ওয়েস্ট ইন্ডিজের
বিপক্ষে প্রথম দুই টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের ব্যাটিং নিয়ে যথেষ্ট সমালোচনা ছিল। তৃতীয়
ও শেষ ম্যাচে অবশ্য সেই ব্যর্থতা ঢাকার চেষ্টা দেখা গেলো সফরকারীদের ব্যাটিংয়ে। টি-টোয়েন্টি
সুলভ না হলেও লিটন দাস, আফিফ হোসেন ও মাহমুদউল্লাহর দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে
১৬৪ রানের লক্ষ্য দিয়েছে বাংলাদেশ।যা সিরিজে সফরকারীদের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ।
প্রথম দুই ম্যাচে
টস হারা বাংলাদেশ এই ম্যাচে জিতে যায় ভাগ্য পরীক্ষায়। যদিও গায়ানায় তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে
টস জিতে ব্যাটিংয়ের শুরুটা আহামরি ছিল না। পাওয়ার প্লেতে পড়ে যায় ২ উইকেট। রান উঠেছে
৪৪।
এনামুল হক-লিটন
দাস দেখে শুনে ব্যাটিং করতে থাকায় ২.৪ ওভার পর্যন্ত ছিল না কোনও বাউন্ডারি। পরে আস্তে
আস্তে হাত খুলতে থাকেন দুজন। তবে পঞ্চম ওভারে বেশি আগ্রাসী হতে যাওয়ার মাশুল দেন এনামুল।
মিড উইকেটের ওপর দিয়ে মারতে গেলে ওডিন স্মিথের গতিতে পরাস্ত হন তিনি। বল ব্যাটের কানায়
লেগে জমা পড়েন আকিল হোসেনের হাতে। দীর্ঘদিন পর ফেরা এনামুল এই ম্যাচেও করতে পারলেন
১০। খেলেছেন ১১ বল।
সাকিব তার পর
নেমে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক হওয়ার চেষ্টায় ছিলেন। কিন্তু গত ম্যাচের ছন্দ এই ম্যাচে
টেনে আনতে পারলেন না। রোমারিও শেফার্ডের শর্টার লেংথের বল উঠিয়ে মারতে গিয়েছিলেন। এনামুলের
মতো সাকিবও সফট ডিসমিসালে তালুবন্দি হন মাত্র ৫ রানে। ৩ বলের ইনিংসে বাউন্ডারি ছিল
একটি।
তার পর ধীরে চলো
গতিতে রান তুলেছেন লিটন-আফিফ। এই জুটিতে ১০ ওভারে ২ উইকেটে স্কোর দাঁড়ায় ৭২। তার পর
কিছু বাউন্ডারি, ওভার বাউন্ডারিতে সমৃদ্ধ হতে থাকে স্কোরবোর্ড।
এমন সময়ে হেইডেন
ওয়ালশ জুনিয়রের বলে স্লগ করতে গিয়ে বল আকাশে তুলে দিয়েছিলেন আফিফ। ভাগ্য ভালো উইন্ডিজ
ফিল্ডারদের ব্যর্থতায় জীবন পেয়ে যান তিনি। নাহলে ১৫ রানে ফিরতে হতো এই ব্যাটারকে।
লিটন বেশ দূর
এগিয়ে নিলেও হাফসেঞ্চুরি থেকে এক রান দূরে থাকতে কপাল পুড়ে তার। হেইডেনের ফ্লাইটেড
ডেলিভারিতে এজ হয়ে জমা পড়েন আকিল হোসেনের হাতে। ৪১ বলে ৪৯ রানে ফেরেন এই ওপেনার। তার
দায়িত্বশীল ইনিংসটিতে ছিল ৩টি চার ও ২টি ছয়। তাতে ভেঙে যায় ৪৪ বলে আফিফ-লিটনের করা
৫৭ রানের জুটিও। তবে লিটনের বিদায়ের মুহূর্তেই ১২.৫ ওভারে স্কোর হয়ে যায় ৯৯।
তখন বড় স্কোরের
মঞ্চ তৈরি হওয়ায় সেটি এগিয়ে নিতে থাকেন আফিফ-মাহমুদউল্লাহ। আফিফ জীবন পেয়ে সুযোগটা
ভালো মতোই কাজে লাগিয়েছেন। তাকে সঙ্গ দেন মাহমুদউল্লাহ। যদিও অধিনায়কের ইনিংসটিও টি-টোয়েন্টি
সুলভ ছিল না। এলবিডাব্লিউ হওয়ার আগে ২০ বলে ২২ রান করেছেন। তার আগে আফিফ-মাহমুদউল্লাহ
জুটি ৩৫ বলে যোগ করেছে ৪৯ রান।
আফিফ তার পরেই
দ্বিতীয় হাফসেঞ্চেুরি পূরণ করে রানআউট হয়েছেন। ৩৮ বল খেলে ফেরার আগে করেছেন ৫০ রান।
ইনিংসে ছিল ২টি চার ও ২টি ছয়।
শেষ ওভারে মোসাদ্দেক
দুটি চার মেরে স্কোরটা নিয়ে যান চ্যালেঞ্জিং একটা জায়গায়। ফলে ৫ উইকেটে রান উঠেছে ১৬৩।
মোসাদ্দেক ৬ বলে ১০ রান করেছেন। নুরুল হাসান ২ রানে অপরাজিত ছিলেন।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের
বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টির মতো তৃতীয় ও শেষ ম্যাচেও বৃষ্টি চোখ রাঙাচ্ছিল।
আবহাওয়া প্রতিকূল মনে হচ্ছিল সকালের দিকেও। কিন্তু সময় গড়াতেই স্থানীয় সময় বেলা ১২টার
দিকে আলো ঝলমলে আকাশ দেখা যায় গায়ানায়। তবে মাঠ ভেজা থাকায় খেলা শুরু হয়েছে নির্ধারিত
সময়ের আধা ঘণ্টা পর। কোনও ওভার কাটা যায়নি।
২৫ রানে দুটি
উইকেট নিয়েছেন হেইডেন ওয়ালশ জুনিয়র। ১৯ রানে একটি নিয়েছেন রোমারিও শেফার্ড, ৩৪ রানে
একটি নেন ওডিন স্মিথও।