Logo
শিরোনাম

আগামী বাজেটে বাড়ছে সরকারের পরিচালন ব্যয়

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১৯ মে ২০২২ | হালনাগাদ:বুধবার ১৫ নভেম্বর ২০২৩ | ৯১০জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে সরকারের পরিচালন বাজেট ধরা হচ্ছে ৪ লাখ ৩১ হাজার ৬৫৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে ভর্তুকি প্রণোদনা ও নগদ ঋণ, ঋণের সুদ পরিশোধ এবং সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন-ভাতা দিতেই ব্যয় হবে ৩ লাখ ৩৩ হাজার ৮৩২ কোটি টাকা। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানিয়েছে, অর্থ বিভাগের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে মূল্য সমন্বয় করা না হলে আগামী অর্থবছরে বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি বাবদ ১৮ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দিতে হবে। এটি চলতি অর্থবছরের তুলনায় দ্বিগুণ। চলতি বাজেটে বিদ্যুৎ খাতে ৯ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি বরাদ্দ রয়েছে। আর সরকারের প্রস্তাবিত নতুন বাজেটে ২০২২-২৩ অর্থবছরেরে জন্য খাদ্য ভর্তুকি বাবদ ৬ হাজার ৭৪৫ কোটি টাকা লাগতে পারে। চলতি ২০২১-২২ অর্থবছর এ খাতে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৬ হাজার কোটি টাকা। 

বাজেটে এককভাবে সবচেয়ে বেশি ব্যয় হয় ঋণের সুদ (দেশি-বিদেশি) পরিশোধে। বিশেষ করে অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ পরিশোধে। কারণ বাজেট ঘাটতি মেটাতে সরকার ব্যাংক ও সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ নিয়ে থাকে। নতুন বাজেটে ঋণের সুদ পরিশোধে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৮০ হাজার ২৭৫ কোটি টাকা। এটি মোট বাজেটের ১১ দশমিক ৮৪ শতাংশ। চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে এ খাতে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৮ হাজার ৫৮৯ কোটি টাকা।

অর্থ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আগামী বাজেটে সরকারি কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধে বরাদ্দ বাড়িয়ে ৭৬ হাজার ৪১২ কোটি টাকা করা হয়েছে। যা চলতি অর্থবছরের চেয়ে ৬ হাজার ৬৬৬ কোটি টাকা বেশি। ২০১১-১২ অর্থবছরে সরকারি কর্মচারীদের বেতন-ভাতায় বরাদ্দ ছিল ২১ হাজার ৩৫০ কোটি টাকা। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে বেতন-ভাতায় সরকারের ব্যয় ছিল ২৮ হাজার ৮২০ কোটি টাকা। ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে সেটি দ্বিগুণের বেশি বেড়ে দাঁড়ায় ৬৯ হাজার ১৪৬ কোটি টাকা। ফরাসউদ্দিন কমিশনের সুপারিশে এ খাতে ব্যয় বেড়েছে।

অর্থ বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে জ্বালানি তেল, গ্যাস, সারসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়ছে। প্রভাব পড়ছে সরবরাহ লাইনে। ফলে আমদানি খরচ বেড়ে যাচ্ছে। বাড়ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন পণ্যের দাম। এতে মূল্যস্ফীতি বাড়ছে। নিত্যপণ্যের দাম আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করলে মূল্যস্ফীতি আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

জানা গেছে, আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরে ভর্তুকি প্রণোদনা ও নগদ ঋণ খাতে বরাদ্দ রাখা হচ্ছে ১ লাখ ৭৭ হাজার ১৪৫ কোটি টাকা। এটি মোট বাজেটের ২৬ দশমিক ১৩ শতাংশ এবং চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের তুলনায় ২৭ হাজার ৯১০ কোটি টাকা বেশি। চলতি অর্থবছরে এ তিন খাতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১ লাখ ৪৯ হাজার ২৩৫ কোটি টাকা। পরিচালন বাজেটের মধ্যে এ খাতের ব্যয় সবচেয়ে বেশি। এ প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জানিয়েছেন, বৈশ্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে আগামী অর্থবছরের বাজেট তৈরি করা হচ্ছে। সরকারের পরিচালন ব্যয় এবং উন্নয়ন ব্যয় ঠিক রেখে অপ্রয়োজনীয় ব্যয় বাদ দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে বাজেট। এর অংশ হিসেবে ইতোমধ্যেই সরকারি, স্বায়ত্বশাসিত ও আধাসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের সকল প্রকার বিদেশ সফর বাতিল করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত এ সিদ্ধান্ত বলবৎ থাকবে। 

উল্লেখ্য, সরকার আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য বাজেট তৈরির কাজ প্রায় শেষের দিকে। ইতোমধ্যেই দারিদ্র বিমোচনকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বাজেট তৈরি করছে সরকার। তবে করোনা মহামারি ও বিশ্ব অর্থনৈতিক পরিস্থিতি মাথায় রেখে এবারের বাজেট তৈরির বিষয়টি বিবেচনায় রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানিয়েছে, আগামী ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের বাজেটের আকার প্রস্তাব করা হচ্ছে ৬ লাখ ৭৭ হাজার ৮৬৪ কোটি টাকা। যা মোট জিডিপির ১৫ দশমিক ৪ শতাংশ। চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে বাজেটের আকার ছিল জিডিপির ১৭ দশমিক ৫ শতাংশ। এক বছরের ব্যবধানে সরকারের জিডিপির অংশ হিসেবে বাজেটের আকার ২ শতাংশ কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। চলতি ২০২১-২০২২ অর্থবছরের বাজেটের আকার ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা। তবে বাজেটের আকার কমলেও নতুন অর্থবছরে বাজেট ঘাটতি থাকবে প্রায় আড়াই লাখ কোটি টাকা। এটি জিডিপির ৫ দশমিক ৫ শতাংশ। অন্যদিকে, আগামী অর্থবছরের জন্য মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপির প্রাক্কলন করা হয়েছে ৪৪ লাখ ১২ হাজার ৮৪৯ কোটি টাকা।


আরও খবর

এলপিজির দাম আরও বাড়ল

বৃহস্পতিবার ০২ নভেম্বর 2০২3