দুর্গোৎসবের
আজ মহাষ্টমী। গতকাল রবিবার ছিল মহাসপ্তমী। এদিন সকালে নবপত্রিকা প্রবেশ ও সপ্তমীবিহিত
পূজা শুরু হয়। পূজা শেষে ভক্তরা অঞ্জলি গ্রহণ করেন। মহাসপ্তমীতে ষোড়শ উপচারে অর্থাৎ
ষোলোটি উপাদানে পূজা হয় দেবীর। সকাল ৯টা ৫৭ মিনিটে ত্রিনয়নী দেবী দুর্গার চক্ষুদান
করা হয়। এরপর দেবীকে আসন, বস্ত্র, নৈবেদ্য, স্নানীয়, পুষ্পমাল্য, চন্দন, ধূপ ও দীপ
দিয়ে পূজা করেন ভক্তরা।
এদিন দেবী-দর্শন,
দেবীর পায়ে ভক্তদের অঞ্জলি প্রদান ও প্রসাদ গ্রহণের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে দুর্গোৎসবের
মূল পর্বের। এ ছাড়া এদিন পুরোহিত বরণ, চণ্ডীপাঠ, পুরোহিতকে পুজার দায়িত্ব অর্পণসহ নানা
আচার-অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শুরু হয় সপ্তমীর দিনের পূজা পাঠ।
দুর্গাপূজার
দ্বিতীয় দিন গতকাল মহাসপ্তমীর অঞ্জলি নিতে রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দিরসহ সারাদেশের পূজা
মণ্ডপে মণ্ডপে পুণ্যার্থীদের উপস্থিতি বেশ ভালো ছিল। তবে এদিন বিকাল ও সন্ধ্যায় ঢাকায়
বৃষ্টি হওয়ার কারণে রাস্তায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এ কারণে ভক্তদের পূজাম-পে আসতে
কিছুটা ভোগান্তি পোহাতে হয়। সোমবার মহাঅষ্টমী থেকেই মূলত মন্দিরে ও মণ্ডপে ভক্ত ও দর্শনার্থীদের
ঢল নামবে বলে জানান আয়োজকরা।
শাস্ত্রমতে,
সপ্তমী পূজায় বিশেষ রীতি মেনে স্নান করানো হয় দেবী দুর্গাকে। পরে ধর্মীয় রীতিতে নতুন
বস্ত্র ও নানা উপচারে তার পূজা অনুষ্ঠিত হয়। এদিন দেবীর তৃতীয় চক্ষুদান করা হয়। সপ্তমী
পূজার শুরুতে নবপত্রিকা প্রবেশ ও প্রকৃতির বিভিন্ন সৃষ্টির মধ্যে ৯টি গাছের ফুল, ফল
ও পাতা দিয়ে সব অশুদ্ধকে শোধনের মাধ্যমে শুদ্ধ করে দেবীকে পূজা করা হয়। কল্পনার মধ্য
দিয়ে দেবী দুর্গাকে মনের আসনে বসানোর পর অনুষ্ঠিত হয় সপ্তমী বিহিত পূজা।
মহাসপ্তমীর
বিষয়ে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরের প্রধান পুরোহিত ধর্মদাস চট্টোপাধ্যায় জানান, এই দিনে
দেবী দুর্গার সবচেয়ে ভয়ানক রূপ অর্থাৎ কালরাত্রি রূপের পূজা করা হয়। এর ফলে অশুভ শক্তির
বিনাশ ঘটিয়ে শুভ শক্তির কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেন দেবী দুর্গা।
মহানগর সার্বজনীন
পূজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রমেন মণ্ডল বলেন, এ বছর ঢাকা মহানগরে ২৪১টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা
অনুষ্ঠিত হচ্ছে। করোনা মহামারীর কারণে গত দুই বছর দুর্গাপূজার মূল আচার-অনুষ্ঠান শেষে
সন্ধ্যা আরতির পর জনসমাগম এড়াতে পূজাম-প বন্ধ ছিল। কিন্তু এবার পূজা নিয়ে উদ্দীপনা
অনেক বেশি এবং পূজাম-পগুলোয় ভক্তদের উপস্থিতিও চোখে পড়ার মতো। দিনের বেলায় প্রচ- গরমের
কারণে লোকজন আসতে পারে না। তাই সন্ধ্যায় পরিবেশ একটু ঠাণ্ডা হলে লোকজন আসতে শুরু করে।