মর্মস্পর্শী
ইতিহাসের মাস শোকাবহ আগস্ট। তৃতীয় বিশ্বের উচ্চকণ্ঠ বীর অবিসংবাদিত মুজিব হত্যার এ
মাস তাই অনন্ত বিয়োগে অভিহিত। ঘুরেফিরে তাই আগস্ট আসে মুহ্যমান বেদনা নিয়ে। যার প্রত্যয়
আজকের বাংলাদেশে অনন্ত এক শক্তির নাম।
মুয়াজ্জিনের
কণ্ঠে তখন ভোরের আযান। হাইয়া আলাল ফালাহ ধ্বনিতে কল্যাণের দিকে ছুটে আসার আহ্বান। ঠিক
তখনই আতঁতায়ীর শক্ত আঙুল ছুঁয়ে গেলো ট্রিগার। ব্রাশ ফায়ারে একে একে হত্যা করে শেখ মুজিবুর
রহমানসহ পরিবারের সবাইকে।
অথচ মুজিবই
হলেন বাংলাদেশ। যাঁর বুকের উত্তাপে আঁকা হয়েছিল এদেশের মানচিত্র। নি:শ্বাসে ছিল ৭ কোটি
বাঙালির অন্ধকারমুক্তির বারতা।
সেই রাতে যাঁরা
বাধা দিতে এসেছিলেন তাদেরকেও রেহাই দেয়নি বিপদগামী সেনারা। বঙ্গমাতা কিংবা শিশু রাসেল-কারও
আর্তনাদ হৃদয়বিদ্ধ করেনি খুনিদের। এমনকি বঙ্গমাতার মরদেহের পাশে শিশু রাসেলকে হত্যা
করে উল্লাসও করেছিল খুনিরা। রাসেলের আকুতি ছিল, ‘আমি মায়ের কাছে যাব। আমাকে মা’র কাছে যেতে দাও।’ বঙ্গবন্ধু পরিবারের নিকটজনসহ শহীদ হন ২৬ জন।
একে একে ওরা
হত্যা করে মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামাল ও সুলতানা কামালকে। মেহেদীর রঙ তখনও রোজী জামালের
হাতে। স্বামী শেখ জামালের সাথে তাকেও নৃশংসভাবে হত্যা করে পাষণ্ডরা।
৩২ নম্বরের
বাড়িটি ছিল নিতান্তই এক মধ্যবিত্ত পরিবারের। দিনে-রাতে যে বাড়িতে সব ধরণের মানুষের
ছিল সরব উপস্থিতি। ঘাতকের বুলেটে মুহূর্তেই ঝাঁঝরা হয়ে যায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে
অনন্য এ স্মারক।
১৫ ই আগস্ট
বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার মধ্য দিয়ে ঘাতকরা ভেবেছিল বাংলাদেশের এগিয়ে চলার আলো একেবারেই
নিভে গেলো। কিন্তু বিদেশে থাকায় বেঁচে যান শেখ হাসিনা ও শেখ রেহেনা।
অবশেষে আঁধারপথে
আলোর মশাল জ্বেলে উদয় হন আজকের প্রধানমন্ত্রী। রক্তের দাগ না মোছা ৩২ নম্বরের বাড়িটিকে
মানসিক শক্তির আতুরঘর মেনে গণমানুষের ভাগ্য বদলাতে এগিয়ে চলেছেন তিনি।