আগামী শুক্রবার মুক্তি পেতে চলেছে জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসান অভিনীত বহুল প্রতীক্ষিত সিনেমা ‘বিউটি সার্কাস’। মাহমুদ দিদার পরিচালিত এ সিনেমা নিয়ে দর্শকের অপেক্ষার অবসান হতে যাচ্ছে ২৩ সেপ্টেম্বর।
নির্মাতা মাহমুদ দিদার বলেন, আজকের সময়টা আমার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমার এ যাত্রার অন্যতম অনুপ্রেরণা জয়া আপু। প্রথম টেলিভিশনের নাটক, ফিকশন বা নন-ফিকশন কাজে জয়া আপু ছিলেন। আমার মনে হয় সাধারণ মানুষের চিন্তা বিনোদনের সংযুক্ত করতে সার্কাসের মতো সিনেমেট্রিক প্লাটফর্ম আর নেই। বিষয়টা ভেবেই আমরা সিনেমা নির্মাণ শুরু করি এবং বাংলাদেশ সরকারের কাছে অনুদান চাই আর পেয়েও যাই। আমাদের এ যাত্রাই নানা সংকট হয়েছে এবং আমরা অনেককেই আমাদের সঙ্গে পেয়েছি। তাদের সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ। আমি সবাইকে আহ্বান জানাব শুক্রবার সবাই হলে গিয়ে সিনেমাটি দেখবেন।
বিউটি সার্কাস টিমের প্রত্যেকেই এ আয়োজনে নিয়ে বক্তব্য রাখেন। তবে সবকিছুর কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ছিলেন জয়া আহসান। বিউটি সার্কাস নিয়ে জয়া আহসান বলেন, দেড় বছর পর আমার নতুন সিনেমা আসতে যাচ্ছে। বিউটি সার্কাস আমার জন্য স্পেশাল একটি কাজ। আপনারা কমবেশি সবাই জানেন, আমি নতুন নির্মাতাদের সঙ্গে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি। দিদারের প্রথম ফিকশনেও আমি কাজ করেছি। দিদারের আইডিয়া সবসময় আলাদা। বিউটি সার্কাসও সে রকম। প্রতিকূলতা পার করে আমরা কাজ করেছি। এখানে সার্কাসের অনেক খেলা আমাকে খেলতে হয়েছে। সেগুলো অনেক ঝুঁকি ছিল। অথচ এসব না ভেবে চরিত্রের মোহে আমি কাজগুলো কীভাবে কখন করে ফেলেছি, টেরই পাইনি। এখন মনে হচ্ছে, বিষয়টি ছিল অনেকটা না বুঝেই রোলার কোস্টারে চড়ে বসার মতো। বলা যায় আমি না বুঝেই এ সিনেমায় কাজ করেছি।
তিনি আরো বলেন, আমরা সবাই অনেক কষ্ট করে এ সিনেমায় কাজ করেছি। এতে প্রত্যকে অনেক কাজ করেছেন। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে এ সিনেমার কাজ হয়েছে। সার্কাসের ট্রুপরা যারা আমাদের সঙ্গে ছিলেন তারাও অনেক সাহায্য করেছেন এ সিনেমায়। বাংলাদেশ সরকারকে আমি ধন্যবাদ জানাই, কারণ এ সিনেমায় পেছনে তাদের অবদান রয়েছে। এ সিনেমায় তৌকির আহমেদ ভাই, রাকায়েত ভাই (গাজী রাকায়েত) আরো অনেকের সঙ্গে অনেক দিন পর কাজ করা হয়েছে। সেই ‘গেরিলা’ ছবির পর আবার ফেরদৌস ভাইয়ের সঙ্গে কাজ করা হলো। এখানে আমাদের কেমিস্টটা ভিন্ন। দর্শক উপভোগ করবেন বলে প্রত্যাশা করছি। আশা করছি, দর্শকের ভালো লাগবে। প্রথমবারের মতো সার্কাস নিয়ে কাজ হলো। সবাই দেখে মজা পাবেন। সম্প্রতি বিউটি সার্কাসের ‘বয়ে যাও নক্ষত্র’ গানটির মিউজিক ভিডিও প্রকাশ পেয়েছে। দর্শকমহলে জনপ্রিয়তা পেয়েছে গানটি। ব্যান্ড চিরকুটের নিবেদনে গানটির কথা, সুর ও কণ্ঠ দিয়েছেন শারমিন সুলতানা সুমি। সংগীতায়োজন করেছেন পাভেল আরিন। গানটি নিয়ে জয়া বলেন, অসম্ভব সুন্দর একটি গান গেয়েছেন সুমি আপা। গানটার জন্য আমরা দর্শকের আরো কাছে যেতে পেরেছি। তার কাছে আমি কৃতজ্ঞ।
শারমিন সুলতানা সুমি বলেন, সাধারণ একটা ইতিহাস হতে যাচ্ছে। আজ থেকে অনেক বছর পর বাংলাদেশের সংস্কৃতি কিন্তু এক থাকবে না বদলে যাবে। তবে আমাদের সংস্কৃতি আর আমাদের এ সংগ্রাম কিন্তু এ সিনেমার মধ্য দিয়ে বেঁচে থাকবে। আয়োজনের অন্যতম একটি অংশ ছিল সুমির কণ্ঠে বয়ে যাও নক্ষত্র গানটি। এ সময়ে সুমির আহ্বানে তার সঙ্গে গান গেয়েছিলেন জয়া আহসান।
বিউটি সার্কাসের অন্যতম চরিত্র ফেরদৌস আহমেদ। এ সিনেমার মধ্য দিয়ে এ নেতিবাচক চরিত্রে প্রথমবার হাজির হচ্ছেন তিনি। সিনেমাটি ঘিরে এ চিত্রনায়ক বলেন, এ ধরনের চরিত্রে আগে অভিনয় করিনি আর জীবনেও করব না। সিরিয়াসলি। আমি সমসময় পজিটিভ ইমেজ নিয়ে পর্দায় এসেছি। দিদার আমাকে কনভিন্স করেছে কাজটি করার জন্য। শুটিং স্পটে গিয়েও ভেতর থেকে মন বলছিল, কাজটা করা উচিত হচ্ছে না। অন্যদিকে সিনেমায় আমার চরিত্রটি বলছে কাজটা করা উচিত। শেষ পর্যন্ত আমি আনন্দ নিয়েই কাজ করেছি। এখন মনে হচ্ছে এটা আমার শিল্পীমনের জয়।
দেশের ইতিহাস আর আবহমান সংস্কৃতির একটি অংশ জুড়ে আছে সার্কাস শিল্প। আর নিজের সার্কাস দল নিয়ে সংগ্রামী এক নারীর গল্প উঠে এসেছে এ সিনেমায়। সরকারের অনুদানপ্রাপ্ত ইমপ্রেস টেলিফিল্ম প্রযোজিত পরিচালক মাহমুদ দিদার নির্মিত বিউটি সার্কাসে জয়া আহসান আর ফেরদৌস আহমেদ ছাড়াও আর অন্যান্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন তৌকীর আহমেদ, এবিএম সুমন, শতাব্দী ওয়াদুদ, গাজী রাকায়েত, হুমায়ূন সাধু, মানিসা অর্চি প্রমুখ।