ঢাকা থেকে টাঙ্গাইল যেতে চাঁপাইনবাবগঞ্জগামী একটি বাসে উঠার পর যাত্রীদেরকে বেঁধে নির্যাতন ও লুটের ঘটনায় সস্পৃক্তদেরকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ।
রোববার রাতে ডিএমপির উপ কমিশনার (মিডিয়া) ফারুক হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, গত ২০ জানুয়ারি গভীর রাতে রাজধানীর আব্দুল্লাহপুর থেকে দূরপাল্লার বাসে ওঠার পর ডাকাতদলের কবলে পড়েন একজন চিকিৎসক। এ ঘটনায় জড়িত ডাকাতদের গ্রেপ্তারের পাশাপাশি আরও একটি ডাকাতদলের হোতাসহ পুরো ডাকাতচক্রকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য না দিয়ে ফারুক হোসেন জানান, সোমবার ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এ নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করবেন বিস্তারিত জানাবেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) এ কে এম হাফিজ আক্তার।
ডাকাত দলের নির্যাতনের শিকার টাঙ্গাইল সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম ফেসবুকে তার অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। পরে সেটি ভাইরাল হয়ে যায়।
তিনি জানান, ঢাকায় কাজ শেষে আবদুল্লাহপুর ফিরতে রাত ১২টা বেজে যায়। কিন্তু টাঙ্গাইল রুটের বাস চলে রাত ১০টা পর্যন্ত। সেখানে তিনি ও তার এক বন্ধু উঠেন চাঁপাইনবাবগঞ্জগামী একটি বাসে। কামারপাড়া পার হওয়ার পর বেশ নির্জন একটা জায়গায় গিয়ে তাঁদের ওপর সাত থেকে আটজন ঝাঁপিয়ে পড়ে। একজন গলায়, আরেকজন পেটে ছুরি ধরে তাঁদের। তাঁর বন্ধুকে বাসের পেছনের দিকে নিয়ে যায়। অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ, চড়থাপ্পড় চলে।
চিকিৎসক শফিকুল জানান, ডাকাতরা তার তিনটি মোবাইল ফোন, দুটি মানিব্যাগ, দুটি এটিএম কার্ড, বিকাশ ও কার্ডের পিন নম্বর নেয়। তাকে দিয়েই ডাকাত দল বিকাশ থেকে টাকা নিয়ে নেয়। সব কিছু দিয়ে দেয়ার পরেও চলে নির্যাতন। এক পর্যায়ে বাসটি থেমে যায়। একজন এসে তার চোখ ও হাত-পায়ের বাঁধন খুলে দেয়। তিনি নিজেকে বাসচালকের সহকারী বলে পরিচয় দেন।
সেই সহকারী জানান, তিনি নিজে, বাসচালকও ভুক্তভোগী। ডাকাত দলের লোকজন যাত্রী সেজে তাঁদের বাসে উঠে সেটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছিল। শফিকুল চাঁপাইনবাবগঞ্জগামী বাসে উঠলেও তাদেরকে নামিয়ে দেয়া হয়েছিল চিটাগং রোডের একটি জায়গায়।
পরে মামলা করতে গিয়ে হয়রানিতে পড়েন এই চিকিৎসক। তিনি যাত্রাবাড়ী থানায় গেলে পুলিশ বলে, যেহেতু আবদুল্লাহপুর থেকে বাসে উঠেছিলেন, তাই অভিযোগ দিতে হবে সেখানে।
এ কথা শুনে তিনি উত্তরা পশ্চিম থানায় যান। সেখান থেকে বলা হয়, যেখানে নেমেছেন অভিযোগ সেখানে দিতে হবে।