Logo
শিরোনাম

আইসিডিডিআর,বিতে রেকর্ড সংখ্যক ডায়রিয়ার রোগী ভর্তি

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ২৪ মার্চ ২০২২ | হালনাগাদ:বুধবার ১৫ নভেম্বর ২০২৩ | ১০১৫জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

গত এক সপ্তাহে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে আট হাজারেরও বেশি মানুষ রাজধানীর আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশে (আইসিডিডিআর,বি) ভর্তি হয়ে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দৈনিক ১২-১৩শ ডায়রিয়া রোগী হাসপাতালে আসছেন। যাদের অধিকাংশকে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। এ অবস্থায় রোগী সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন কর্তব্যরতরা।

বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) দুপুরে আইসিডিডিআর,বি হাসপাতালে ডায়রিয়া পরিস্থিতি সরেজমিনে গিয়ে এসব তথ্য জানা গেছে।

এদিন বেলা সাড়ে ১১টার পর ফজল মিয়া নামক এক ডায়রিয়া রোগীকে আইসিডিডিআর,বিতে আনা হয়। এ সময় তিনি তীব্র পানিশূন্যতাসহ মারাত্মকভাবে ডায়রিয়ায় ভুগছিলেন। দুই মিনিটের মধ্যে তার পানিশূন্যতা রোধে চিকিৎসা শুরু হয়। দুপুর ১২টা ৫৪ মিনিটের দিকে ফজল মিয়ার অবস্থার উন্নতি হয়। এ সময় তার মুখে হাসি ফুটে ওঠে।

সূত্র জানিয়েছে, আইসিডিডিআর,বি হাসপাতালে গত সাত দিনে ৮ হাজার ১৫২ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। এর আগে, ২০১৮ সালের এপ্রিলে ডায়রিয়ার এ রকম প্রাদুর্ভাব ঘটেছিল। মহামারির মতো রূপ ধারণ করে ওই বছরের মে মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত তা অব্যাহত ছিল।

আইসিডিডিআর,বি হাসপাতালের প্রধান ডা. বাহারুল আলম বলেন, ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বছরে দুই বার শীত ও গরমের সময়ে বাড়ে। এ সময় দৈনিক গড়ে ৩৫০ থেকে ৪০০ রোগী থাকলেও সর্বোচ্চ এক হাজারের মতো হয়। কিন্তু এবার এটা এক হাজার ২০০ ছাড়িয়ে গেছে। ২২ মার্চ রাতে রোগীর সংখ্যা ছিল এক হাজার ২৭২ জন, এর পরের দিন (২৩ মার্চ) এক হাজার ৩৩ জন নতুন ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিতে আসেন। আবার আজ (বৃহস্পতিবার) রাত পর্যন্ত হয় তো আরেকটু বেশি হতে পারে বলে আমরা আশঙ্কা করছি।

কোন এলাকা থেকে বেশি সংখ্যক মানুষ ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে আইসিডিডিআর,বিতে আসছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এভাবে কোনো এলাকাকে আমরা স্পেসিফাই করতে পারব না। সব জায়গা থেকেই রোগী পাচ্ছি। তবে, প্রথম দিকে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, মোহাম্মদপুর ও দক্ষিণখান এলাকার রোগীর সংখ্যা একটু বেশি ছিল। আবার ঢাকার বাইরে নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, টঙ্গী, জয়দেবপুর এসব এলাকা থেকেও ডায়রিয়া আক্রান্ত মানুষ বেশি আসছেন।

হঠাৎ ডায়রিয়া রোগী সংখ্যা বৃদ্ধির কারণ প্রসঙ্গে ডা. বাহারুল আলম বলেন, গরমে ডায়রিয়ার জীবাণুটি অনুকূল পরিবেশ পায়। এ সময়ে তারা বেশিক্ষণ তারা ফাইট করে বাঁচতে পারে। তাছাড়া গরমের সময়ে জীবাণুটি বেশি বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়, অনেক বেশি ছাড়িয়ে থাকে। তাছাড়া মানুষ গরমের কারণে পিপাসার্ত হয় এবং পানি পানের ক্ষেত্রে যাচাই-বাছাই করে না। এ দুটি কারণ ডায়রিয়ার প্রকোপ বাড়াতে সাহায্য করে।

সাধারণ মানুষের কী করণীয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার পরামর্শ হলো, বাইরের কোনো খাবার খাবেন না। যেখান-সেখান থেকে পানি খাবেন না। পানি যদি খেতে হয় তাহলে সেটি ফোটানো হতে হবে। অন্যথায় নিশ্চিত হতে হবে যে আপনি যে পানি পান করছেন, সেটি জীবাণুমুক্ত।  আর করোনাকালীন সময়ের হাত ধোয়ার যে অভ্যাস তৈরি হয়েছে, সেটা বজায় রাখতে হবে।

প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, আইসিডিডিআর,বির ঢাকা ও চাঁদপুরে অবস্থিত মতলব হাসপাতাল প্রতি বছর দুই লাখেরও বেশি রোগীকে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দিয়ে থাকে।


আরও খবর