বিশ্বের প্রায় ৩০টি দেশে ছড়িয়ে পড়া মাঙ্কিপক্স ভাইরাসের নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। ভাইরাসের এই প্রজাতির ‘বৈষম্যমূলক’ নামের প্রকৃতি সম্পর্কে আন্তর্জাতিক একদল বিজ্ঞানীর উদ্বেগের পর ডব্লিউএইচও এমন পদক্ষেপ নিয়েছে। বৈশ্বিক এই স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, এখন পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে এক হাজার ৬০০ জনের বেশি মানুষের শরীরে ভাইরাসটি শনাক্ত হয়েছে। এছাড়া আরও দেড় হাজারের বেশি মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
ডব্লিউএইচওর মহাপরিচালক টেড্রোস আধানম গেব্রেইয়েসুস বলেছেন, মাঙ্কিপক্স ভাইরাসের নাম পরিবর্তনের বিষয়ে বিশ্বজুড়ে অংশীদার এবং বিশেষজ্ঞদের সাথে কাজ করছে ডব্লিউএইচও। তিনি বলেন, শিগগিরই এই ভাইরাসের পরিবর্তিত নতুন নামের বিষয়ে ঘোষণা দেবে ডব্লিউএইচও।
‘মাঙ্কিপক্স ভাইরাসের বৈষম্যহীন এবং কলঙ্কমুক্ত নামকরণ জরুরি’ শিরোনামে গত ১০ জুন একটি নথি প্রকাশ করা হয়। অন্তত ৩০ জন আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানী ভাইরাসটির নাম পরিবর্তনের অনুরোধ জানিয়ে ওই নথি উপস্থাপন করেছিলেন। এই বিজ্ঞানীদের এক মুখপাত্র বলেছেন, ভাইরাসটির বর্তমান ডব্লিউএইচওর নীতিমালার সাথে সাংঘর্ষিক। কারণ ডব্লিউএইচওর নীতিমালায় ভাইরাসের নামকরণ কোনও অঞ্চল অথবা প্রাণীর নামে না করার সুপারিশ রয়েছে।
ডব্লিউএইচওর একজন মুখপাত্রের মতে, মাঙ্কিপক্স ভাইরাসটি অর্থোপক্সভাইরাস পরিবারের সদস্য। অর্থোপক্সভাইরাসের বিজ্ঞানীরা মাঙ্কিপক্স ভাইরাসের যথাযথ নামকরণের বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন। ডব্লিউএইচও, বিশ্ব প্রাণী স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউওএএইচ) এবং জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) যৌথ সুপারিশ অনুযায়ী, মাঙ্কিপক্স ছাড়াও অন্য আরও একটি রোগের নাম ডব্লিউএইচওর নীতিমালার বিরোধী। আর সেটি হল সোয়াইন ফ্লু।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গের ই-মেইলের জবাবে ডব্লিউএইচওর একজন প্রতিনিধি বলেছেন, যেকোনও রোগের নামকরণ নেতিবাচক প্রভাব কমিয়ে ফেলার লক্ষ্যে করা উচিত। যাতে নামকরণের মাধ্যমে কোনও সাংস্কৃতিক, সামাজিক, জাতীয়, আঞ্চলিক, পেশাগত অথবা জাতিগত গোষ্ঠীকে আঘাত না করা হয়। ব্লুমবার্গ বলছে, ডব্লিউএইচও অর্থোপক্সভাইরাস বিশেষজ্ঞদের সাথে বিষয়টি নিয়ে বৈঠকে বসবে। সেই বৈঠকে ভাইরাসটির বর্তমান পরিবর্তন করে নতুন নামের ঘোষণা আসতে পারে।