২৭৩ কোটি টাকা। এ হিসেবে গত ছয় মাসে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ২১ হাজার ৯৮৪ কোটি টাকা।

চলতি বছরের জুন শেষে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ গিয়ে ঠেকেছে ৫৫ হাজার ৪২৯ কোটি টাকায়। রাষ্ট্রায়ত্ত এ ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা ঋণের ২১ দশমিক ৯৩ শতাংশই বর্তমানে খেলাপি। জুন শেষে বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৬২ হাজার ৬৭৭ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। যা মোট ঋণের ৬ শতাংশ। সরকারি বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ ১৭৯ কোটি টাকা। এই অংক মোট ঋণের ১১ দশমিক ৭৪ শতাংশ। আালো‌চিত সম‌য়ে বিদেশি খা‌তের ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ ৭৩ কো‌টি টাকা বা মোট ঋণের ৪ দশমিক ৪০ শতাংশ।

নিউজ ট্যাগ: খেলাপি ঋণ

আরও খবর

এলপিজির দাম আরও বাড়ল

বৃহস্পতিবার ০২ নভেম্বর 2০২3