রিজেন্ট গ্রুপের
চেয়ারম্যান সাহেদ করিম বলেছেন, 'আমার পরিবার ধ্বংস হয়ে গেছে। আমার ১৬ বছরের মেয়ে
স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে, আমার স্ত্রী বাড়ির বাইরে যেতে পারে না।' আজ বৃহস্পতিবার
সাহেদের জামিনের জন্য তার আইনজীবী ঢাকার একটি আদালতে আবেদন করার সময় এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি আদালতকে
জানান, সহপাঠীরা প্রতারকের মেয়ে বলে ডাকায় তার মেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিল। মিথ্যা
মামলায় ফাঁসানোয় তার স্ত্রীকে 'চোরের বউ' বলে অপমান করা হয়।
আদালতের অনুমতি
নিয়ে সাহেদ বলেন, '২০২০ সালে যখন করোনা রোগী দ্রুত বাড়ছিল তখন তৎকালীন স্বাস্থ্যসচিব
সাহেদকে তার ২ হাসপাতালে করোনা রোগীদের চিকিত্সার প্রস্তাব দেন।'
এ প্রস্তাব
পেয়ে তার হাসপাতাল দুটিতে কোনো ফি ছাড়াই করোনা রোগীদের নমুনা পরীক্ষা শুরু করে এবং
দেশে তার হাসপাতালগুলোই প্রথম করোনা রোগীদের চিকিত্সা দেওয়া শুরু করে বলে দাবি করেন
তিনি।
তিনি বলেন,
'স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদসহ অভিযুক্তদের কাউকে আমি চিনতাম
না। মামলায় উল্লেখ করা কোনো টাকা আমি পাইনি। তাছাড়া, আমাকে সাতক্ষীরা থেকে গ্রেপ্তার
করা হয়নি।'
এর আগে গতকাল
বুধবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ এর বিচারক আল আসাদ মো. আসিফুজ্জামান এ মামলায় আবুল
কালাম আজাদসহ ৫ জনের জামিন মঞ্জুর করেন।
মামলায় জামিন
পাওয়া অপর ৪ আসামি হলেন- সাবেক পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) ডা. আমিনুল হাসান, উপপরিচালক
(হাসপাতাল-১) ডা. মো. ইউনুস আলী, সহকারী পরিচালক (হাসপাতাল-১) ডা. মো. শফিউর রহমান
এবং গবেষণা কর্মকর্তা ডা. মো. দিদারুল ইসলাম।
মামলায় সাহেদ,
আজাদ ও বাকি ৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি স্থগিত করার জন্য দাখিল করা আবেদনও
মঞ্জুর করেন আদালত।
কোনো লাইসেন্স
ছাড়াই করোনাভাইরাসের নমুনা সংগ্রহ ও চিকিৎসার নামে সরকারি তহবিল আত্মসাতের অভিযোগে
৬ জনের নামে মামলা হয়। গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপপরিচালক
ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারী ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
তদন্তকালে এই
ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়ায় অভিযোগপত্রে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তৎকালীন
মহাসচিব আজাদের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়। চার্জশিটে তাকে 'পলাতক' দেখানো হয়। ২০২০
সালের ২২ সেপ্টেম্বর আজাদ ছাড়া বাকি ৫ জনের নামে মামলাটি করে দুদক।
মামলার বিবৃতি
অনুসারে, অভিযুক্তরা লাইসেন্স নবায়ন না করেই বন্ধ হয়ে যাওয়া রিজেন্ট হাসপাতালটিকে
একটি ডেডিকেটেড কোভিড-১৯ হাসপাতালে রূপান্তরিত করেছিল এবং অবৈধ সুবিধা নিতে ক্ষমতার
অপব্যবহার করেছিল।
এতে আরও বলা
হয়, তারা সরকার পরিচালিত ল্যাব নিপসোমে কোভিড-১৯ রোগীদের নমুনা পরীক্ষার মাধ্যমে ১
কোটি ৩৭ লাখ টাকার বেশি আত্মসাৎ করেছেন।