গিয়াস উদ্দিন সেলিম পরিচালিত বহুল প্রতিক্ষীত সিনেমা পাপ পুণ্য ২০ মে মুক্তি পেতে চলেছে। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের নতুন এক ইতিহাস গড়তে চলেছে এ সিনেমা। পাপ পুণ্য বাংলাদেশের প্রথম সিনেমা, যেটি প্রথমবারের মতো দেশের বাইরের শতাধিক প্রেক্ষাগৃহে একযোগে মুক্তি পেতে যাচ্ছে। একই দিনে বাংলাদেশের পাশাপাশি উত্তর আমেরিকার ১১২টি প্রেক্ষাগৃহে আসতে যাচ্ছে সিনেমাটি। এরই মধ্য আন্তর্জাতিক পরিবেশক সংস্থা স্বপ্ন স্কেয়ারক্রো প্রকাশ করেছে পাপ পুণ্যের থিয়েটার লিস্ট। কানাডার পাঁচটি প্রভিন্সের আটটি শহর এবং আমেরিকার ২৫টি স্টেটের শতাধিক শহরের দর্শক উপভোগ করতে পারবেন পাপ পুণ্য।
পাপ পুণ্যে অভিনয় করেছেন চঞ্চল চৌধুরী, আফসানা মিমি, সিয়াম আহমেদ, শাহনাজ সুমিসহ আরো অনেকে। সিনেমাটির মধ্য দিয়ে মনপুরার এক যুগ পর একই সঙ্গে কাজ করেছেন গিয়াস উদ্দিন সেলিম ও চঞ্চল চৌধুরী। মনপুরা, স্বপ্নজাল, গুনিনের পর পাপ পূণ্য গিয়াস উদ্দিন সেলিমের চতুর্থ ছবি। জনপ্রিয় এ পরিচালক বলেন, ‘সিনেমাটি বিশ্বব্যাপী মুক্তি পাচ্ছে, পরিচালক হিসেবে এটা আমার জন্য অনেক আনন্দের। এটা মূল ধারার সিনেমা, সব শ্রেণীর মানুষের জন্য। এটি কোনো কমিউনিটি শো না। চলচ্চিত্রের এই দুর্দিনে এমন ছবির দরকার যা পাপ পুন্যের মত। আগের ছবিগুলোর চেয়ে এটি সম্পূর্ণ ভিন্নভাবে বানানো হয়েছে।’ দীর্ঘদিন পর চঞ্চল চৌধুরীর সঙ্গে কাজ করছেন এ পরিচালক। এ নিয়ে তিনি বলেন, পাপ পুণ্যে একজন পরিণত বয়সী মানুষের চরিত্রে চঞ্চল অভিনয় করেছে। চঞ্চল সবসময় ভালো কাজ করে। পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে চঞ্চল সেটে আসে। মনপুরা সিনেমা থেকে পাপ পুণ্যতেও সে নিজের গতিতেই রয়েছে। আমার ধারণা, পাপ পুণ্যে তার অভিনয় দর্শক খুব পছন্দ করবেন
সিয়াম আহমেদ বলেন, ‘পাপ পুণ্য সিনেমাটি আমাদের কাছে স্পেশাল হওয়ার বেশকিছু কারণ রয়েছে। সবচেয়ে বড় কারণ এর গল্প। দর্শক হলে না গেলে এ গল্প জানতে পারবেন না। যে ধরনের গল্প আমাদের দর্শক পরিবার নিয়ে দেখতে চান গল্পটা সে রকম। নারী দর্শকদের এ গল্প খুব ভালো লাগবে বলে আশা করি। আমি বারবার বলি, নারী দর্শককে হলে ফিরিয়ে আনতে হবে। সব বয়সের সব ধরনের দর্শকের জন্য সিনেমাটি।
গিয়াস উদ্দিন সেলিম ও চঞ্চল চৌধুরী মনপুরার পর আবার একসঙ্গে সিনেমায় কাজ করলেন। একজন দর্শক হিসেবে সিনেমাটি নিয়ে আমারো প্রত্যাশা অনেক। পাপ পুণ্য সিনেমাটিতে দর্শক টানার মতো অনেক কিছু রয়েছে, যেটা দেখতে হলে দর্শককে হলে আসতে হবে। আমার মনে হয়, গান থেকে শুরু করে পাপ পুণ্যর সবকিছু এমনভাবে করা হয়েছে যে সিনেমা হলে মানুষ যখন গল্পের মধ্যে একবার ঢুকে যাবে তারা একবারে গল্পটা শেষ করেই বের হবে।’
স্বপ্ন স্কেয়ারক্রোর প্রেসিডেন্ট মো. অলিউল্লাহ সজীব সিনেমাটি নিয়ে নিজের ফেসবুক পেজে অনেক আশা ব্যক্ত করেছেন। তিনি লিখেছেন, “বিপ্লবটা ঘটেই গেল!!! একযোগে ১০০ র বেশি বিদেশী হলে মুক্তির মাইলফলক ছুঁয়েই ফেলল বাংলাদেশের সিনেমা! ‘পাপ পুণ্য’র থিয়েটার লিস্টটা যখন তৈরি করা হচ্ছিল, আমি নিজেই বারবার দেখছিলাম। সবকিছু নিজের হাত দিয়ে হবার পরও বিশ্বাস হতে চাচ্ছিল না, আমাদের সিনেমার থিয়েটার লিস্টে ১১২টি নর্থ আমেরিকান মাল্টিপ্লেক্সের নাম! আগেরবার টাইমস স্কয়ারের ফ্ল্যাগশিপ রিগ্যাল থিয়েটারে বাংলদেশের সিনেমা মুক্তি দিতে পেরে যে ভালো লাগা ছিল, এবারের ভালো লাগা সে তুলনায় সীমা-পরিসীমা ছাড়িয়ে গেছে। এবার টাইমস স্কয়ারের ফ্ল্যাগশিপ এএমসি এম্পায়ারে ২৫ তো আছেই, সাথে ইউনিয়ন স্কয়ার, হলিউড, ডিজনি ওয়ার্ল্ড, মিয়ামি বিচ, লাস ভেগাসসহ আমেরিকা তথা পৃথিবীর এমন কোনো উল্লেখযোগ্য জায়গা নেই যেখানে ‘পাপ পুণ্য’ মুক্তি পাচ্ছে না। বাংলাদেশের সিনেমা তাড়াতাড়িই একযোগে ৫০০/১০০০ বিদেশী থিয়েটারে নিয়মিত মুক্তি পাবে।
স্বপ্ন স্কেয়ারক্রো থেকে জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের এএমসি, রিগ্যাল, সিনেমার্ক, হারকিন্স, শোকেইস চেইনে ২৫টি স্টেটের ১০৪টি মাল্টিপ্লেক্সে মুক্তি পাচ্ছে পাপ পুণ্য। স্টেটগুলোর মধ্য রয়েছে নিউইয়র্ক, নিউ জার্সি, পেনসিলভানিয়া, মেরিল্যান্ড, ভার্জিনিয়া, মিশিগান, কানেক্টিকাট, ম্যাসাচুসেটস, টেক্সাস, ক্যালিফোর্নিয়া, ফ্লোরিডা, জর্জিয়া, অ্যারিজোনা, নেভাডা, ইউটাহ, ওহাইও, ইলিনয়, ইন্ডিয়ানা, কানসাস, কলোরাডো, ওকলাহোমা, টেনেসি, লুইজিয়ানা, অরিগন ও ওয়াশিংটন। এছাড়া কানাডায় সিনেপ্লেক্স এন্টারটেইনমেন্টের চেইনে পাঁচটি প্রভিন্স অন্টারিও, ম্যানিটোবা, অ্যালবার্টা, ব্রিটিশ কলাম্বীয় এবং নোভাস্কোশিয়ার আটটি শহরের আটটি প্রেক্ষাগৃহে একযোগে মুক্তি পাবে আসন্ন সিনেমাটি।
প্রতিষ্ঠানটির অফিশিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে জানা যায়, উত্তর আমেরিকায় পাপ পুণ্য সিনেমার ১১২ প্রেক্ষাগৃহের তালিকা। প্রথম সপ্তাহের শো টিকিট ও সময় জানা যাবে ১৮ মে থেকে থিয়েটারগুলোর ওয়েবসাইট ও কাউন্টারে।