দুর্ঘটনায় স্ত্রী
মারা গেলে বিমার প্রায় দুই কোটি টাকা পাবে স্বামী। টাকার লোভে লোক ভাড়া করে নিজের
স্ত্রীকে মেরে ফেলে মহেশ চাঁদ। পুলিশের দাবি, মহেশের অনুরোধে তার স্ত্রী শালু বাইকে
চেপে মন্দিরে পূজা দিতে যাচ্ছিলেন। সেই সময় বাইকের পেছনে একটি এসইউভি গাড়ি এসে ধাক্কা
মারে। ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয় শালুর। শালুর চাচাতো ভাই বাইকটি চালাচ্ছিলেন। দুর্ঘটনায়
তিনি গুরুতর আহত হয়েছেন। ৫ অক্টোবর রাজস্থানে এই ঘটনা ঘটেছে। আপাতদৃষ্টিতে এটি সড়ক
দুর্ঘটনা মনে হলেও রাজস্থান পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পারে, পুরো ঘটনাটিই সাজানো। বুধবার
পুলিশ জানায়, শালুর স্বামী মহেশ বিমার টাকা হাতানোর লোভে লোক ভাড়া করে মেরে ওই ’দুর্ঘটনা’র পরিকল্পনা করেছে।
এক পুলিশ কর্মী
জানিয়েছেন, শালুর নামে একটি বিমা করেছিল মহেশ, যার শর্ত ছিল বিমাকারীর স্বাভাবিক মৃত্যু
হলে ১ কোটি টাকা পাওয়া যাবে। কিন্তু সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হলে ১ কোটি ৯০ লাখ টাকা পাবে
মহেশ। পুলিশের দাবি, এই টাকার লোভ সামলাতে পারেনি মহেশ। শালুকে খুন করার ছক কষতে থাকে
সে। মুকেশ সিংহ রাঠৌর নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে এই নিয়ে চুক্তি হয় তার। শালুকে মারার
জন্য ১০ লাখ টাকা দাবি করে মুকেশ। মহেশ সাড়ে ৫ লাখ টাকা অগ্রিম দেয় মুকেশকে।
মহেশ পরিকল্পনা
অনুযায়ী শালুকে জানায়, সে ঠাকুরের কাছে মানত রেখেছে, যা পূরণ করতে হলে শালুকে পর পর
১১ দিন মন্দিরে গিয়ে প্রার্থনা করতে হবে। শর্ত ছিল, শালু যেন এই বিষয়ে কাউকে কিছু না
জানান। ইচ্ছাপূরণ হলে শালুকে শ্বশুরবাড়ি থেকে নিজের কাছে এনে রাখবে বলেও কথা দেয় মহেশ।
স্বামীর কথামতোই খুড়তুতো ভাই রাজুর সঙ্গে মন্দিরে যাচ্ছিলেন শালু। ৫ অক্টোবর ভোর ৪টা
৪৫ নাগাদ তাদের বাইকের পেছনে একটি এসইউভি ধাক্কা এসে মারে। ঘটনাস্থলেই মারা যান শালু।
পুলিশের দাবি,
এসইউভি গাড়িটির পেছনে একটি বাইকে ছিল মহেশও। শালু মারা যাওয়ার পর সে আবার ঘটনাস্থল
থেকে ফিরে চলে আসে। গাড়ির ভেতর রাঠৌরসহ আরও চারজন ছিল। পুলিশ রাঠৌরসহ গাড়ির মালিক
রাকেশ সিংহ এবং সোনুকে গ্রেপ্তার করেছে। বাকিরা এখনো পলাতক বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রের
খবর, ২০১৫ সালে মহেশকে বিয়ে করেছিলেন শালু। তাদের একটি কন্যাসন্তানও রয়েছে। বিয়ের দুই
বছর পর থেকেই তাদের মধ্যে অশান্তি শুরু হয়। শালু তার পর থেকে তার বাবার বাড়িতেই থাকতেন।
পুলিশ সূত্রের খবর, ২০১৯ সালে মহেশের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগও করেছিলেন শালু।