দুই অক্ষরের এই শব্দটার মাঝে যেন জড়িয়ে
আছে আব্দার, আহ্লাদ আর ভালোবাসা। মায়ের বকুনি খেয়ে সারাদিন অপেক্ষা করে নালিশ করার
সবচেয়ে আস্থাভাজন জায়গার নামই যেন ‘বাবা’।
সন্তানের কাছে বাবা হচ্ছেন প্রথম ‘সুপার হিরো’। বাবাকে অনুসরণ
করেই শুরু হয় পথ চলা। তারপর এক পর্যায়ে বাবার আদর্শ আর স্বপ্ন পূরণের অঙ্গীকার নিয়ে
এগিয়ে চলে সন্তান।
বাবা দিবসকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ
মাধ্যমগুলোতে ছবি ও স্ট্যাটাস দিয়ে, নানা রকমের
গিফট দিয়ে কেউবা বাসায় কেক কেটে ইত্যাদি নানাভাবে দিনটা পালন করে থাকেন।
প্রতিটা সন্তানের বড় হওয়ার পেছনে রয়েছে
বাবার না বলা পরিশ্রম ও ধৈর্য্যের গল্প। কিন্তু, অধিকাংশ ক্ষেত্রে বাবা বেশিরভাগ সময়
ঘরের বাইরে থাকায় সন্তানের সঙ্গে সময় কম কাটানো হয়।
ফলে বাবা ও সন্তানের মাঝে ভাব আদান প্রদান
কম হয়। অনেকেই মুখ ফুটে মনের কথা বলতে পারেন না। অনেকে আবার এর ব্যতিক্রম হন। প্রকাশ
যেমনটাই হোক না কেনো, বাপ-সন্তানের সম্পর্ক খুব সুন্দর ও গভীর।
বাবা দিবসকে কেন্দ্র করে অনেকেই অনেক রকম
পরিকল্পনা করেছেন। কয়েকজন তাদের পরিকল্পনা জানিয়েছেন। আমাদের দেশে অনেক সন্তানই বাবার
সঙ্গে খুব একটা মিশুকে নয় কিন্তু মনের মাঝে প্রবল ভালোবাসা ধারন করে তারাও।
এ.এম অমিতাভ (২৮) এমনই একজন। তিনি বলেন,
“আমি পরিবারের
বড় সন্তান। আমি বাবাকে অনেক ভালোবাসি, তিনিও আমাকে অনেক আদর করতেন। কিন্তু বাবার সঙ্গে
সব কথা শেয়ার করা হতো খুব কম। উনাকে সম্মান করার পাশাপাশি ভয়ও পেতাম। মুখ ফোটে কখনও
বলা হয় নি ‘ভালোবাসি বাবা।”
নবম শ্রেণির ছাত্র যোসেফ কস্তা (১৪) বাবা
দিবস নিয়ে তার পরিকল্পনা সম্পর্কে বলেন, “পাপার সঙ্গে আমি
একটু কম কথা বলি, কিন্তু অনেক ভালোবাসি। পাপাও আমাকে অনেক ভালোবাসে। আমার কখনও কিছু
লাগলে পাপা সঙ্গে সঙ্গেই তার ব্যবস্থা করে ফেলেন। কয়েকদিন আগে আমি অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে
ছিলাম। পাপা সারা রাত সেখানে থাকতো। আর সকালে অফিসে যেত। পাপাকে দেখে তখন আমারও খারাপ
লাগতো।”
“এবার ‘বাবা দিবসে’ আমি পাপার জন্য
অনলাইন থেকে গিফট এনেছি আর একটা কেক কাটার চিন্তা করেছি, আশা করি পাপা অনেক খুশি হবে।”
বাবার সঙ্গে মেয়ের সম্পর্কটা বরাবরই মিষ্টি।
‘বাবা দিবসে’ উপহার নির্বাচনের ক্ষেত্রে বাবার পছন্দ ও প্রয়োজন মাথায় কেনাকাটা করা বুদ্ধিমানের কাজ হবে। জীবনযাপন-বিষয়ক বিভিন্ন ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে এই সম্পর্কে নানা ধারণা পাওয়া যায়।
বাবা যদি স্বাস্থ্য সচেতন হয়ে থাকেন তাহলে তাঁর জন্য ‘ফিটনেস’ সম্পকিত নানান গ্যাজেট যেমন- মি ব্যান্ড, অ্যালার্ম ঘড়ি, ওজন মাপার মেশিন অথবা হাঁটার জুতা হতে পারে ভালো উপহার। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস দিতে চাইলে- নকশা করা মগ, মানিব্যাগ, বেল্ট, স্যান্ডেল, ঘড়ি, অথবা কলম হবে আদর্শ উপহার।
বাবা যদি অবসরে বই পড়তে ভালোবাসেন তাহলে তার পছন্দের লেখকের কোনো বই ও সুন্দর একটা নোট বুক বাছাই করা যেতে পারে। এছাড়াও বুক মার্কার, পেনহোল্ডার ইত্যাদির কথাও মাথায় রাখা যায়। পেনড্রাইভ, ট্রাইপড, ব্লুটুথ মোবাইল কাভার, চাবির রিং ইত্যাদি গেজেট হিসেবে বাবাকে উপহার দেওয়া যেতে পারে।
এছাড়াও, নিজের পছন্দ মতো যে কোনো উপহার
যেমন- কাঁধ বালিশ, ছবির ফ্রেম, ল্যাম্প শেইড, লাইট সেট ইত্যাদি উপহার বাছাই করা যেতে
পারে।
বর্তমানে মার্কেটের পাশাপাশি অনলাইনের নানান পেইজেও এইসকল সামগ্রী পাওয়া যায়। তাই কোভিড-১৯ য়ের সময়ে মার্কেটে না গিয়েও বাবার জন্য পছন্দের উপহার ঘরে বসেই নিয়ে আসা সম্ভব। উপহার দেওয়া ভালোবাসা প্রকাশের মাধ্যম কেবল। তাছাড়া সন্তান যে উপহারই দিক না কেনো তা বাবার কাছে আদরণীয়।
তাই দিবসকে আরও আনন্দঘন করে তুলতে ছোট একটা উপহার দেওয়া ও দিনটা স্মরণীয় করে রাখাই আসল।