কোভিড-১৯ বিধিনিষেধ শিথিল করায় আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে আগ্রহ বেড়েছে জাপানি ভ্রমণকারীদের। গত ২৪ আগস্ট বিধিনিষেধ শিথিলের বিষয়ে ঘোষণার পর দেশটির অভ্যন্তরীণ এবং বৈদেশিক ফ্লাইটের নতুন বুকিং সংখ্যাও দ্বিগুণ বেড়ে গিয়েছে। এ বৃদ্ধির সংখ্যা বিশেষ করে আগস্টের মাঝামাঝি সময়ের তুলনায় চলতি সপ্তাহে ২ দশমিক ৭ গুণ বেশি।
নিক্কেই এশিয়া প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, জাপান সরকারের কোভিড-১৯ বিধিনিষেধ শিথিলে অল নিপ্পন এয়ারলাইনস (এএনএ) ও জাপান এয়ারলাইনসের (জেএএল) বুকিং রিজার্ভেশন দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে। বিধিনিষেধের বিষয়ে সরকারের ঘোষণার পর আগামী অক্টোবরের আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের নতুন বুকিংও দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
মহামারীর কারণে জাপান সরকার এত দিন দেশটিতে দৈনিক ভ্রমণকারীর সংখ্যা ২০ হাজারে সীমাবদ্ধ রেখেছিল। গত বুধবার এ সংখ্যা বাড়িয়ে ৫০ হাজার করা হয়েছে। পাশাপাশি ভ্রমণকারীদের বিভিন্ন কোভিড পরীক্ষার প্রয়োজনীয়তাও বাতিল করা হয়েছে। এমনকি ব্যবসায়ের প্রয়োজনে বৈদেশিক ভ্রমণেও বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়েছে। এসব কারণে দেশটির অভ্যন্তরীণ এবং বৈদেশিক ফ্লাইটে ভ্রমণকারীদের আগ্রহ বেড়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। পাশাপাশি দেশটি থেকে ছেড়ে যাওয়া ফ্লাইটের সংখ্যাও বেড়েছে। আগস্টের মাঝামাঝি সময়ের তুলনায় জেএএলের বুকিং সংখ্যাও চলতি সপ্তাহে ৬ দশমিক ৬ শতাংশ বেড়েছে। ব্যবসায়িক ভ্রমণকারীর পাশাপাশি বিদেশে বসবাসকারী জাপানিরা এ সময়ে বেশি ভ্রমণ করেছেন।
এএনএর নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট আকিকো ওয়ামাদা বলেন, ভ্রমণে কোভিড পরীক্ষার প্রয়োজনীয়তা বাতিলের পর গ্রাহকদের এখন বিদেশ ভ্রমণে শঙ্কা দূর হয়েছে। এএনএ ও জেএএল উভয় উড়োজাহাজ প্রতিষ্ঠান দুটি তাদের আন্তর্জাতিক পরিষেবা সম্প্রসারণ করছে। বিশেষ করে ব্যবসায়িক রুটগুলোর জন্য ব্যাপকভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছে।
সিঙ্গাপুর থেকে ফিরে আসা টোকিও অফিসের এক কর্মী বলেন, বিদেশ থাকাকালে জাপান ভ্রমণে কোভিড পরীক্ষার ইতিবাচক ফলাফলের বিষয়ে চিন্তিত ছিলাম। তবে সরকারের ঘোষণার পর পরীক্ষা ছাড়াই দেশে আসতে পেরেছি।
জাপানের পূর্বাঞ্চলের চিবা প্রদেশের এক ব্যক্তি বলেন, পিসিআর পরীক্ষার জন্য আর অর্থ প্রদান করতে হবে না। এ কারণে বিদেশ ভ্রমণে আরো সুযোগ বেড়ে যাবে বলে আশা করছি। হানকিউ ট্রাভেল ইন্টারন্যাশনালের এক প্রতিনিধি বলেন, ভ্রমণ শিল্প খাত উন্নত করতে জাপান সরকার কোভিডজনিত বিধিনিষেধ শিথিল করেছে। কোভিড পরীক্ষার নেতিবাচক ফলাফল এ খাতে বড় বাধা সৃষ্টি করেছিল। এটি ভোক্তাদের মানসিকভাবেও ভ্রমণ থেকে দূরে রাখত। এএনএ ও জেএএল উভয় উড়োজাহাজ প্রতিষ্ঠান দুটির আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের যাত্রী সংখ্যা এখনো মহামারীপূর্ব স্তরের প্রায় ৪০ শতাংশে রয়ে গিয়েছে। তবে শতভাগ পুনরুদ্ধার করতে হলে বিধিনিষেধ সম্পূর্ণভাবে বাতিল করতে হবে বলে মনে করছেন দেশটির বিশেষজ্ঞরা।