রাজধানীর শাজাহানপুরের গুলবাগে বান্ধবীকে
ভিডিওকল দিয়ে রুবিনা ইয়াসমিন ওরফে নদী (২১) নামের এক তরুণী গলায় ফাঁস লাগিয়ে ‘আত্মহত্যা’ করেছেন বলে জানিয়েছেন
স্বজনরা। তিনি একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন। বুধবার বাসা থেকে তার
লাশ উদ্ধার করা হয়। তার লাশের ময়নাতদন্ত চলছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
পুলিশ ও স্বজনসূত্রে জানা যায়, রুবিনা
মালিবাগের গুলবাগের একটি বাড়ির পঞ্চম তলায় বান্ধবী মারিয়ামকে নিয়ে সাবলেট থাকতেন। তারা
পড়াশোনার পাশাপাশি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। এক ভাই ও এক বোনের মধ্যে
রুবিনা বড়। তার বাবা বরিশালের আগৈলঝাড়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই)। তাদের গ্রামের বাড়ি
বরগুনা জেলার বেতাগীতে।
রুবিনার বান্ধবী মারিয়াম জানান, বুধবার
রুবিনাকে বাসায় রেখে তিনি কাজে চলে যান। বেলা ৩টার দিকে তাকে ফোন করে রুবিনা বলেন,
আমার ভালো লাগছে না, তুই দ্রুত চলে আয়, আমি মরে যাব।
পরে রুবিনা ভিডিওকল দিয়ে ফ্যানের সঙ্গে
ওড়না পেঁচাচ্ছেন দেখান। তিনি দ্রুত বাসায় গিয়ে ভেতর থেকে দরজা লাগানো পান। ডাকাডাকি
করলেও কোনো শব্দ পাননি।
প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় ছিটকিনি ভেঙে সিলিংফ্যান
থেকে ঝুলন্ত রুবিনাকে নামিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান মারিয়াম। চিকিৎসক
রুবিনাকে মৃত ঘোষণা করেন।
তার মৃত্যুর কারণ নিয়ে জল্পনা-কল্পনার
সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে শাহজাহানপুর থানার ওসি শহিদুল হক বৃহস্পতিবার যুগান্তরকে
বলেন, রুবিনা একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে পড়াশোনা করতেন। দুবছর আগে এক
সহপাঠীর সঙ্গে তার বিয়ে হয়। কিন্তু বিয়ের তিন মাসের মাথায় তাদের বিচ্ছেদ হয়ে যায়। এর
পর থেকে রুবিনা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন।
ওসি জানান, বিচ্ছেদের পর থেকে রুবিনা তার
পরিবারের কাছ থেকেও বিচ্ছিন্ন ছিলেন। একাকিত্ব ও ছাড়াছাড়ির যাতনা থেকেই রুবিনা আত্মহত্যা
করে থাকতে পারেন।
তিনি বলেন, এ ঘটনায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।
প্রাথমিকভাবে ঘটনাটি আত্মহত্যা বলে মনে হচ্ছে। ময়নাতদন্তের পর লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর
করা হবে।
রুবিনার বান্ধবী মারিয়ম মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে বলেন, দুই বছর আগে সাইমুন নামের এক যুবকের সঙ্গে রুবিনার বিয়ে হয়। বেশ কিছু দিন যাওয়ার পর তাদের বিচ্ছেদ হয়। এ নিয়ে সে বিষণ্নতায় ভুগছিল। প্রায় সময় সে বলত ‘আমি জীবন রাখব না, পরপারে চলে যাব।