চলমান করোনা মহামারিতে
বিশ্বজুড়ে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা আরও বেড়েছে। তবে আগের দিনের তুলনায় কমেছে নতুন শনাক্ত
রোগীর সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন প্রায় ৩ হাজার
৩০০ জন মানুষ। একই সময়ে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা নেমে এসেছে ৮ লাখের
নিচে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায়
বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে জার্মানিতে। অন্যদিকে দৈনিক প্রাণহানির
তালিকায় শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাজ্য। প্রাণহানির তালিকায় এরপরই রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি,
রাশিয়া, ফ্রান্স, ইতালি ও দক্ষিণ কোরিয়া। এতে বিশ্বব্যাপী করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা
ছাড়িয়েছে ৫০ কোটি ৭৬ লাখের ঘর। অন্যদিকে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৬২ লাখ ৩৫ হাজার।
শুক্রবার (২২
এপ্রিল) সকালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারস
থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা
গেছেন ৩ হাজার ২৫৯ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে অর্ধশতাধিক।
এতে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৬২ লাখ ৩৫ হাজার ৩৫৯ জনে।
একই সময়ের মধ্যে
ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৭ লাখ ৯৭ হাজার ৩২২ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায়
নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা কমেছে লক্ষাধিক। এতে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত ভাইরাসে
আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০ কোটি ৭৬ লাখ ৪১ হাজার ৪৯৬ জনে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায়
বিশ্বে করোনায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে জার্মানিতে। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে
নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৩৯ হাজার ৮৪৯ জন এবং মারা গেছেন ৩৯০ জন।
করোনা মহামারির শুরু থেকে ইউরোপের এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ২ কোটি ৩৯ লাখ ১৫ হাজার ৪৩৭
জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৩৪ হাজার ২৮৪ জন মারা গেছেন।
অন্যদিকে দৈনিক
প্রাণহানির তালিকায় শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাজ্য। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে
আক্রান্ত হয়েছেন ১৯ হাজার ৪৭২ জন এবং মারা গেছেন ৬৪৬ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে
দেশটিতে এখন পর্যন্ত ২ কোটি ১৯ লাখ ৯ হাজার ৫০৯ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ
৭৩ হাজার ৩২ জন মারা গেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে
গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৪৪ হাজার ৯১৮ জন এবং মারা গেছেন
২৭৩ জন। করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৮ কোটি ২৫ লাখ ৫২
হাজার ৭৭২ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১০ লাখ ১৭ হাজার ৫৮৩ জন মারা গেছেন।
দক্ষিণ কোরিয়ায়
গত একদিনে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৯০ হাজার ৮২৫ জন এবং মারা গেছেন ১৪৭
জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে পূর্ব এশিয়ার এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ৬৬ লাখ ৭৪
হাজার ৪৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ২১ হাজার ৬৬৭ জন মারা গেছেন। গত একদিনে জাপানে
নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৪৭ হাজার ৪৬০ জন এবং মারা গেছেন ৪৯ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায়
রাশিয়ায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১৯৭ জন এবং নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন
৮ হাজার ৮৭৫ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা
১ কোটি ৮১ লাখ ১০ হাজার ৮৬১ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৩ লাখ ৭৪ হাজার ৩৬৮ জনের।
ফ্রান্সে নতুন
করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৪ হাজার ৭ জন এবং মারা গেছেন ১৮৫ জন। করোনা
মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত ২ কোটি ৮০ লাখ ৭৬ হাজার ১৭ জন করোনায় আক্রান্ত
হয়েছেন এবং ১ লাখ ৪৪ হাজার ৭৯৯ জন মারা গেছেন। থাইল্যান্ডে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত
হয়েছেন ২১ হাজার ৯৩১ জন এবং মারা গেছেন ১২৯ জন।
লাতিন আমেরিকার
দেশ ব্রাজিল করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে তৃতীয় ও মৃত্যুর সংখ্যায় তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে
রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৮৬ জন এবং নতুন করে করোনায়
সংক্রমিত হয়েছেন ১৮ হাজার ৬৬০ জন। অপরদিকে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট
শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৩ কোটি ৩ লাখ ৩০ হাজার ৬২৯ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৬ লাখ ৬২ হাজার
৫৫৬ জনের।
করোনায় আক্রান্তের
তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে প্রতিবেশী দেশ ভারত। তবে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের
সংখ্যার তালিকায় দেশটির অবস্থান তৃতীয়। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা
গেছেন ৩৩ জন এবং নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ৯০৩ জন। মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে
এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৪ কোটি ৩০ লাখ ৫০ হাজার ৮৭৭ জন এবং মারা গেছেন ৫ লাখ
২২ হাজার ৯৫ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায়
তুরস্কে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩ হাজার ৩৫৪ জন এবং মারা গেছেন ১৭ জন।
একই সময়ে ইতালিতে নতুন করে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৭৫ হাজার ২০ জন এবং মারা গেছেন
১৬৬ জন। ভিয়েতনামে নতুন করে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছেন ১২ হাজার ২৯ জন এবং মারা গেছেন
৯ জন।
উল্লেখ্য, ২০১৯
সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর ২০২০
সালের ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে। এর
আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে সংস্থাটি।