ছুটি কাটাতে আজকাল
মলদ্বীপে যান বলিউডের তারকারা। থাকেন নীল জলের মাঝখানে ভাসমান দামি রিসর্টে। কোনওটার
এক দিনের ভাড়া আড়াই লক্ষ টাকা। কোনওটা পাঁচ লক্ষের। দিন দশেকের ছুটি মানে আধা কোটির
ধাক্কা! তাতেও এক বন্ধুর সঙ্গে ছুটি কাটানোর কয়েক দিনের মধ্যে আর এক বন্ধুর সঙ্গে
সফরে আসেন বলিউড খ্যাতনামীরা। কী করে পারেন বলুন তো!
শুধু বেড়ানোই
বা কেন, তারকাদের দামি শখের শেষ নেই। কেউ হয়তো শখ মেটাতে ঘড়ি কিনলেন ২২ লক্ষ টাকা
দিয়ে। কেউ কিনলেন ৩০ লাখের পার্স। দশ-বিশ লাখের জুতোও কেনেন অনেকে। গাড়ি-বাড়ির কথা
ছেড়ে দিলেও মাস গেলে এ সবের পিছনে মোটা কড়ি খসে তারকাদের। কিন্তু সেই বিপুল ব্যয়ের
অর্থ আসে কোথা থেকে?
প্রত্যেকেরই বছরে
এক বা একাধিক ছবি মুক্তি পায়, বা সে সব ছবির পারিশ্রমিকের টাকাতেই শখ আহ্লাদ চলে— এমন কথা বোধ হয় এঁদের পরম বন্ধুও বলতে
পারবেন না। তা হলে কারা চালান তারকাদের খরচাপাতি?
‘কৌন বনেগা ক্রোড়পতি’র প্রশ্ন হলে উত্তরের চারটি বিকল্পও দেওয়া
যাবে না। কারণ জবাব একটিই— রিয়্যালিটি শো।
টেলিভিশনের বিভিন্ন
রিয়্যালিটি শো থেকেই কোটি কোটি টাকা উপার্জন করেন বলিউড তারকারা। হিসেব করে দেখা
গিয়েছে, টেলিভিশন থেকে এঁদের আয়ের অঙ্ক এতটাই বেশি যে, বছরে একটি সিনেমাও না করলে চলে।
রুপোলি পর্দার নায়ক-নায়িকা হয়েও, টেলিভিশন এঁদের লক্ষ্মী।
বলিউড তারকারা
কে কত টাকা আয় করেন রিয়্যালিটি শো থেকে? জেনে নেওয়া যাক—
রিয়্যালিটি শোয়ের
বিচারক হিসেবে প্রথমেই বলতে হয় শিল্পা শেট্টির কথা। ৯০-এর দশকের অভিনেত্রী। তবে এখনও
বলিউডের নবাগতাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নামতে পারেন বলে মনে করেন শিল্পার ভক্তরা। তাঁকে
বিচারকের ভূমিকায় দেখা গিয়েছে তিনটি নাচের প্রতিযোগিতায়। এর মধ্যে ‘সুপার ডান্সার’-এর একটি সিজনের জন্য শিল্পা ১৪ কোটি
টাকা নিয়েছিলেন।
নাচের কথা উঠলই
যখন, তখন ধক ধক গার্ল মাধুরী দীক্ষিতের প্রসঙ্গও আসে। শিল্পার চেয়ে অনেক সিনিয়র। তবে
তাঁর উপস্থিতির দর আরও বেশি। মাধুরী পুরো সিজনের পারিশ্রমিক নেন না। মাঝে মাঝে তাঁর
দেখা পেতে পর্ব পিছু ১ কোটি খরচ করেন রিয়্যালিটি শোয়ের প্রযোজকেরা।
নাচের অনুষ্ঠান
এবং আরও বেশ কয়েকটি রিয়্যালিটি শোয়ে বিচারক হয়েছিলেন কর্ণ জোহরও। ‘ঝলক দিখলা যা’-র জন্য কর্ণের পারিশ্রমিক ছিল ১০ কোটি।
অমিতাভ বচ্চন
‘কৌন বনেগা ক্রোড়পতি’র প্রথম সিজনে প্রতি পর্বে ২৫ লক্ষ টাকা
পারিশ্রমিক নিতেন। ১১তম সিজনে দর অনেকটাই বেড়েছে। এখন প্রতি পর্বে সাড়ে তিন কোটি
টাকা নেন বলিউডের ‘অ্যাংরি ইয়ংম্যান’।
‘বিগবস’ আর সলমন খান এখন প্রায় সমার্থক। শুরুতে
প্রতি পর্বে ‘বিগবস’-এর মঞ্চে উঠতে
সাড়ে ছ’কোটি টাকা নিতেন টাইগার। পরে তা বেড়ে
সাড়ে আট কোটি হয়। এখন অবশ্য আর অত হিসেব করেন না। সিজন পিছু ২০০ কোটি টাকা নিয়ে
নেন।
‘ঝলক দিখলা যা’-র একটি সিজনের বিচারক হওয়ার জন্য ১ কোটি
পারিশ্রমিক চেয়েছিলেন মালাইকা। তবে ‘ইন্ডিয়াজ বেস্ট
ডান্সার’-এ তিনি প্রতি পর্বে আট লক্ষ টাকা পারিশ্রমিক
নেন।
পারিশ্রমিকের
নিরিখে সলমনের কাছাকাছি হৃতিক রোশন। একবারই একটি নাচের রিয়্যালিটি শোয়ের বিচারক হয়েছিলেন।
একটি সিজনের জন্য ১১২ কোটি টাকা নিয়েছিলেন হৃতিক।
শাহিদ কপূরও বিচারক
হয়েছিলেন। নাচের প্রতিযোগিতা ‘ঝলক দিখলা যা’-র পর্ব পিছু পৌনে দু’কোটি টাকা করে নিতেন তিনি।
‘ঝলক দিখলা যা’-র আর এক তারকা বিচারক ছিলেন জ্যাকলিন
ফার্নান্দেজ। তিনি পর্ব পিছু সোয়া এক কোটি টাকা নিতেন।
‘নাচ বলিয়ে’-র অষ্টম সিজনের বিচারক সোনাক্ষির প্রতি
পর্বের পারিশ্রমিক ছিল এক কোটি টাকা।
৯০-এর দশকের আর
এক অভিনেত্রী রবিনা ট্যান্ডন ‘শাইন অফ ইন্ডিয়া’র পর্ব পিছু ১ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন।
কমেডি শো-এ পরিচিত
মুখ অর্চনা পূরণ সিং। ‘কমেডি সার্কাস’-এর প্রতি সিজনে ২ কোটি টাকা নিতেন অর্চনা।
কপিল শর্মা শোয়ের পর্ব পিছু নিতেন ১০ লক্ষ টাকা।
একটি নাচের অনুষ্ঠানে
বিচারক হয়েছিলেন বলিউডের বাঙালি পরিচালক অনুরাগ বসুও। বিচারক হিসেবে তাঁর পারিশ্রমিক
ছিল ৭ কোটি টাকা।