Logo
শিরোনাম

আমরা এখন একা

প্রকাশিত:শুক্রবার ১৯ নভেম্বর ২০২১ | হালনাগাদ:শুক্রবার ২৪ মার্চ ২০২৩ | ৭৩৭জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

পুরো করোনার সময় একটা বাসার চার দেয়ালের ভেতরে আটকা থেকে সময় কাটিয়েছি। তখন বসে বসে নানা কিছু চিন্তা করেছি, তার মাঝে একটা ছিল করোনার উপদ্রব শেষ হওয়ার পর কী করব তার নানারকম পরিকল্পনা। সবচেয়ে বড় কল্পনাটা ছিল রাজশাহী গিয়ে হাসান আজিজুল হক স্যারের সাথে দেখা করে তাঁর সাথে কিছুক্ষণ কথা বলে আসা। স্যারের সাথে অনেকবার দেখা হয়েছে, অনেকবার কথা হয়েছে, কিন্তু আর কেউ নেই শুধু আমি আর স্যার, তার সাথে বসে সাহিত্য, দেশ, ইতিহাস, রাজনীতি এইসব সিরিয়াস বিষয় নিয়ে কথা বলার একটা ছেলেমানুষী শখ ছিল। যত সময় গিয়েছে সেটা নিয়ে আমার সেই শখটা অনেক বেড়ে গিয়েছিল।

খবর পেয়েছিলাম স্যারের শরীরটা ভালো যাচ্ছে না, তার ছেলের বক্তব্য থেকে জানতে পেরেছিলাম তার স্মৃতি শক্তিও কমে আসছে, অনেক সময় পরিচিত মানুষজনকে চিনতে পারেন না। তারপর দেখলাম স্যারকে চিকিৎসার জন্যে ঢাকা নিয়ে আসা হয়েছে, খুব ভয় পেয়েছিলাম তখন। তাঁর ছেলের কাছে স্যারের খোঁজ নিয়েছি। করোনার সময়টিতে আমরা আইসিইউ নামে একটা ভয়ংকর শব্দ শিখেছি, দেখে আসছি একবার কেউ তার ভেতরে গেলে প্রায় কখনোই বেঁচে ফিরে আসছেন না। স্যার কিন্তু সুস্থ হয়ে বের হয়ে এসেছেন, আবার রাজশাহী ফিরে গিয়েছেন দেখে অনেক শান্তি পেয়েছিলাম।

আমি জানি স্যার পরিণত বয়সে একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন শেষে অসাধারণ কালজয়ী কিছু লেখা আমাদের উপহার দিয়ে, একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজেই একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে থেকে দেশের অসংখ্য মানুষের অভিভাবক হয়ে আত্মীয় পরিজন গুণগ্রাহীদের মাঝে থেকে বিদায় নিয়েছেন। আমাদের হয়তো দীর্ঘশ্বাস ফেলে এটা মেনেই নিতে হবে। কিন্তু যখন মনে হয় তিনি আর নেই তখনই মনে হয় এখন আমরা একা। একেবারেই একা।

শুধু তাই না কয়েক সপ্তাহ আগে দেখলাম স্যার পত্রিকায় একটি লেখা দিয়েছেন, লেখার বিষয়বস্তুটুকু আমাকে যতটুকু আনন্দ দিয়েছে তার থেকে বেশি আনন্দ দিয়েছে স্যার আবার লিখছেন সেই তথ্যটুকু। আমি যখন রাজশাহী যাওয়ার কথা চিন্তা করছি তখন একেবারে হঠাৎ করে জানতে পারলাম স্যার আমাদের ছেড়ে চলে গিয়েছেন। হঠাৎ করে মনে হল একেবারে একা হয়ে গেছি। আমাদের বুঝি দেখে শুনে রাখার আর কেউ নেই।

বহুকাল আগে একবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে গেছি। তখন সময়টা ভালো না, দেশ থেকে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বঙ্গবন্ধুর অবদান এসব কিছুকে নির্বাসন দেওয়া হয়েছে। সেই দুঃসময়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ছেলেমেয়েরা মিলে মুক্তিযুদ্ধের জন্য ভালোবাসাটুকু ধরে রাখার জন্য একটা সংগঠন করেছে। সেই বাচ্চা ছেলেমেয়েরা আমাকে ডেকেছে, আমি তাদের সাথে কথাবার্তা বলছি। হঠাৎ করে দেখি সেই বাচ্চা ছেলেমেয়েদের মাঝে একজন বড় মানুষ—খবর পেয়ে হাসান আজিজুল হক স্যার চলে এসেছেন। দেশের বাইরে ছিলাম বলে দেশের এই বড় বড় কবি, সাহিত্যিক শিল্পীদের সাথে আমার পরিচয় নেই, তার উপর সবাই ঢাকাকেন্দ্রিক শুধু স্যার রাজশাহী থাকেন! স্যারের সাথে পরিচয় হল, কথা হল। তারপর থেকে যতবার রাজশাহী গিয়েছি স্যারের সাথে একটিবার হলেও দেখা করে এসেছি, স্যার হাসিমুখে আমার যন্ত্রণা সহ্য করেছেন।

আমি সিলেটের শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে, অভ্যাস অনুযায়ী মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কথাবার্তা বলে জামায়াত শিবিরের চক্ষুশূল হয়ে আছি। দুইদিন পরে পরেই আমাকে নিয়ে ঝামেলা হয়, কখনো বাসায় বোমা পড়ে, কখনো ফাঁসির দাবি, কখনো আমার বিরোদ্ধে আন্দোলন—স্যার প্রতিবার রাজশাহী থেকে আমাকে ফোন করেন, সাহস দেন। আমার পাশে আছেন বলে আমিও ভরসা পাই, বাড়াবাড়ি করছি কিনা জানি না, কিন্তু ভুল করছি না সেই বিষয়টা বুঝতে পারি।

এই দেশে যারা থেকেছে, মুক্তিযুদ্ধের জন্য ভালোবাসাটুকু ধরে রাখার জন্য তাদের সবাইকেই কাজ করতে হয়েছে, সেজন্য ঝামেলাও কম হয়নি। কাজেই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হওয়ার পরও স্যারের পরিচয় শুধু অধ্যাপক নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল চেতনার একজন অভিভাবকও। এতো কিছুর পরেও স্যারের সবচেয়ে বড় পরিচয় হচ্ছে লেখক। আমি নিজে আমার ছেলেমানুষী লেখার চেষ্টা করি বলে আমি বুঝতে পারি আমরা কেন দায়সারা লেখক আর স্যার কেন সত্যিকারের লেখক—শুধু লেখক নয়, বড় লেখক! খুব বেশি লিখেননি কিন্তু যেটুকু লিখেছেন একেবারে খাটি সোনা। দেখে ভালো লাগে যে স্যারের লেখার জন্য দেশে এবং দেশের বাইরে তাঁকে ঠিকভাবে মূল্যায়ন করা হয়েছে।

বহুদিন আগে এলিস ওয়াকারের লেখা দি কালার পারপল’ নামে একটা উপন্যাস পড়েছিলাম (আমার ধারণা এই নামে তৈরি চলচ্চিত্রটি মূল বই থেকে বেশি পরিচিত)। যারা মূল বইটি পড়েছেন তারা জানেন এই বইয়ের ভাষা কিন্তু আমাদের পরিচিত ইংরেজি নয়, আমেরিকান কালো মানুষদের নিজস্ব এক ধরনের ভাষা। প্রথম এক দুই পৃষ্ঠা পড়লেই এই ভাষাটিতে অভ্যস্ত হয়ে যাওয়া যায়, তখন এই নূতন ভাষাটিকে রীতিমত মিষ্টি একটি ভাষা বলে মনে হতে থাকে। আমাদের বাংলা ভাষায় লেখা বইয়েও কেউ এক দুইটি সংলাপ নয় পুরো বইটি এভাবে লিখেছেন কিনা আমার সেটি নিয়ে কৌতূহল ছিল।

হাসান আজিজুল হক স্যারের আগুনপাখী বইটি পড়ে আমার সেই অতৃপ্তিটুকু প্রথমবার পূরণ হয়েছে। প্রমিত ভাষায় বই পড়ে পড়ে হঠাৎ করে একটা স্থানীয় আঞ্চলিক ভাষায় একটা মেয়ের জবানিতে পুরো বইটুকু পড়ে মনে হয় সামনে বুঝি একটা নূতন দিগন্ত খুলে গিয়েছে। বইয়ের ভাষা হচ্ছে মাত্র একটি দিক, বইটিতে সেই সময়ের এত নিখুঁত এবং এত মানবিক একটি ইতিহাস উঠে এসেছে যে তার তুলনা নেই।

বৃটিশ ঔপনিবেশ, দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ, আমাদের দেশে যে ভয়াবহ অবস্থা তৈরি করেছিল তার একটা অসাধারণ বাস্তব ছবি এই বইয়ে পরম মমতায় তুলে ধরা হয়েছে সেটি না পড়া পযন্ত কেউ বুঝতে পারবে না। স্যারের সাথে যতবার দেখা হয়েছে প্রত্যেকবার সাধারণ কথাবার্তা হয়েছে কিন্তু আমার মনের গহীনে একজন সত্যিকার সাহিত্যিকের সাথে সাহিত্য নিয়ে কথা বলার একটা গোপন বাসনা ছিল। সেই বাসনাটুকু বাসনা হিসেবেই থেকে গেল।

হাসান আজিজুল হক স্যারের মেধাবী ছেলেটি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেওয়ার জন্য ইন্টারভিউ দিতে এসেছিল। সে যোগ্য প্রার্থী ছিল, এখন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কিন্তু—সেই সময়টিতে হাসান আজিজুল হকের পুত্র হওয়ার অপরাধে এখানে নিয়োগ পায়নি, যদিও বিশ্ববিদ্যালয়ে তার মত একজনের খুবই প্রয়োজন ছিল। তখন তার সাথে পরিচয় হয়েছিল এবং তার কাছে স্যারের অনেক গল্প শুনেছি। তার কাছে জেনেছি স্যারের হাতের লেখা নাকি খুবই দুর্বোধ্য, যারা তাঁর হাতের লেখার সাথে পরিচিত নন তাদের কাছে মনে হবে স্যার বুঝি কলম দিয়ে কাগজে দাগ দিয়ে গিয়েছেন মাঝে মাঝে শুধু কলমটি একটু উপরে নিচে করেছেন! শুধু সে তার হাতের লেখা মর্মোদ্ধার করতে পারে!

আমি স্যারের হাতের লেখা দেখিনি, তাই কথাটুকু কতটুকু বাবাকে নিয়ে কৌতুক কতটুকু সত্যি কখনো যাচাই করে দেখতে পারিনি! হাতের লেখা যেরকমই হয়ে থাকুক সেই লেখা দিয়ে তিনি যে অসাধারণ লেখাগুলো লিখে গিয়েছেন তার জন্য আমরা সবসময়েই স্যারের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকব। আমি জানি স্যার পরিণত বয়সে একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন শেষে অসাধারণ কালজয়ী কিছু লেখা আমাদের উপহার দিয়ে, একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজেই একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে থেকে দেশের অসংখ্য মানুষের অভিভাবক হয়ে আত্মীয় পরিজন গুণগ্রাহীদের মাঝে থেকে বিদায় নিয়েছেন। আমাদের হয়তো দীর্ঘশ্বাস ফেলে এটা মেনেই নিতে হবে। কিন্তু যখন মনে হয় তিনি আর নেই তখনই মনে হয় এখন আমরা একা। একেবারেই একা।

লেখক : কথাসাহিত্যিক, সাবেক অধ্যাপক, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।


আরও খবর

শেখ হাসিনার নেতৃত্ব এখনও অপরিহার্য

বৃহস্পতিবার ১৫ ডিসেম্বর ২০২২




ড্রোন বিধ্বস্তের ঘটনায় বাড়ছে রুশ-মার্কিন উত্তেজনা

প্রকাশিত:বুধবার ১৫ মার্চ ২০২৩ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৩ মার্চ 20২৩ | ৪৯জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, একটি রুশ যুদ্ধ বিমানের সঙ্গে একটি মার্কিন মনুষ্যবিহীন ড্রোনের সংঘর্ষের পর তা কৃষ্ণ সাগরে বিধ্বস্ত হয়েছে। এই ঘটনা ইউক্রেন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে উত্তেজনায় সরাসরি একে অন্যকে সামনাসামনি মোকাবিলার ঝুঁকি তৈরি করেছে বলে মনে করা হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্র বলছে, ড্রোনটি রুটিন মিশনে আন্তর্জাতিক আকাশসীমায় থাকার সময় দুটি রুশ যুদ্ধবিমান এর পথ আটকাতে চেষ্টা করে।

অন্যদিকে রাশিয়া বলছে জটিল কৌশল পরিচালনার সময় ড্রোনটি বিধ্বস্ত হয় এবং পাশাপাশি তারা তাদের বিমানের সঙ্গে ড্রোনটির সরাসরি সংঘর্ষের বিষয়টি অস্বীকার করে। খবর বিবিসির। 

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় আরও জানায়, এমকিউ-৯ রিপার ড্রোনটি উড়ার সময় এর ট্রান্সপন্ডার বন্ধ ছিল। ট্রান্সপন্ডার হলো একটি যোগাযোগ ডিভাইস যা বিমানকে শনাক্ত করতে সহায়তা করে। রিপার হচ্ছে ২০ মিটার (৬৬ ফুট) দীর্ঘ পাখা বিশিষ্ট পর্যবেক্ষণকারী ড্রোন।

মার্কিন সামরিক বাহিনী জানায় গতকাল মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) ইউরোপীয় সময় সকাল ৭টা ৩ মিনিটে এই ঘটনা ঘটে।

এক বিবৃতিতে তারা জানায়, আন্তর্জাতিক আকাশসীমায় রুটিন কার্যক্রমে অংশ নেওয়া আমাদের এমকিউ-৯ বিমানটির পথ আটকে দেওয়া হয় এবং রুশ বিমানের সঙ্গে এটির সংঘর্ষ হয়। এর ফলে ড্রোনটি বিধ্বস্ত হয়।

মার্কিন সামরিক বাহিনী আরও জানায়, রুশ এসইউ-২৭ যুদ্ধবিমানের সঙ্গে সংঘর্ষের আগে বেশ কয়েকবার ড্রোনের উপর তেল ছড়িয়ে দেওয়া হয় যা একটি বেপরোয়া, পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর ও অপেশাদার আচরণ

এ ঘটনায় ওয়াশিংটনে নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূত আনাতোলি আন্তোনভকে তলব করা হয় ও প্রতিবাদ জানানো হয়। পরে আন্তোনভের উদ্ধৃতি দিয়ে রাশিয়ার সরকারি গণমাধ্যমগুলো জানায় ড্রোন উড়ার ঘটনা একটি উসকানি।

২০১৪ সালে রাশিয়া ক্রিমিয়া দখল করে নেওয়ার পর থেকেই কৃষ্ণ সাগরে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। এরপর ইউক্রেনে সর্বাত্মক যুদ্ধ শুরুর পর যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য আন্তর্জাতিক আকাশ সীমায় তাদের নজরদারি ফ্লাইট বাড়িয়ে দেয়।

তবে এখন প্রশ্ন হলো, মঙ্গলবারের ঘটনা কি মার্কিন ড্রোন ও তাদের তৎপরতায় বিঘ্ন সৃষ্টির একটি চেষ্টা নাকি ড্রোনটিকে ভূপাতিত করতে রাশিয়ার জোরালো প্রচেষ্টা ছিল।

যুক্তরাষ্ট্র বলছে, রুশ পাইলটদের তৎপরতা ছিল বিপদজনক।

এদিকে, পশ্চিমা দেশগুলো ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে যাতে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সরাসরি কোনো শত্রুতার সৃষ্টি না করে সে প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। আর কৃষ্ণ সাগরের এই ঘটনা তাদের সাড়া দেয়ার বিষয়টি কেমন হতে পারে যুক্তরাষ্ট্র তার মূল্যায়ন করবে।

মার্কিন সামরিক বাহিনীর কমান্ডাররা তাদের বিবৃতিতে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে যে, এই ধরনের ঘটনা ভুল হিসাব বয়ে আনতে পারে ও অনিচ্ছকৃতভাবে উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।


আরও খবর

ট্রাম্প বললেন, ‘আই এম ব্যাক’

শনিবার ১৮ মার্চ ২০২৩




বায়ুদূষণে আজ সপ্তম ঢাকা

প্রকাশিত:শনিবার ১৮ মার্চ ২০২৩ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৩ মার্চ 20২৩ | ৩১জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

বিশ্বের দূষিত বায়ুর শহরের তালিকায় আজ ঢাকার অবস্থান সপ্তম। শনিবার সকাল ১০টা ৪৬ মিনিটে এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই-বায়ুর মান সূচক) স্কোর ১৫৭ নিয়ে ঢাকার বাতাসের মান অস্বাস্থ্যকর অবস্থায় ছিল। এ তালিকায় শুক্রবার ঢাকার অবস্থান ছিল সপ্তম। গত ফেব্রুয়ারি মাসে বেশিসংখ্যক দিন অস্বাস্থ্যকর বায়ুর মধ্যে কাটিয়েছে নগরবাসী। এ ধারাবাহিতা রয়েছে চলতি মার্চেও। 

একিউআই স্কোরে শীর্ষে আছে ইরাকের বাগদাদ, স্কোর ২২৭। দ্বিতীয় স্থানে আছে মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুন শহর, স্কোর ১৬৪। ১৬৩ স্কোর নিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে পাকিস্তানের লাহোর। ১৬২ স্কোর নিয়ে চতুর্থ স্থানে আছে ভারতের কলকাতা। পঞ্চমে কাজাখস্তানের আস্তানা, স্কোর ১৬১।

আইকিউএয়ারের প্রকাশিত বৈশ্বিক বায়ুর মান সংক্রান্ত প্রতিবেদনে, ২০২২ সালে বিশ্বে সবচেয়ে দূষিত বায়ুর তালিকায় পঞ্চম স্থানে ছিল বাংলাদেশে। সাত হাজার ৩২৩টি শহরের মধ্যে দূষিত বায়ুর জন্য বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার অবস্থান ৪৯তম। ওই বছর ঢাকার বাতাসে প্রতি ঘনমিটারে পার্টিকুলেট ম্যাটার (পিএম) ২.৫ এর বার্ষিক গড় ছিল ৬৫.৮ মাইক্রোগ্রাম, যা অতি দূষিত ক্যাটাগরির মধ্যে পড়ে। শুধু ঢাকা নয়, ওই বছরও বিশ্বের অতি দূষিত শহরগুলোর মধ্যে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বড় নগরীগুলোরই নাম এসেছে।

প্রতিদিনের বাতাসের মান নিয়ে তৈরি করা একিউআই স্কোর একটি নির্দিষ্ট শহরের বাতাস কতটুকু নির্মল বা দূষিত, সে সম্পর্কে মানুষকে তথ্য দেয় এবং তাদের কোনো ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হতে পারে কি না, তা জানায়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাতাসে প্রতি ঘনমিটারে দুই দশমিক পাঁচ মাইক্রোমিটার ব্যাসের বস্তুকণার পরিমাণ (পিপিএম) যদি শূন্য থেকে ৫০ এর মধ্যে থাকে, তাহলে ওই বাতাসকে বায়ু মানের সূচকে (একিউআই) ভালো বলা যায়। এই মাত্রা ৫১-১০০ হলে বাতাসকে মধ্যম মানের ও ১০১-১৫০ হলে বিপদসীমায় আছে বলে ধরে নেওয়া হয়। আর পিপিএম ১৫১-২০০ হলে বাতাসকে অস্বাস্থ্যকর, ২০১-৩০০ হলে খুব অস্বাস্থ্যকর ও ৩০১-৫০০ হলে বিপজ্জনক বলা হয়।


আরও খবর



‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আবারও সরকারপ্রধান করতে মানুষ উন্মুখ হয়ে আছে’

প্রকাশিত:রবিবার ০৫ মার্চ ২০২৩ | হালনাগাদ:শুক্রবার ২৪ মার্চ ২০২৩ | ৪৮জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আবারও সরকারপ্রধান করতে সারা দেশের মানুষ উন্মুখ হয়ে আছে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, সবার জন্য রাজনৈতিক অঙ্গন মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। যে যেভাবে পারছে, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে, আমরা বাঁধা দিচ্ছি না।

আজ শনিবার (৪ মার্চ) দুপুর দেড়টায় যশোর পুলিশ সুপার কার্যালয়ের নবনির্মিত ভবন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন। যশোরের পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি বেনজীর আহমেদ, জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব আমিনুল ইসলাম খান ও খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি মইনুল হক।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের ঐতিহ্যবাহী দল আওয়ামী লীগ বিশ্বাস করেএকটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে আবারও নতুন সরকার নির্বাচিত হবে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ কখনই বিশ্বাস করে না যে তারা ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে, পেশীশক্তির মাধ্যমে, বন্দুকের নলের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসবে। আওয়ামী লীগ সব সময় চিন্তা করেজনগণই তার শক্তি।

মন্ত্রী বলেন, নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আবারও প্রধানমন্ত্রী করতে সারা দেশের মানুষ উন্মুখ হয়ে আছে। কারণ, তারা আর অন্ধকারের দিকে যেতে চায় না। তারা আলোকিত বাংলাদেশ দেখতে চায়। আলোকিত বাংলাদেশের নাগরিক হতে চায়।

মন্ত্রী বলেন, আমরা ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে একটি ভাল, স্বনির্ভর, উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ দিয়ে যেতে চাই।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন যশোর-২ আসনের সংসদ সদস্য মেজর জেনারেল (অব.) ডাক্তার মো. নাসির উদ্দিন, যশোর-৩ আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ, যশোর-৫ আসনের সংসদ সদস্য শাহীন চাকলাদার, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব আব্দুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী, ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল নুরুল আনোয়ার, জেলা প্রশাসক মো. তমিজুল ইসলাম খান ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহীদুল ইসলাম মিলন প্রমুখ।


আরও খবর

বায়ুদূষণে আজ সপ্তম ঢাকা

শনিবার ১৮ মার্চ ২০২৩




টেক্সাসে ছোট বোনের গুলিতে বড় বোনের মৃত্যু

প্রকাশিত:বুধবার ১৫ মার্চ ২০২৩ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৩ মার্চ 20২৩ | ৪৮জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

যুক্তরাষ্ট্রে টেক্সাসের একটি অ্যাপার্টমেন্টে দুর্ঘটনাক্রমে তিন বছর বয়সী ছোট বোনের গুলিতে মৃত্যু হয়েছে তারই চার বছর বয়সী বড় বোনের। হ্যান্ডগান দিয়ে দুর্ঘটনাক্রমে চালানো এই গুলিতে মর্মান্তিক এই ঘটনা ঘটে। যদিও এই ঘটনার সময় ওই দুই শিশুর বাড়িতে তাদের বাবা-মাসহ পাঁচজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের হিউস্টন শহরের কাছে। সোমবার (১৩ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, টেক্সাসের হিউস্টনের কাছে তিন বছর বয়সী এক মেয়ে শিশু দুর্ঘটনাক্রমে তার চার বছর বয়সী বোনকে হ্যান্ডগান দিয়ে গুলি করে হত্যা করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। যদিও ওই ঘটনার সময় তাদের বাড়িতে বাবা-মাসহ পাঁচজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি উপস্থিত ছিল।

হ্যারিস কাউন্টি শেরিফ এড গঞ্জালেস স্থানীয় সময় গত রোববার গভীর রাতে গুলির ঘটনা সম্পর্কে বলেন, তিন বছর বয়সী ওই শিশু গুলি-ভর্তি আধা-স্বয়ংক্রিয় একটি পিস্তল হাতে পেয়েছিল। পরিবারের সদস্যরা হঠাৎ একটি গুলির শব্দ শুনতে পেয়ে বেডরুমে দৌড়ে যান এবং মেঝেতে চার বছর বয়সী মেয়েটিকে পড়ে থাকতে দেখেন।

গঞ্জালেস জোর দিয়ে বলেন, ছোট ওই শিশুটি অনিচ্ছাকৃতভাবে গুলি চালিয়েছিল বলে মনে হয়েছে। তিনি এটিকে দুঃখজনক ঘটনা বলেও উল্লেখ করেন।

পিউ রিসার্চ সেন্টারের মতে, প্রায় ৪০ শতাংশ মার্কিন পরিবারের কাছে বন্দুক রয়েছে এবং এগুলোর বেশিরভাগই এমন পরিবার যেখানে শিশুরাও রয়েছে।

তবে জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটির স্কুল অব পাবলিক হেলথর তথ্য অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্রে যত পরিবারের বন্দুক রয়েছে তার অর্ধেকেরও কম পরিবার সেগুলো নিরাপদে সংরক্ষণ করে থাকে।

এএফপি বলছে, যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে গত বছর ৪৪ হাজারেরও বেশি মানুষের আগ্নেয়াস্ত্রের আঘাতে মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।


আরও খবর

ট্রাম্প বললেন, ‘আই এম ব্যাক’

শনিবার ১৮ মার্চ ২০২৩




নির্বাচনে বিএনপিসহ সব দলের অংশগ্রহণ চায় আ.লীগ : তথ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত:সোমবার ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৩ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৩ মার্চ 20২৩ | ১১৭জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

তথ্যমন্ত্রী ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের বলেছেন, আমরা চাই বিএনপিসহ সমস্ত রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নিক এবং জনগণ উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে ভোট দিয়ে সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে আগামীর সরকার নির্বাচিত করুক। সরকারের পক্ষ থেকে যদি কোনো সহযোগিতার প্রয়োজন থাকে সেটি অবশ্যই আমরা করব।

আজ রোববার (২৬ ফেব্রুয়ারি) ঢাকায় মন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে ইলেকশন মনিটরিং ফোরামের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের তথ্যমন্ত্রী এ কথা জানান। আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, ইলেকশন মনিটরিং ফোরামের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোহাম্মদ আবেদ আলী, জার্মানির সমাজকর্মী ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক  ভলকার ইউ ফ্রেডরিচ, ভুটানের গ্লোবাল ভিলেজ কানেকশনের চেয়ারম্যান জ্যাকসন দুকপা, ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য ও ফোরামের পরিচালক অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ, বুয়েটের উপউপাচার্য ও ফোরামের পরিচালক অধ্যাপক ড. আব্দুল জব্বার খান ও কৃষিবিদ ড. আজাদুল হক বৈঠকে অংশ নেন।

ড. হাছান বলেন, ইলেকশন মনিটরিং ফোরাম প্রতিনিধিরা আমার সঙ্গে বৈঠকের জন্য এসেছিলেন। আপনারা জানেন যে, নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য ১০৮টি সংগঠন নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত। তার মধ্যে ৫১টি সংগঠনের মোর্চা হচ্ছে ইলেকশন মনিটরিং ফোরাম। তারা আমার সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। তারাও বলেছেন, তারা চান আগামী নির্বাচনে বিএনপিসহ সমস্ত রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ, যেখানে জনগণ উৎসাহ নিয়ে আগামী দিনের সরকার নির্বাচিত করবে। এই ফোরাম গত নির্বাচনও মনিটর করেছে, আগামী নির্বাচনেও তারা ইলেকশন মনিটরিং দল পাঠাবে, নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবে।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা তাদেরকে জানিয়েছি, সমস্ত সংসদীয় গণতন্ত্রের দেশে যেভাবে নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, আমাদের দেশেও ঠিক সেভাবেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং ভারত, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, যুক্তরাজ্য, জার্মানি এবং কন্টিনেন্টাল ইউরোপের অন্যান্য দেশে যেভাবে চলতি সরকার নির্বাচনকালীন সরকারের দায়িত্ব পালন করে আমাদের দেশেও বর্তমান সরকার নির্বাচনকালীন সরকারের দায়িত্ব পালন করবে এবং নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে নির্বাচন কমিশনের অধীনে।

ইলেকশন মনিটরিং ফোরামের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোহাম্মদ আবেদ আলী সাংবাদিকদের বলেন, আগামী নির্বাচন পর্যবেক্ষণে জার্মান, নেপাল, ভুটানসহ কয়েকটি দেশের প্রতিনিধিরা এখানে এসেছেন। গতকাল আমরা জাতীয় পার্টি, জাসদ এবং ইসলামী ফ্রন্টের সঙ্গে আলোচনা করেছিলাম, তারই ধারাবাহিকতায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে আমরা আগামী নির্বাচন বিষয়ে আলোচনা করেছি। আমরা চাই, আগামী জাতীয় নির্বাচন আন্তর্জাতিক মানের হবে, গ্রহণযোগ্য হবে এবং পর্যাপ্ত বিদেশি পর্যবেক্ষক দল যাতে পর্যবেক্ষণ করতে পারে, সেই পরামর্শ চেয়েছি। আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিদেশি পর্যবেক্ষকদের ভিসা, যাতায়াতের বিষয়ে যাতে বেগ পেতে না হয়, সেজন্য আমরা সরকারের সহায়তা চেয়েছি।


আরও খবর