কাজিরা মুসলিম বিবাহ তালাক নিবন্ধন করার নির্ধারিত ফি’র বেশি টাকা যাতে নিতে
না পারেন সেজন্য মন্ত্রণালয়কে নজরদারি বাড়াতে বলেছে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়
সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। সোমবার (২১ মার্চ) জাতীয় সংসদ ভবনে সংসদীয় স্থায়ী কমিটির
বৈঠকে মুসলিম বিবাহ ও তালাক (নিবন্ধন) আইন এবং বিধিমালা নিয়ে আলোচনায় এ সুপারিশ করা
হয়। কমিটির সভাপতি শহীদুজ্জামান সরকার এতে সভাপতিত্ব করেন। কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর
রহমান, আব্দুল মজিদ খান এবং ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বৈঠক উপস্থিত ছিলেন।
তারা বলছে, বিয়ের নিবন্ধকরা একাধিক হিসাবের খাতা রেখে সরকারকে অসত্য তথ্য দেন,
যার ফলে ভোগান্তিতে পড়ে মানুষ। সরকার নির্দিষ্ট ফি ঠিক করে দেওয়ার পরও নিবন্ধকরা যে
বেশি ফি নিচ্ছেন, সে জন্য জবাবদিহিতার মধ্যে আনতে বলেছে কমিটি।
বৈঠকে জানানো হয়, মুসলিম বিবাহ ও তালাক (নিবন্ধন) বিধিমালা ২০০৯ এ বলা আছে,
একজন নিকাহ নিবন্ধক চার লাখ টাকা পর্যন্ত দেনমোহরের ক্ষেত্রে প্রতি এক হাজার টাকার
জন্য সাড়ে ১২ টাকা ফি নিতে পারবেন। দেনমোহার চার লাখের বেশি হলে প্রতি এক লাখ বা অংশ
বিশেষের জন্য ১০০ টাকা নিবন্ধন ফি নিতে পারবেন। সর্বনিম্ন ফি হবে ২০০ টাকা। তালাক নিবন্ধনের
ফি ৫০০ টাকা। একজন নিবন্ধক প্রতি বছর সরকারি কোষাগারে ১০ হাজার টাকা নিবন্ধন ফি এবং
নবায়নের জন্য পাঁচ হাজার টাকা জমা দেন।
বৈঠক শেষে এ প্রসঙ্গে কমিটির সভাপতি শহীদুজ্জামান সরকার বলেন, আমাদের কাছে অনেক
সময় এই বেশি ফি আদায় নিয়ে অভিযোগ আসে। আমরা নিজেরাও দেখেছি সরকার নির্ধারিত ফি’র বাইরে
গিয়ে কাজী সাহেবরা টাকা নেন। তারা দুই রকমের খাতা রাখেন। মন্ত্রণালয়কে এ ব্যাপারে নজদারি
বাড়াতে বলা হয়েছে। বেশি ফি যারা নিচ্ছেন, তাদের একটা জবাবদিহিতার মধ্যে আনতে হবে। তালাক
নিবন্ধনের নকল সংগ্রহ করার জন্য নিবন্ধকরা টাকা আদায় করেন দাবি করে কমিটির সভাপতি বলেন,
এর জন্য টাকার দরকার নেই। তবুও নেওয়া হচ্ছে।
বৈঠকে মন্ত্রণালয় জানায়, বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে ২০২০-২১ অর্থবছরে ৯ জন নিবন্ধককে
কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। এর মধ্যে দুই জনের সনদ বাতিল করা হয়।
এসময় আরও জানানো হয়, ২০১৯ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত মোট সাত কোটি ৮৫ হাজার টাকা
৪৫৮ টাকা নিকাহ রেজিস্ট্রার কর্তৃক কোষাগারে জমা পড়েছে।