তালেবানদের সাম্প্রতিক অগ্রগতি থেকে বোঝা
যায়, তাদের লক্ষ্য রাজধানী কাবুলকে সারা দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া। এ কাজে নাকি
তারা সফল হতে পারে। এমনকি ৯০ দিনের মধ্যে তালেবানের হাতে কাবুলের পতনের আশঙ্কা করছেন
মার্কিন গোয়েন্দারা। যুক্তরাষ্ট্রের এক প্রতিরক্ষা কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এ সব কথা জানিয়েছেন
বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
একসময় যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞ
মনে করেছিলেন, আফগানিস্তানের আঞ্চলিক রাজধানীগুলো দখল করলেও এখন কাবুলে ঢুকবে না তালেবান
ফৌজ। আলোচনার রাস্তা খোলা রাখবে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে সেই ভাবনা থেকে সরে গেছেন
মার্কিন কর্মকর্তারা।
উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা মনে করছেন, ৩০ দিনের
মধ্যে সারা দেশের সঙ্গে কাবুলকে বিচ্ছিন্ন করে দিতে পারে তালেবান যোদ্ধা। আগামী তিন
মাসের মধ্যে পুরো কাবুল দখল করে ক্ষমতা সম্পূর্ণভাবে নিজেদের হাতে নেবে তারা।
গোয়েন্দা তথ্যের মূল্যায়নের ভিত্তিতে কর্মকর্তারা
কাবুল পতনের এ সম্ভাব্য সময়ের কথা বলেছেন। তবে সরকারি বাহিনীর প্রতিরোধ যুদ্ধের মোড়
ঘুরিয়েও দিতে পারে।
গত মে মাস থেকে ২০ বছরের যুদ্ধক্ষেত্র
আফগানিস্তান ছাড়ছে যুক্তরাষ্ট্রের সেনারা। চলতি মাসের শেষ দিকে পুরোপুরি প্রত্যাহার
শেষও হবে। এরই মধ্যে দেশটির অর্ধেকের বেশি অঞ্চল সশস্ত্র গোষ্ঠী তালেবানদের নিয়ন্ত্রণে
চলে গেছে। সর্বশেষ এক সপ্তাহেরও কম সময় ৩৪ প্রাদেশিক রাজধানীর কমপক্ষে ৯টি দখলে নিয়েছে
এক সময়ের ক্ষমতাসীনরা।
তালেবানদের সর্বশেষ দখলকৃত দুই শহরের একটি
রাজধানী কাবুল থেকে মাত্র ২০০ কিলোমিটার দূরত্বে। বুধবারও কান্দাহার ও গজনি শহরে তুমুল
লড়াইয়ের খবর পাওয়া গেছে।
এ দিকে আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি বুধবার
উত্তরাঞ্চলের শহর মাজার-ই-শরিফে যান। সেখানকার
যুদ্ধবাজ নেতার সঙ্গে তালেবানদের রুখে দেওয়া নিয়ে শলা-পরামর্শও করেন। একই দিন নিয়োগ
দেওয়া হয়েছে নতুন সেনাপ্রধানের।
এর আগে মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, এখন থেকে আফগানদেরই নিজেদের রক্ষার দায়িত্ব
নিতে হবে। নেতাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বানও জানান তিনি।
জাতিসংঘ জানায়, গত এক মাসে আফগানিস্তানে ১ হাজারের বেশি বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে। সরকার ও তালেবান বাহিনীর সংঘর্ষের শিকার হচ্ছে শিশুরাও। কয়েক দিন আগে ইউনিসেফ উদ্বেগ প্রকাশ করে জানায়, মাত্র তিন দিনেই ২৭ শিশু নিহতের খবর পেয়েছে সংস্থাটি।