Logo
শিরোনাম

বঙ্গবন্ধুর কৃষি ভাবনা ও আজকের কৃষি উন্নয়ন

প্রকাশিত:সোমবার ১৫ আগস্ট ২০২২ | হালনাগাদ:রবিবার ১২ নভেম্বর ২০২৩ | ৯৫৫জন দেখেছেন
Image

ড. মো. শাহজাহান কবীর

বঙ্গবন্ধু কৃষিকে নিয়ে কত ভেবেছেন, এ দেশের মানুষের আজন্ম খাদ্যাভাব দূর করার জন্য স্বল্প সময়ে কতই না পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন, মনে হলো সেগুলো তুলে ধরা প্রয়োজন। ব্রিতে চাকরি করার সুবাদে বুঝতে পারি কৃষি নিয়ে বঙ্গবন্ধুর ভাবনা কতই না প্রাসঙ্গিক। কৃষিকে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর যে ভাবনা, আমরা যদি শুধু সেই ভাবনাগুলোকে বাস্তবে রূপ দিতে পারি তাহলে আমার মনে হয় বঙ্গবন্ধুর আত্মা শান্তি পাবে। তাঁর আজন্ম লালিত সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায় সামান্যতম হলেও অবদান থাকবে। কারণ কৃষি খাতের উন্নয়নের সঙ্গে বাংলাদেশের বিপুল জনগোষ্ঠীর খাদ্যনিরাপত্তা, কর্মসংস্থান ও জীবনযাত্রার মান সম্পর্কিত। এখনো দেশের মোট কর্মসংস্থানের ৪০ শতাংশের উৎস আমাদের কৃষি খাত। সাম্প্রতিক সময়ে কৃষি খাতে উন্নয়নের কারণে বাংলাদেশের গ্রামীণ অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হয়েছে। স্বাধীনতার ঠিক পরে ১৯৭২ সালে দেশে খাদ্যশস্য উৎপাদন হয় ১ কোটি ১০ লাখ টন; এর মধ্যে ধান উৎপাদন হয় মাত্র ৯৩ লাখ টন। তখন সাড়ে সাত কোটি মানুষের জন্য এই পরিমাণ খাদ্য পর্যাপ্ত ছিল না। স্বাধীনতার ৪৮ বছরের ব্যবধানে আজ দেশের মানুষ বেড়ে আড়াই গুণ হয়েছে। আবাদি জমি কমেছে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ। খাদ্য উৎপাদন বেড়েছে সাড়ে তিন গুণেরও বেশি। বর্তমানে চাল উৎপাদন প্রায় চার কোটি টনের কাছাকাছি। বাংলাদেশ এরই মধ্যে দানাজাতীয় খাদ্যশস্য, আলু ও শাকসবজিতে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। ডাল, তেলবীজ, মসলা ও ফল উৎপাদনেও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। একই জমিতে বছরে একাধিক ফসল চাষের দিক থেকে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে রোল মডেল।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান গভীরভাবে বিশ্বাস করতেন, কৃষির উন্নতি ছাড়া এ দেশের মানুষের মুক্তি আসতে পারে না। কৃষকরাই এ দেশের প্রাণ। তাই তিনি সবসময় বলতেন, আমাদের চাষীরা হলেন সবচেয়ে দুঃখী ও নির্যাতিত শ্রেণি এবং তাদের অবস্থার উন্নতির জন্য আমাদের উদ্যোগের বিরাট অংশ অবশ্যই তাদের পেছনে নিয়োজিত করতে হবে। ১৯৭০ সালের ২৯ অক্টোবর প্রাক-নির্বাচনী বক্তৃতায় বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, প্রকৃত প্রস্তাবে আমাদের গোটা কৃষি ব্যবস্থায় বিপ্লবের সূচনা অত্যাবশ্যক। পশ্চিম পাকিস্তানে জমিদারি, জায়গিরদারি, সরদারি প্রথার অবশ্যই বিলুপ্তি সাধন করতে হবে। প্রকৃত কৃষকের স্বার্থে গোটা ভূমি ব্যবস্থার পুনর্বিন্যাস সাধনের প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। ভূমি দখলের সর্বোচ্চ সীমা অবশ্যই নির্ধারণ করে দিতে হবে। নির্ধারিত সীমার বাইরের জমি এবং সরকারি খাসজমি ভূমিহীন কৃষকদের মধ্যে বণ্টন করতে হবে। কৃষি ব্যবস্থাকে অবশ্যই আধুনিকীকরণ করতে হবে। অবিলম্বে চাষীদের বহুমুখী সমবায়ের মাধ্যমে ভূমি সংহতিসাধনে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। সরকার এজন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেন। তিনি আরো বলেন, ভূমি রাজস্বের চাপে নিষ্পিষ্ট কৃষককুলের ঋণভার লাঘবের জন্যে অবিলম্বে আমরা ২৫ বিঘা পর্যন্ত জমির খাজনা বিলোপ এবং বকেয়া খাজনা মওকুফ করার প্রস্তাব করছি। আমরা বর্তমান ভূমি রাজস্ব প্রথা তুলে দেবার কথা ভাবছি। প্রাকৃতিক সম্পদের সর্বাধিক উন্নয়নের জন্যে বৈজ্ঞানিক তত্পরতা চালাতে হবে। অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে আমাদের বনজ সম্পদ, ফলের চাষ, গো-সম্পদ, হাঁস-মুরগির চাষ সর্বোপরি মত্স্য চাষের ব্যবস্থা করতে হবে।

সত্তরের নির্বাচনে বিপুল বিজয়ের পর ১৯৭১ সালের ৩ জানুয়ারি ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে প্রায় ২০ লাখ লোকের এক সমাবেশে জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদে আওয়ামী লীগের সদস্যরা জনগণের সামনে শপথ গ্রহণ করেন। শপথবাক্য পাঠ করানোর পর বঙ্গবন্ধু তাঁর ভাষণে বলেন, আমার দল ক্ষমতায় যাওয়ার সাথে সাথেই ২৫ বিঘা পর্যন্ত জমির খাজনা মওকুফ করে দেবে। আর দশ বছর পর বাংলাদেশের কাউকেই জমির খাজনা দিতে হবে না। পশ্চিম পাকিস্তানের বেলায়ও এই একই ব্যবস্থা অবলম্বন করা হবে। ওই সমাবেশে তিনি আরো বলেন, আইয়ুবী আমলে বাস্তুহারা হয়েছে বাংলার মানুষ। সরকারের খাসজমিগুলো বণ্টন করা হয়েছে ভুঁড়িওয়ালাদের কাছে। তদন্ত করে এদের কাছ থেকে খাসজমি কেড়ে নিয়ে তা বণ্টন করা হবে বাস্তুহারাদের মধ্যে। চর এলাকায়ও বাস্তুহারাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে।

স্বাধীন বাংলাদেশের কৃষকদের ভাগ্যোন্নয়নে বঙ্গবন্ধু উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। সদ্য স্বাধীন দেশের ৩০ লাখ টন খাদ্য ঘাটতি পূরণে বঙ্গবন্ধু তাত্ক্ষণিক আমদানির মাধ্যমে এবং স্বল্পমেয়াদে উন্নত পদ্ধতিতে চাষাবাদ, উন্নত বীজ, সেচ ও অন্যান্য কৃষি উপকরণ সরবরাহ করে এবং কৃষিঋণ মওকুফ, সার্টিফিকেট মামলা প্রত্যাহার ও খাসজমি বিতরণ করে কৃষিক্ষেত্রে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির মাধ্যমে খাদ্যে স্বনির্ভরতা অর্জনের চেষ্টা করেন। বঙ্গবন্ধু বলতেন, একটা স্বল্প সম্পদের দেশে কৃষি পর্যায়ে অনবরত উৎপাদন হ্রাসের পরিস্থিতি অব্যাহত থাকতে পারে না। দ্রুত উৎপাদন বৃদ্ধির সব প্রচেষ্টা গ্রহণ করতে হবে। চাষীদের ন্যায্য ও স্থিতিশীল মূল্য প্রদানের নিশ্চয়তা দিতে হবে। তিনি কৃষিতে প্রয়োজনীয় অর্থায়নের জন্য কৃষি ব্যাংক স্থাপন করেন। উন্নত বীজ ও প্রযুক্তি ব্যবহারের উদ্যোগ নেন, উচ্চতর কৃষি গবেষণা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন।

স্বাধীনতা আন্দোলনের অনেক স্লোগানের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি স্লোগান ছিল—‘বাংলার প্রতি ঘর, ভরে দিতে চাই মোরা অন্নে। এই স্লোগান তখন কৃষক-শ্রমিক-মেহনতি মানুষকে দেশপ্রেমে উদ্দীপ্ত করেছিল। বহু কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা অর্জনের পর যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে বঙ্গবন্ধু তাই সর্বপ্রথমে সবুজ বিপ্লবের ডাক দিয়েছিলেন। ১৯৭৩ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে বলেছিলেন, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছি সবুজ বিপ্লবের কথা বলতে। একই ভাষণে কৃষিবিদদের সরকারি চাকরিতে প্রথম শ্রেণীর মর্যাদা ঘোষণা করে তিনি বলেছিলেন, দুনিয়া ভরে চেষ্টা করেও আমি চাউল কিনতে পারছি না। চাউল পাওয়া যায় না। যদি চাউল খেতে হয় আপনাদের চাউল পয়দা করে খেতে হবে। বঙ্গবন্ধুর সেদিনের ঘোষণাকে এ দেশের কৃষিবিদ, কৃষি বিজ্ঞানী ও কৃষকরা অনুপ্রেরণা হিসেবে নিয়েছিলেন বলেই অতীতের খাদ্য ঘাটতির দেশ আজ খাদ্য উদ্বৃত্তের দেশে পরিণত হয়েছে। দেশে এখন ভাতের অভাব নেই। শুধু তাই নয়, নিজেদের প্রয়োজন মিটিয়ে এখন আমরা কিছু চাল বিদেশেও রফতানি করতে পারছি। এটি আমাদের জাতীয় জীবনের একটি অসামান্য অর্জন।

১৯৭৩ সালের মধ্যেই ধ্বংসপ্রাপ্ত কৃষি অবকাঠামো পুনর্নির্মাণ ও কৃষি যন্ত্রপাতি সরবরাহের জন্য হ্রাসকৃত মূল্যে ৪০ হাজার শক্তিচালিত লো-লিফট পাম্প, ২ হাজার ৯০০টি গভীর নলকূপ ও ৩ হাজার অগভীর নলকূপের ব্যবস্থা করা হয়। ১৯৭২ সালের মধ্যেই জরুরি ভিত্তিতে বিনা মূল্যে এবং কয়েকটি ক্ষেত্রে নামমাত্র মূল্যে অধিক কৃষিপণ্য উৎপাদনের জন্য ১৬ হাজার ১২৫ টন ধানবীজ, ৪৫৪ টন পাটবীজ ও ১ হাজার ৩৭ টন গমবীজ সরবরাহ করা হয়। পাকিস্তানি শাসনকালে রুজু করা ১০ লাখ সার্টিফিকেট মামলা থেকে কৃষকদের মুক্তি দেয়া হয় এবং তাদের সব বকেয়া ঋণ সুদসহ মাফ করে দেয়া হয়। ২৫ বিঘা পর্যন্ত জমির খাজনা চিরদিনের জন্য রহিত করা হয়। আগের সব বকেয়া খাজনাও মাফ করা হয়। ধান, পাট, তামাক, আখসহ গুরুত্বপূর্ণ কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তির লক্ষ্যে ন্যূনতম ন্যায্যমূল্য বেঁধে দেয়া হয়। বঙ্গবন্ধুর সরকারের সময় প্রণীত প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় সামাজিক ন্যায়বিচার ও দারিদ্র্য নিরসনের লক্ষ্যে কৃষি উন্নয়নকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারের পর্যায়ে নিয়ে আসা হয়। ওই সময় দেশে ভূমিহীন কৃষকের সংখ্যা ছিল ৩৫ শতাংশ। বিরাজমান খাসজমির সঙ্গে ভূমিহীন কৃষকদের মধ্যে বিতরণযোগ্য জমির সরবরাহ বৃদ্ধির জন্য বঙ্গবন্ধু পারিবারিক ও ব্যক্তিগত মালিকানার পরিধি কমিয়ে এনে পরিবারপিছু জমির সিলিং ১০০ বিঘায় নির্ধারণ করে দেন। ১৯৬৮-৬৯ সালের ১১ হাজার শক্তিচালিত পাম্পের স্থলে ১৯৭৪-৭৫ সালে এই সংখ্যা ৩৬ হাজারে উন্নীত করা হয়। এতে সেচের আওতাধীন জমির পরিমাণ এক-তৃতীয়াংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৩৬ লাখ একরে উন্নীত হয়। বিশ্ববাজারে রাসায়নিক সারের ব্যাপক মূল্যবৃদ্ধির কারণে কৃষককে সারে ভর্তুকি দিয়ে কৃষকদের রক্ষা করেন বঙ্গবন্ধু।

বঙ্গবন্ধু বিশ্বাস করতেন, কৃষিই যেহেতু এ দেশের জাতীয় আয়ের প্রধান উৎস, সেহেতু কৃষির উন্নতিই হবে দেশের উন্নতি। ১৯৭৫ সালের ২৫ মার্চ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের এক জনসভায় তিনি বলেন, আমি চাই বাংলাদেশের প্রত্যেক কৃষক ভাইয়ের কাছে যারা সত্যিকার কাজ করে, যারা প্যান্ট পরা-কাপড় পরা ভদ্রলোক, তাদের কাছেও চাইজমিতে যেতে হবে। প্রতিজ্ঞা করুন, আজ থেকে ওই শহীদদের কথা স্মরণ করে ডবল ফসল করতে হবে। যদি ডবল ফসল করতে পারি, আমাদের অভাব ইনশাল্লাহ হবে না। কৃষি ও কৃষকের উন্নতি, বিশেষ করে অধিক ফসল উৎপাদন, সেই সঙ্গে উৎপাদিত কৃষিপণ্য কৃষকরা যাতে সঠিকভাবে সংরক্ষণ ও বাজারজাত করতে পারেন, সেদিকে তাঁর দৃষ্টি ছিল। সদ্য স্বাধীন দেশে কৃষি উৎপাদনের প্রয়োজনীয় আধুনিক যন্ত্রপাতির সরবরাহ খুব বেশি না থাকলেও এগুলোর প্রয়োজনীয়তা তিনি অনুভব করতেন। ১৯৭৫ সালের ২১ জুলাই বঙ্গভবনে নবনিযুক্ত জেলা গভর্নরদের প্রশিক্ষণ কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কৃষকদের জন্য গভর্নরদের দায়িত্ব সম্পর্কে বলতে গিয়ে উল্লেখ করেন, ডেভেলপমেন্ট ওয়ার্কের জন্য পাম্প পেলাম না, এটা পেলাম নাএসব বলে বসে না থেকে জনগণকে মবিলাইজ করুন। যেখানে খাল কাটলে পানি হবে সেখানে সেচের পানি দিন। সেই পানি দিয়ে ফসল ফলান। আমি খবর পেলাম, ঠাকুরগাঁওয়ে একটা কোল্ডস্টোরেজ করা হয়েছে। এক বছর আগে সেটা হয়ে গেছে। কিন্তু পাওয়ার নাই। খবর নিয়ে জানলাম, পাওয়ার সেখানে যেতে এক বছর লাগবে। কারণ খাম্বা নাই। খাম্বা নাকি বিদেশ থেকে আনতে হবে। মিনিস্টার সাহেবকে বললাম, খাম্বা-টাম্বা আমি বুঝি না। বাঁশ তো আছে। এখানে দাঁড়াও, খাম্বা কাটো, দা লাগাও। দেড় মাস, দুই মাসের মধ্যে কাজ হয়ে যাবে। এটা লাগাও। কী করে লাগবে, সেটা আমি বুঝিটুঝি না। দিল, লেগে গেল। কিন্তু আমার কাছে যদি না আসত, এক বছরের আগে খাম্বা পেত না। খাম্বা আসে কোত্থেকে? পাওয়ার গেল, আলু রাখল।

বঙ্গবন্ধুর এসব বাস্তবধর্মী ও কৃষক দরদি নীতির ফলে কৃষি ক্ষেত্রে অগ্রগতির যে ধারা সূচিত হয়েছিল, তারই ফলে আজ কৃষি ক্ষেত্রে শক্তিশালী ধারা সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমান সরকার যে কল্যাণধর্মী ও কৃষকবান্ধব উন্নয়ন নীতি কৌশল গ্রহণ করেছে, তা বঙ্গবন্ধুর কৃষি ভাবনারই প্রতিফলন। দেশের অধিকাংশ মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কৃষির সঙ্গে জড়িত। সেদিকে খেয়াল রেখেই বর্তমানে অংশগ্রহণমূলক উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হচ্ছে, যাতে সুবিধাবঞ্চিত এই সম্ভাবনাময় জনশক্তিকে উন্নয়নের মূল স্রোতধারায় সম্পৃক্ত করা যায়। আধুনিক প্রযুক্তির যে আকাশছোঁয়া অগ্রগতি হয়েছে, তার সুফল কী করে কৃষকদের দোরগোড়ায় পৌঁছানো যায়, সেই ভাবনাও চলছে। কৃষকদের ভূমির অধিকার, ঋণপ্রাপ্তির অধিকার, উৎপাদনের ন্যায্যমূল্য পাওয়ার অধিকার, স্বাস্থ্যসেবা ও সন্তানদের শিক্ষা পাওয়ার অধিকার নিশ্চিতকরণের প্রয়াস অব্যাহত রয়েছে।

দীর্ঘ ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশের দায়িত্বভার নেয়ার পর বঙ্গবন্ধুর ভাবনারই প্রতিফলন ঘটালেন। বঙ্গবন্ধুর সবুজ বিপ্লবের ধারণা নতুন করে প্রাণ ফিরে পায়। শুরু হয় খাদ্য উৎপাদনে নতুন এক অধ্যায়, সবুজ বিপ্লব পায় নতুন মাত্রা। খাদ্য উৎপাদন বাড়ানোর জন্য সব প্রতিবন্ধকতা চিহ্নিত করে এর সমাধানে হাত দিলেন। সার, বীজ, সেচ, বিদ্যুতে ভর্তুকি এবং সহজপ্রাপ্য করা। দেশে প্রথমবারের মতো হাইব্রিড ধানের প্রচলন, উচ্চফলনশীল জাতের ব্যাপক সম্প্রসারণ। কাজও হলো। বিশ্বকে তাক লাগিয়ে ১৯৯৯ সালে এসে দেশ প্রথমবারের মতো খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে প্রদান করা হয় জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) কর্তৃক মর্যাদাপূর্ণ সেরেস পদক।

২০০১ সালে সরকার পরিবর্তনের ফলে এ অর্জন ধরে রাখা যায়নি। দেশ আবার খাদ্য ঘাটতিতে পড়ে। ২০০৯ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন দ্বিতীয় মেয়াদে সরকার গঠন করেন, তখন খাদ্য ঘাটতি ছিল ২৬ লাখ টন। সবারই মনে থাকার কথা, ২০০৯ সালে সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর প্রথম ক্যাবিনেট সভায় সারের দাম কমানোর প্রস্তাব পাস হয়। ৯০ টাকা কেজি সারের মূল্য ২২ টাকায়, ৮০ টাকার সার ১৫ টাকায় আনা হয়। বীজ, সেচ, বিদ্যুতে ভর্তুকিসহ সবকিছু পর্যাপ্ত ও সহজপ্রাপ্য করার পদক্ষেপ নেয়া হয়। ২০০৯ সাল থেকে গড়ে ৬ লাখ টন হারে চালের উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। ফলে ২০১৩ সালে সব ঘাটতি পূরণ করে আবারো খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয় দেশ এবং এখন পর্যন্ত সে ধারা অব্যাহত আছে।

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট কর্তৃক উচ্চফলনশীল ধানের জাত ও আনুষঙ্গিক লাগসই চাষাবাদ প্রযুক্তি উদ্ভাবন এবং কৃষক পর্যায়ে এসব প্রযুক্তি প্রয়োগের ফলে দেশ শুধু খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতাই অর্জন করেনি, খাদ্য উদ্বৃত্তের দেশে পরিণত হয়। এমনকি দেশের চাহিদা মিটিয়ে উদ্বৃত্ত চাল বিদেশেও রফতানি করা হচ্ছে। এটি আমাদের জাতীয় জীবনে এক অসামান্য অর্জন। অতীতের তলাবিহীন ঝুড়ি এখন শক্ত ভিত্তির উদ্বৃত্ত খাদ্যের বাংলাদেশ; ধান উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে তৃতীয় এবং গড় ফলনের হিসাবে দক্ষিণ ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার প্রথম এবং বিশ্বমানের কাছাকাছি। উন্নয়ন বিশেষজ্ঞদের মতে, খাদ্য উৎপাদনে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য অর্জিত না হলে খাদ্য কিনতে বাংলাদেশকে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা খরচ করতে হতো। অভ্যন্তরীণ আয়ের বেশির ভাগ অংশ ব্যয় হতো খাদ্য আমদানিতে। কিন্তু বর্তমানে উদ্বৃত্ত উৎপাদনের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হচ্ছে। ফলে অভ্যন্তরীণ আয় থেকেই পদ্মা সেতু, মেট্রোরেলের মতো বড় বড় উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করতে পারছে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশে খাদ্যসংকট যাতে না হয়, সেজন্য যা যা করা দরকার, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে কৃষি মন্ত্রণালয়। কেননা তিনি বিশ্বাস করেন কৃষিই একমাত্র আসন্ন সংকট থেকে আমাদের বাঁচাতে পারে। তিনি সম্প্রতি এক সভায় বলেছেন, খাদ্যই একমাত্র সমাধান, কৃষিই একমাত্র বাঁচাতে পারে। সম্ভাব্য দুর্ভিক্ষ মোকাবেলায় আমাদের বর্তমান সরকার কৃষিকে ঘিরে নানা পরিকল্পনা ও জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। প্রধানমন্ত্রী কৃষিকে রক্ষায় কৃষকদের বাঁচাতে তাদের দুর্যোগের এ সময়ে দিয়েছেন আর্থিক সহায়তা ও উপকরণ প্রণোদনা, কৃষি মন্ত্রণালয়কে দিয়েছেন সময়োপযোগী দিকনির্দেশনা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বারবার দেশের জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলছেন, এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে। যে যেভাবেই পারেন, প্রতিটি ইঞ্চি জায়গার সদ্ব্যবহার করবেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন খাদ্য উদ্বৃত্তের দেশ। তার পরেও বসে থাকলে চলবে না। করোনার কারণে অনেক দেশ সংকটে পড়বে। আমাদের থাকলে আমরা যেন তাদের সহযোগিতা করতে পারি। তার প্রত্যাশা, খাদ্য উৎপাদন করে যেমন আমাদের চাহিদা মেটাব, সেই সঙ্গে রফতানির লক্ষ্য নির্ধারণ করে আমাদের চাষাবাদ করতে হবে।

আমাদের সামনে ভিশন ২০২১, এসডিজি ২০৩০ এবং ভিশন ২০৪১ উন্নত রাষ্ট্রের স্বপ্ন। আমার গ্রাম আমার শহর’—এ স্লোগান নিয়ে বর্তমান শেখ হাসিনা সরকার গ্রাম ও শহরের ব্যবধান কামানোর জন্য কাজ করছে। এসডিজিও, ডেল্টা প্ল্যানসহ সব কার্যক্রম সমন্বিত বাস্তবায়নের মাধ্যমেই বাংলাদেশ হয়ে উঠবে সত্যিকারের সোনার বাংলা, যেমনটি বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন।

লেখক: মহাপরিচালক, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট


আরও খবর

শখের নার্সারিতে সফল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মনির

মঙ্গলবার ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

জয়পুরহাটে ৮৫৫ হেক্টর জমিতে ভুট্টার চাষ

মঙ্গলবার ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২৩




জাতীয় ঈদগাহে ঈদুল ফিতরের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১১ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১১ এপ্রিল ২০২৪ | ৭১৫জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

রাজধানীর হাইকোর্ট সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে পবিত্র ঈদুল ফিতরের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৮টায় ঈদ জামাত শুরু হয়।

ঈদের প্রধান জামাতে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন, প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, সংসদ সদস্য, সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি, রাজনৈতিক নেতা, সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন মুসলিম দেশের কূটনীতিকসহ অংশ নেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশা ও বয়সের লাখো মুসল্লি।

ঈদের প্রধান জামাতে ইমামতি করেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব হাফেজ মাওলানা মুফতি মোহাম্মদ রুহুল আমিন। দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ শেষে সমগ্র মুসলিম উম্মাহসহ দেশ ও জাতির কল্যাণ, সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। এরপর রাষ্ট্রপতি উপস্থিত সবার সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

সিটি কর্পোরেশন থেকে জানানো হয়, এবার জাতীয় ঈদগাহের ২৫ হাজার ৪০০ বর্গমিটার আয়তনের মূল প্যান্ডেলে একসঙ্গে ৩৫ হাজার মুসল্লি ঈদের জামাত আদায়ের ব্যবস্থা করা হয়। ছিল ঈদগাহে নারীদের জন্যও আলাদা নামাজের ব্যবস্থা।

এদিকে জাতীয় ঈদগাহ ছাড়াও জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে মোট পাঁচটি জামাত আদায়ের ব্যবস্থা রয়েছে।  ইসলামিক ফাউন্ডেশনের তথ্য অনুযায়ী, বায়তুল মোকাররমে সকাল ৭, ৮, ৯ ও ১০ ও ১০টা ৪৫ মিনিটে ঈদের জামাত হবে।


আরও খবর



বায়তুল মোকাররমে ঈদের প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১১ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১১ এপ্রিল ২০২৪ | ৭২০জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে পবিত্র ঈদুল ফিতরের প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) সকাল ৭টায় এ জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এতে রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্তের মুসল্লিদের উপচেপড়া ভিড় নামে।

প্রথম জামায়াতে ইমামতি করেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মুফতি মাওলানা মো. মিজানুর রহমান। মুকাব্বির হিসেবে ছিলেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের মোয়াজ্জিন ক্বারী মো. ইসহাক।

জাতীয় মসজিদে ঈদের প্রথম জামাতে অংশ নিতে ভোর থেকেই বিভিন্ন প্রান্তের মুসল্লিরা আসতে শুরু করেন। নামাজের সময়ে মুসল্লিদের ঢল নামে। নামাজ শেষে দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনায় আল্লাহর কাছে দোয়া করেন। নামাজের পর একে অন্যের সঙ্গে কোলাকুলি করে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নেন।

জাতীয় মসজিদে বেলা ১১টা পর্যন্ত ঈদের পাঁচটি জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে দ্বিতীয় জামাত সকাল ৮টায় অনুষ্ঠিত হবে। ইমামতি করবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মুফতি মুহীউদ্দিন কাসেম। মুকাব্বির থাকবেন বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের মোয়াজ্জিন (অব.) হাফেজ মো. আতাউর রহমান।

তৃতীয় জামাত সকাল ৯টায় অনুষ্ঠিত হবে। ইমামতি করবেন আজিমপুর কবরস্থান মেয়র হানিফ জামে মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা ইমরান বিন নূরউদ্দীন। মুকাব্বির থাকবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খাদেম মো. আব্দুল হাদী।

চতুর্থ জামাত সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত হবে। ইমামতি করবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মুফাসসির ড. মো. আবু ছালেহ পাটোয়ারী। মুকাব্বির থাকবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খাদেম মো. জসিম উদ্দিন।

পঞ্চম ও সর্বশেষ জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল পৌনে ১১টায়। ইমামতি করবেন মিরপুর জামেয়া আরাবিয়া আশরাফিয়া ও এতিমখানার মুহতামিম মাওলানা সৈয়দ ওয়াহীদুজ্জামান। মুকাব্বির থাকবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খাদেম মো. রুহুল আমিন।

৫টি জামাতে কোন ইমাম অনুপস্থিত থাকলে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ভাষা শিক্ষক মাওলানা মোহাম্মদ নূর উদ্দীন বিকল্প ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।


আরও খবর



আজ ঈদ

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১১ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১১ এপ্রিল ২০২৪ | ৭২০জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

রোজা শেষে আবারও এলো ঈদ। খুশির বার্তা নিয়ে ঈদের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে দেশজুড়ে। বাংলাদেশের আকাশে মঙ্গলবার শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা না যাওয়ায় এবার ৩০ রোজা পূর্ণ হলো। এক মাস সিয়াম সাধনার পর আজ উৎসবের আমেজে মেতে উঠবেনে দেশবাসী।

আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মুসলিম উম্মাহর প্রতি নিয়ামত হিসেবে ঈদ দান করেছেন। হাদিস শরিফে বর্ণিত হয়েছে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মদিনায় আগমন করলেন তখন মদিনাবাসীদের দুটো দিবস ছিল যে দিবসে তারা খেলাধুলা করতো। হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞেস করলেন, এ দুদিনের কী তাৎপর্য আছে? মদিনাবাসী উত্তর দিলেন, আমরা জাহেলি যুগে এ দুই দিনে খেলাধুলা করতাম। তখন তিনি বললেন, আল্লাহ রাব্বুল আলামিন এ দুই দিনের পরিবর্তে তোমাদের এর চেয়ে শ্রেষ্ঠ দুটো দিন দিয়েছেন। তা হলো ঈদুল আজহা ও ঈদুল ফিতর। (সুনানে আবু দাউদ: ১১৩৪)

ঈদের দিনের শুরু হয় ঈদের নামাজের মধ্য দিয়ে।ঈদের দিন সকালে পুরুষদের জন্য ঈদের নামাজ আদায় করা ওয়াজিব। বিশেষ পদ্ধতিতে অতিরিক্ত তাকবিরসহ জামাতে দুই রাকাত নামাজ আদায় করা এবং তারপর ঈদের খুতবা দেওয়া ও শ্রবণ করা। ঈদের নামাজ খোলা ময়দানে আদায় করা উত্তম। 

ঈদুল ফিতরের দিন দেশের প্রধান জামাত সকাল সাড়ে ৮টায় অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে। আবহাওয়া খারাপ হলে জাতীয় ঈদগাহে সম্ভব না হলে বায়তুল মোকাররমে জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৯টায়।

এছাড়া প্রতিবারের মতো এবারও পবিত্র ঈদুল ফিতরে বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদে পর্যায়ক্রমে ৫টি ঈদের নামাজের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৭টায়। দ্বিতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৮টায়।  তৃতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৯টায়।  চতুর্থ জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ১০টায়। পঞ্চম ও সর্বশেষ জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে।

পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিন  সর্বসাধারণের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরকারি বাসভবন বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও তার স্ত্রী ড. রেবেকা সুলতানা ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। আর নিজের সরকারি বাসভবন গণভবনে সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

এবার পবিত্র ঈদুল ফিতর এবং বাংলা নববর্ষে সরকারি কর্মচারীদের ছুটি শুরু হয়েছে ১০ এপ্রিল। অফিস খুলবে ১৫ এপ্রিল। তবে অনেকেই ৮ ও ৯ এপ্রিল দুদিনের ছুটি নিয়ে ঈদের ছুটি কাটাচ্ছেন টানা ১০ দিন। লম্বা ছুটির কারণে ঈদযাত্রায় ভোগান্তি হয়েছে কম। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ সময় নিয়ে নিজের শেকড়ে ফিরতে পেরেছেন।

কর্মব্যস্ত এই নগরীর সবাই যখন ঈদ উদযাপনে ঢাকা ছেড়েছেন তখন এই ঢাকা হয়ে উঠেছে এক অন্য শহর। বদলে গেছে রাজধানীর চিত্র, নেই চিরচেনা রূপ। এখন আর ঢাকার সড়কে ঘণ্টা পর ঘণ্টা বসে থাকতে হয় না। মুহূর্তেই চলে যাওয়া যাচ্ছে শহরের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে।

এদিকে দেশের সবার জন্য সুখী, আনন্দময় ও নিরাপদ ঈদুল ফিতরের কামনা করে সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, একমাস সিয়াম সাধনার পর আবার আমাদের মধ্যে পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর এসেছে। ঈদ মানে আনন্দ। আসুন আমরা আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশীসহ সবার সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করি।

রাজনৈতিক নেতাদের অধিকাংশই নিজ এলাকায় ঈদ উদযাপন করবেন এবার। কেউ কেউ ঢাকায় ঈদ করবেন, আবার কেউ নামাজ শেষে যাবেন এলাকায়। সব মিলিয়ে  নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করবেন তারা, যোগ দেবেন সামাজিক অনুষ্ঠানেও।


আরও খবর