৫০ বছর পর বাণিজ্যিকভাবে
প্রথম ভারত থেকে নদীপথ ধরে কয়লা আসছে বাংলাদেশে। শুক্রবার দুপুরে শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি
পোর্ট অর্থাৎ কলকাতা বন্দরে এ যাত্রার সূচনা হয়।
গোদাবরী কমোডিটি লিমিটেডের
রাজা রিভার ওয়েজ বার্জটি রামপাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য ৩৭৫২ টন কয়লা নিয়ে রওয়ানা
দিয়েছে মোংলা বন্দরের উদ্দেশ্যে। কলকাতা পোর্ট ট্রাস্টের চেয়ারম্যান বিনিত কুমার জানান,
ইন্দো-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপের মাধ্যমে খুলনায় যে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরি হয়েছে, সেখানেই
এই কয়লা ব্যবহার করা হবে। ভারতের এনটিপিসি ও বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন
এই তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রটিতে যৌথভাবে কাজ করছে। সে কারণেই ধানবাদ থেকে আসা কয়লা নদীর
মাধ্যমে মোংলা বন্দরে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, নদীপথের মাধ্যমে
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ব্যবসায়িক আদান-প্রদান বাড়ানোর জন্য আমরা অনেকদিন ধরেই পরিকল্পনা
করছি। কারণ, দুই দেশের মধ্যে ব্যবসায়িক আদান-প্রদান একমাত্র নদীপথেই অনেকটাই সস্তা
হয়।
‘এর আগে নদী ধরে রপ্তানি হয়েছে
ম্যাস, চাল, স্পঞ্জ, আয়রনসহ আরো অনেক কিছু। একইভাবে এই নদী ধরেই ভারতে আমদানি হয়েছে
বাংলাদেশের পণ্য। দুই দেশের মধ্যে আগের চেয়ে ব্যবসায়িক সম্পর্ক অনেকটাই বেড়েছে। প্রতিমাসেই
পশ্চিমবঙ্গ থেকে ৩০ হাজার টন কয়লা খুলনায় পৌঁছাবে। বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জনের পর
বড় মাপের ব্যবসয়িক এক্সচেঞ্জ হচ্ছে এটা। ’
ভারতে সরকারের পরিকল্পনা
শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি বন্দর মূলত আবার ব্যবসায়িকভাবে গড়ে উঠুক। তাতে বাংলাদেশের যেমন
সুবিধা হবে তেমন ভারতেরও। সেই হিসাবে কয়লার যাত্রা একটা বড় পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে।
কলকাতা পোর্ট ট্রাস্টের ডেপুটি
চেয়ারম্যান অমল কুমার মেহেরার বলেন, ভারত ও বাংলাদেশ যৌথ উদ্যোগে ‘মৈত্রী’
নামে ১৩শ মেগাওয়াটের একটি পাওয়ার প্ল্যান্ট তৈরি হয়েছে খুলনায়। যেটি মোংলা বন্দরের
কাছেই। ধারণা করা হচ্ছে চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি চালু হয়ে যাবে।
তারই ট্রায়ালস্বরূপ শ্যামাপ্রসাদ বন্দর থেকে বার্জের মাধ্যমে প্রথম কয়লা গেল।
একসময় অবিভক্ত বাংলায় নদীপথের
মাধ্যমে ব্যাবসায়িক আদান-প্রদান সবচেয়ে বেশি হতো। তবে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর এই
প্রথম নদীপথ দিয়ে কয়লার মাধ্যমে বড় ব্যবসায়িক আদান-প্রদান হতে চলেছে। তারই ট্রায়ালস্বরূপ
প্রথম সাড়ে তিন হাজারের কয়লা রওয়ানা দিল মোংলা বন্দরের উদ্দেশ্যে। এতে যেমন বাংলাদেশ-ভারতের
ব্যবসায়িক উন্নতি ঘটবে, তেমনি দু’দেশের মধ্যে মৈত্রী সম্পর্ক
আরো বাড়বে বলে আশা।