আসামির নাম, বাবার
নাম ও ঠিকানার সঙ্গে মিল থাকায় অপরাধী না হয়েও প্রায় ১১ ঘণ্টা হাজতবাস করতে হয়েছে আবদুর
রাজ্জাক সরদার (৫৩) নামে এক ব্যক্তিকে। পরে প্রকৃত আসামিকে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান
ধরিয়ে দিলে মুক্তি মেলে তার। নিরপরাধ রাজ্জাক সরদার পেশায় রাজমিস্ত্রি। তিনি বাগমারা
উপজেলার যোগিপাড়া ইউনিয়নের বাজেকোলা গ্রামের গরিবুল্যাহ সরদারের ছেলে। গত বৃহস্পতিবার
(২ জুন) গভীর রাতে ঘুম থেকে জাগিয়ে তাকে ধরে নিয়ে যায় বাগমারা থানার পুলিশ।
বাগমারা গনিপুর
ইউপির চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান বলেন, ২০২০ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি গনিপুর ইউনিয়নের বাজেকোলা
গ্রামের রিনা নামের এক নারী মামলাটি করেন। মামলায় রিনার সাবেক স্বামী আবদুর রাজ্জাককে
আসামি করা হয়েছে। ওই রাজ্জাকের বাবার নামও গরিবুল্যাহ। তার বাড়িও বাজেকোলা গ্রামে।
কাকতালীয়ভাবে তাদের নাম ও ঠিকানা মিলে যায়। তবে মামলায় ইউনিয়নের নামটি উল্লেখ ছিল না।
এ কারণে নিরপরাধ আব্দুর রাজ্জাক সরদারকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায় ভাগনদী পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের
পুলিশ।
নাম, বাবার নাম
ও ঠিকানার মিল থাকার ভুক্তভোগী আব্দুর রাজ্জাক সরদার বলেন, তথ্য ঠিকভাবে যাচাই-বাছাই
না করেই আমাকে ১১ ঘণ্টা হাজতবাস করতে হয়েছে। পুলিশ যদি আসল আসামির খোঁজ না পেত, তবে
হয়তো আমাকে আজীবন কারাবাসেই কাটাতে হতো। এর দায় কে নিত?
এ বিষয়ে গনিপুর
ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান বলেন, এ ঘটনার পর নিরপরাধ আব্দুর রাজ্জাক সরদারের স্ত্রী
ও তার ছোট ভাই রেজাউল করিম আমার কাছে এসেছিলেন। তারা বিষয়টি আমাকে জানালে আমি বাগমারা
থানা পুলিশকে বিষয়টি জানায় এবং সঠিক তদন্তের বিষয়ে বলি। প্রকৃত আসামির বিরুদ্ধে দায়ের
করা মামলার আগে আমার কাছেই বিচার বসেছিল। ঘটনাটি পুলিশকে জানানো হয়। পরে তারাও কাগজপত্র
দেখে আসল আসামি শনাক্ত করে এবং তাকে গ্রেফতার করে।
এ বিষয়ে ভাগনদী
পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের উপ-পরিদর্শক আবুল কালাম বলেন, একই নাম, বাবার নাম এমনকি ঠিকানাও
একই হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই এই ভুলটি আমার দ্বারা হয়ে গিয়েছিল। তবে পরে বিভিন্ন মারফত
জানতে পারায় ভুল সংশোধন করে প্রকৃত আসামিকে ধরা হয়েছে এবং নিরপরাধ ব্যক্তিকে মুক্ত
করা হয়েছে।
এ ঘটনার বিষয়ে
বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মো. তৌহিদুর রহমান বলেন, সবকিছু মিল থাকায়
এমন ঘটনা ঘটেছে। তবে নিরপরাধ ব্যক্তির স্বজন, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানসহ অনেকে বিষয়টি
জানানোর পর আসামি সম্পর্কে সিডিএমএস চেক করা হয়। এরপর প্রকৃত আসামিকে ওই এলাকার গ্রাম
পুলিশের মাধ্যমে গ্রেফতার করা হয়।