ভারতের মেঘালয় হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির
একটি বেঞ্চ গতকাল বুধবার এক ধর্ষণ মামলার রায়ে বলেছেন, কোনো নারীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে
কিংবা জোর করে তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা করলেই তা ধর্ষণ বলে গণ্য
হবে। সেই সময় ওই নারী পোশাক পরে ছিলেন কি না, তাঁর যন্ত্রণা হয়েছিল কি না—এসব বিবেচ্য নয়।
পোশাক না খুলেও ধর্ষণ করা যায়। ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো
হয়েছে। মেঘালয় হাইকোর্টের এই রায়কে ‘যুগান্তকারী’ বলে অভিহিত করেছেন
ভারতীয় আইনজীবীরা।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, ১০ বছর বয়সী
এক বালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগে ২০০৬ সালে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছিল ভারতের পুলিশ। দীর্ঘদিন
মামলা চলার পর জেলা আদালত তাকে দোষী সাব্যস্ত করে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিল ২০১৮ সালে।
এই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন করেন অভিযুক্তের আইনজীবী। আবেদনে বলা হয়, ধর্ষণের
সময় মেয়েটি ব্যথা অনুভব করেনি বলে জানিয়েছিল এবং সে সময় সে অন্তর্বাস পরে ছিল। যেহেতু
তার অন্তর্বাস খোলা হয়নি, সে যন্ত্রণা অনুভব করেনি, সুতরাং এ ঘটনাকে ধর্ষণ বলে গণ্য
করা যায় না।
প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়
ও বিচারপতি ডব্লিউ ডিয়েংডোর বেঞ্চ শুনানি শেষে বলেন, যন্ত্রণা না হওয়া কিংবা অন্তর্বাস
না খোলা ধর্ষণ না হওয়ার প্রমাণ হতে পারে না। মেয়েটি স্পষ্ট জানিয়েছে, তার ওপর জোর খাটানো
হয়েছিল। ডাক্তারি পরীক্ষার প্রতিবেদনেও যৌনাঙ্গে আঘাত ও মানসিক আতঙ্কের কথা বলা হয়েছে।
জোর করে কোনো নারীর যৌনাঙ্গে পুরুষাঙ্গ ঘর্ষণ করা এবং প্রবেশ করানোর চেষ্টাই ধর্ষণ
হিসেবে গণ্য হবে। এই অপরাধ ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৫ (বি) ধারায় শাস্তিযোগ্য। অভিযুক্ত
যুবককে দোষী সাব্যস্ত করে তার কারাদণ্ড বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট।