পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে লালমনিরহাটের পঞ্চগ্রাম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক ইউপি সদস্য আজিজুর রহমান মন্ডলের ছেলে সাহেব মন্ডলের (৩৮) নেতৃত্বে চার সাংবাদিকের ওপর হামলা হয়েছে।
শুক্রবার (১২ আগস্ট) বিকেলে জেলার সদরের পঞ্চগ্রাম ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে।
এ সময় যমুনা টেলিভিশনের সাংবাদিকের ক্যামেরা, মোবাইল ফোন, ট্রাইপড ও হেলমেট ছিনতাই করা হয়।
আহতরা হলেন যমুনা টিভির সাংবাদিক আনিছুর রহমান, প্রথম আলোর সাংবাদিক আবদুর রব, এখন টেলিভিশনের সাংবাদিক মাহফুজুল ইসলাম বকুল ও যমুনা টিভির ক্যামেরা পারসন আহসান সাকিব। তারা লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
জানা গেছে, লালমনিরহাট সদর উপজেলার পঞ্চগ্রাম ইউনিয়নের একটি গ্রামের এক গৃহবধূকে পঞ্চগ্রাম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আজিজুর রহমান মন্ডলের ছেলে সাহেব মন্ডল ও স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের নৈশপ্রহরী এবং ২ নম্বর ওয়ার্ডের যুবলীগের সভাপতি সুলতান হোসেন মন্ডল গত ৭ আগস্ট রাতে তুলে নিয়ে গেছেন মর্মে অভিযোগ ওঠে। ওই গৃহবধূর স্বামী এ ঘটনায় লালমনিরহাট সদর থানায় ৯ আগস্ট একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। এ বিষয়ে সংবাদ সংগ্রহে গেলে সাংবাদিকদের ওপর হামলা হয়।
আহত সাংবাদিকরা জানান, গৃহবধূকে অপহরণের অভিযোগ বিষয়ে তথ্য জানতে পঞ্চগ্রাম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক ইউপি সদস্য আজিজুর রহমান মন্ডলের সাকোরপাড় দিনাদুলি গ্রামের বাড়ি যাই। সেখান থেকে ফেরার পথে হামলার ঘটনা ঘটে।
তারা জানান, গৃহবধূকে অপহরণের বিষয়ে অভিযুক্তের বাবা জানিয়েছেন, তারা বিয়ে করেছেন। তিনি বলেছেন, সামর্থ্য থাকলে একাধিক বিয়ে করা যায়।
সাংবাদিকরা বলেন, আজিজুর রহমান মন্ডলের বাড়ি থেকে ফিরে আসার সময় তার ছেলে সাহেব মন্ডলের নেতৃত্বে ২০/২৫ জনের একদল সন্ত্রাসী আমাদের ওপর অতর্কিতে হামলা চালায়। এ সময় ক্যামেরা ও ট্রাইপড কেড়ে নিয়ে মারধর করা হয়। এতে যমুনা টিভির সাংবাদিকের কপাল ফেটে গিয়ে রক্ত ঝরতে থাকে। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় তাদের লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
লালমনিরহাট পুলিশ সুপার আবিদা সুলতানা বলেন, বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখে দোষীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
লালমনিরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মতিয়ার রহমান লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে গিয়ে আহত সাংবাদিকদের খোঁজ খবর নেন। এ সময় তিনি বলেন, দায়ীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ঘটনা শোনার পর বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক উপমন্ত্রী অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু হাসপাতালে গিয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, সাংবাদিকের ওপর এমন ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি দাবি করেন তিনি।