কয়েক দিনের বর্ষণ ও উজানের পাহাড়ি ঢলে
তিস্তা নদীর পানি অনেক বেড়ে গেছে। তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ১৬ সেন্টিমিটার
নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ওই পয়েন্টে বিপৎসীমা ৫২ মিটার ৬০ সেন্টিমিটার। এতে বন্যার
আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে নদীর পানি বাড়ায় তিস্তা চরের কয়েকশ’ একর জমি তলিয়ে
গেছে।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা
পূর্বাভাস ও সর্তকীকরণ সূত্র জানায়, ডিমলা উপজেলার তিস্তা ব্যারাজের
ডালিয়া পয়েন্টে সকালে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৫০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের গেজ পাঠক
(পানি পরিমাপক) নুরুল ইসলাম বলেন, ‘উজানের ঢল অব্যাহত
থাকায় তিস্তার পানি বাড়ছে। আমরা ওয়্যারলেসের মাধ্যমে জানতে পেরেছি, ভারতের দো-মহনী
তিস্তা পয়েন্টে হলুদ সংকেত জারি করেছে। ভারতের ওই পয়েন্টেও পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তারা
ওই সংকেত জারি করেছে।’
ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান
মো. আব্দুল লতিফ জানান, উজানের ভারী বর্ষণের কারণে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ফলে উপজেলার পূর্বছাতনাই, খগাখড়িবাড়ি, টেপাখড়িবাড়ি, খালিশা চাপানী, ঝুনাগাছ চাঁপানী,
এছাড়া জলঢাকা উপজেলার ডাউয়াবাড়ি, গোলমুন্ডা, শৌলমারী ও কৈমারীর এলাকার নদীর চরসহ লোকালয়ে
পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে।
পাশাপাশি লালমনিরহাটের পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী, সানিয়াজান, সিঙ্গীমারী, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, ডাউয়াবাড়ী এলাকায় একই পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। তিস্তা তীরবর্তী ঝাড়শিঙ্গেশ্বর চরের কৃষক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘উজানের পানিতে ধানের বীজতলা তলিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। এখন বর্ষা মৌসুমে ধান রোপণ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।’
চরখড়িবাড়ি গ্রামের হাসিম মিয়া বলেন, ‘হঠাৎ তিস্তার
পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আমরা আতঙ্কে আছি। যেভাবে পানি বাড়ছে তাতে চর এলাকায় বন্যা দেখা
দিতে পারে। সেই সঙ্গে প্রচুর ভাঙনেরও শঙ্কা রয়েছে।’
এ ব্যাপারে ডালিয়া ডিবিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘উজানের পানি ও বৃষ্টির কারণে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এভাবে পানি বাড়তে থাকলে বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। আমরা তিস্তা ব্যারাজের ৪৪ স্লুইচগেট খুলে রেখেছি। রাতে বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ’