Logo
শিরোনাম

বুক-মাথার ওপর বসে এএসপি আনিসুলের মৃত্যু নিশ্চিত করেন আসামিরা

প্রকাশিত:রবিবার ০৩ এপ্রিল ২০২২ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৩ | ১৬৮০জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) আনিসুল করিম শিপন মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন। যে কোনো আঘাতে তার মৃত্যু ঘটার আশঙ্কা ছিল। এ কথা জানার পরও চিকিৎসার নামে তাকে মাইন্ড এইড হাসপাতালের অ্যাগ্রেসিভ রুমে ঢুকিয়ে অপেশাদার লোক দিয়ে ম্যাট্রেসের ওপর ফেলে দুই হাত বেঁধে নয়জন আসামি মিলে বুক, ঘাড় ও মাথায় আঘাত করেন। তাদের নেতৃত্বে ছিলেন আরিফ মাহমুদ জয়। তারা সেদিন এএসপি আনিসুলের মাথার ওপর চেপে বসে তার মৃত্যু নিশ্চিত করেছিল।

সরকার অনুমোদিত কোনো হাসপাতালে ভর্তি না করিয়ে এএসপি আনিসুলকে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের রেজিস্ট্রার আবদুল্লাহ আল মামুন অর্থ উপার্জনের অসৎ উদ্দেশ্যে, ইচ্ছাকৃতভাবে মাইন্ড এইড হাসপাতালে পাঠান। দৈহিক জখম বা আঘাত বিপজ্জনক এবং মৃত্যু ঘটাতে পারে বা মৃত্যুর ঝুঁকি রয়েছে, তা জানতেন ডা. মামুন।

রাজধানীর আদাবরে মাইন্ড এইড হাসপাতালে এএসপি আনিসুলের হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে ডা. মামুনসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে দেওয়া অভিযোগপত্রে (চার্জশিট) এসব কথা উল্লেখ করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আদাবর থানা পরিদর্শক (অপারেশন) ফারুক মোল্লা। গত ৯ মার্চ তিনি এ অভিযোগপত্র দেন।

কোনোভাবে হত্যার দায় এড়াতে পারেন না ডা. মামুন

মামলার চার্জশিটে বলা হয়, আদাবরে মাইন্ড এইড হাসপাতালটি কেবল অবৈধভাবে অর্থ উপার্জনের জন্য প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠার জন্য মালিকপক্ষ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বা সংশ্লিষ্ট কোনো সংস্থার অনুমতি নেয়নি। সেখানে অত্যাবশ্যকীয় কোনো জরুরি চিকিৎসা সরঞ্জম এবং সার্বক্ষণিক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকও নেই। মাইন্ড এইড হাসপাতালটির সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে রেজিস্ট্রার ডা. আব্দুল্লাহ আল মামুন আগে থেকেই জানতেন। এরপরও তিনি সেখানে নিয়মিত চেম্বার করতেন এবং সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের মাইন্ড এইড হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দিতেন।

চার্জশিটে বলা হয়, দৈহিক জখম বা আঘাত মৃত্যু ঘটাতে পারে বা মৃত্যুর ঝুঁকি রয়েছে মর্মে চিকিৎসক হিসেবে ডা. আব্দুল্লাহ আল মামুন জানতেন। সুতরাং এ হত্যার দায় তিনি কোনোভাবে এড়াতে পারেন না।

মধ্যযুগীয় কায়দায় আঘাত করা হয় এএসপি আনিসুলকে

মামলার চার্জশিটে তদন্ত কর্মকর্তা ফারুক মোল্লা আরও উল্লেখ করেন, আসামি আরিফ মাহমুদ জয় ও তানিফ মোল্লা আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে ডা. আব্দুল্লাহ আল মামুনের সম্পৃক্ততার তথ্য প্রকাশ করেছেন। ডা. মামুনের ইচ্ছেতেই ভুক্তভোগীকে মাইন্ড এইড হাসপাতালে পাঠানো, রোগী পাঠানোর বিষয়ে মোবাইল ফোনে কথোপকথনের সিডিআর, ভিকটিমকে চিকিৎসা দেওয়ার নামে মধ্যযুগীয় কায়দায় আঘাত করা ও মরদেহ অ্যাম্বুলেন্সে নিয়ে হৃদরোগ হাসপাতালে বা অন্যত্র ভর্তি দেখিয়ে স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে মর্মে প্রচেষ্টা চালানো, এসব কার্যক্রম মামলার ঘটনায় সমর্থনযোগ্য সাক্ষ্য হিসেবে বিবেচ্য। তাই ডা. আব্দুল্লাহ আল মামুন পেনাল কোড ৩০২/১০৯ ধারা মোতাবেক শাস্তিযোগ্য অপরাধ সংঘটন করেছেন মর্মে প্রাথমিকভাবে তদন্তে প্রমাণিত হয়।

আরিফের নেতৃত্বে সরাসরি হত্যাকাণ্ডে অংশ নেন ৯ আসামি

মামলার চার্জশিটে তদন্তকারী কর্মকর্তা বলেন, আসামি আরিফ মাহমুদ জয়ের নেতৃত্বে এজাহারনামীয় আসামি মাসুদ খান (বাবুর্চি), সজীব চৌধুরী (ওয়ার্ড বয়), অসীম কুমার পাল (ওয়ার্ড বয়), তানিফ মোল্যা (ওয়ার্ড বয়), লিটন আহম্মেদ (দারোয়ান), জোবায়ের হোসেন (ওয়ার্ড বয়), তানভীর হাসান (ফার্মাসিস্ট) এবং সাইফুল ইসলাম পলাশ (ওয়ার্ড বয়) চিকিৎসা দেওয়ার নামে ভিকটিম আনিসুল করিমকে পিটিয়ে হত্যা করেছেন, যা পেনাল কোডের ৩০২/৩৪ ধারা মোতাবেক শাস্তিযোগ অপরাধ।

মাইন্ড এইড হাসপালে ছিল না কোনো মানসিক রোগের চিকিৎসক

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আরও বলেন, মামলার আসামি মুহাম্মদ নিয়াজ মোর্শেদ ওরফে সোহাগ (মাইন্ড এইড হাসপাতালের এমডি) ও ডা. আব্দুল্লাহ আল মামুন বেসরকারি হলি ফ্যামিলি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে এমবিবিএস পাস করেছেন। তারা মানসিক রোগীর চিকিৎসক নন। অন্যদিকে আসামি ফাতেমা খাতুন ময়না বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে শুধুমাত্র মনোরোগ বিষয়ে একটি কোর্স সম্পন্ন করেছেন। তিনিও মানসিক রোগের চিকিৎসক নন। হাসপাতালের অন্য মালিকদের মধ্যে রেদোয়ান সাব্বির (কো-অর্ডিনেটর), সাজ্জাদ আমিন, সাখাওয়াত হোসেন কেউই মানসিক রোগের চিকিৎসক নন।

মাইন্ড এইড হাসপাতালে চিকিৎসার নামে প্রতারণা

তদন্ত কর্মকর্তা ফারুক মোল্লা চার্জশিটে বলেন, হাসপাতালের মালিকরা বিধিবহির্ভূতভাবে শুধু অবৈধ অর্থ উপার্জনের অভিপ্রায়ে মানসিক চিকিৎসা দেওয়ার নামে প্রতারণার মাধ্যমে মাইন্ড এইড নামক হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠা করেন। হাসপাতালটিতে অভিজ্ঞ কোনো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ছিল না। তাছাড়া অবৈধ হাসপাতালটিতে জরুরি চিকিৎসা সরঞ্জামাদির ব্যবস্থা নেই। সুতরাং অবৈধভাবে প্রতিষ্ঠিত হাসপাতালটির উল্লিখিত মালিকরা এ হত্যাকাণ্ডের দায় এড়াতে পারেন না। হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনার মাধ্যমে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটিকে ত্বরান্বিত ও প্ররোচিত করেছেন, যা পেনাল কেডের ৩০২/১০৯ ধারায় শান্তিযোগ্য অপরাধ।

মামলার তদন্তকালে প্রাপ্ত সাক্ষ্য-প্রমাণ, তথ্য-উপাত্ত, জব্দ আলামত, ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পর্যালোচনা ও ঘটনার পারিপার্শ্বিকতায় আসামি আরিফ মাহমুদ জয় (৩৫), মাসুদ খান (৩৮), জোবায়ের হোসেন (১৯), তানিফ মোল্যা (২০), তানভির হাসান (১৮), সজীব চৌধুরি (২১), অসীম কুমার পাল (২৪), লিটন আহম্মেদ (১৮) ও সাইফুল ইসলাম পলাশের (৩৫) বিরুদ্ধে মামলার অপরাধ পেনাল কোডের ৩০২/৩৪ ধারায় এবং আসামি রেদোয়ান সাব্বির, ফাতেমা খাতুন ময়না (৪১), এজাহারনামীয় পলাতক আসামি আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাখাওয়াত হোসেন রেমন, সাজ্জাদ আমিন এবং তদন্তে প্রাপ্ত আসামি রেজিস্ট্রার ডা. আব্দুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে মামলার অপরাধ পেনাল কোডের ৩০২/১০৯ ধারা মোতাবেক প্রাথমিকভাবে অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। মামলার গ্রেফতার হওয়া অপর আসামি মুহাম্মদ নিয়াজ মোর্শেদ ২০২১ সালের ৫ নভেম্বর চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে মারা যাওয়ায় মামলার দায় হতে তার অব্যাহতির আবেদন করা হয় চার্জশিটে।

২০২০ সালের ৯ নভেম্বর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. আনিসুল করিম শিপন রাজধানীর আদাবরে মাইন্ড এইড হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যান। সে সময় হাসপাতালে তাকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ আনা হয়। এ ঘটনায় ১০ নভেম্বর আদাবর থানায় আনিসুল করিম শিপনের বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ফাইজুদ্দিন আহম্মেদ বাদী হয়ে ১৫ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার দুই আসামি পলাতক রয়েছেন। তারা হলেন- মো. সাখাওয়াত হোসেন ও সাজ্জাদ আমিন।

এ মামলার আসামি মাইন্ড এইড হাসপাতালের মার্কেটিং ম্যানেজার আরিফ মাহমুদ জয়, পরিচালক ফাতেমা খাতুন ময়না, মুহাম্মাদ নিয়াজ মার্শেদ, কো-অর্ডিনেটর রেদোয়ান সাব্বির, কিচেন সেফ মো. মাসুদ, ওয়ার্ড বয় জোবায়ের হোসেন, ফার্মাসিস্ট মো. তানভীর হাসান, ওয়ার্ড বয় মো. তানিম মোল্লা, সজীব চৌধুরী, অসীম চন্দ্র পাল, মো. লিটন আহাম্মদ, মো. সাইফুল ইসলাম পলাশ কারাগারে আছেন।

অন্যদিকে মামলায় জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের রেজিস্ট্রার মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন জামিনে আছেন। এ মামলায় আসামি কিচেন সেফ মাসুদ খান, ওয়ার্ড বয় অসীম চন্দ্র পাল, মার্কেটিং ম্যানেজার আরিফ মাহমুদ জয়, সজিব চৌধুরী, হাসপাতালের ফার্মাসিস্ট মো. তানভীর হাসান ও ওয়ার্ড বয় মো. তানিম মোল্লা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

মামলার বাদী বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ফাইজুদ্দিন আহম্মেদ বলেন, আমার ছেলে আনিসুল করিম শিপন হত্যা মামলায় ১৫ আসামির বিরুদ্ধে পুলিশ চার্জশিট দাখিল করেছে। মামলাটি যেন দ্রুত নিষ্পত্তি হয়, এ প্রত্যাশা করছি। আসামিদের শাস্তি হলেই আমি শান্তি পাবো।


আরও খবর



বায়তুল মোকাররমে ঈদের প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১১ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১১ এপ্রিল ২০২৪ | ৮৫০জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে পবিত্র ঈদুল ফিতরের প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) সকাল ৭টায় এ জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এতে রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্তের মুসল্লিদের উপচেপড়া ভিড় নামে।

প্রথম জামায়াতে ইমামতি করেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মুফতি মাওলানা মো. মিজানুর রহমান। মুকাব্বির হিসেবে ছিলেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের মোয়াজ্জিন ক্বারী মো. ইসহাক।

জাতীয় মসজিদে ঈদের প্রথম জামাতে অংশ নিতে ভোর থেকেই বিভিন্ন প্রান্তের মুসল্লিরা আসতে শুরু করেন। নামাজের সময়ে মুসল্লিদের ঢল নামে। নামাজ শেষে দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনায় আল্লাহর কাছে দোয়া করেন। নামাজের পর একে অন্যের সঙ্গে কোলাকুলি করে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নেন।

জাতীয় মসজিদে বেলা ১১টা পর্যন্ত ঈদের পাঁচটি জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে দ্বিতীয় জামাত সকাল ৮টায় অনুষ্ঠিত হবে। ইমামতি করবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মুফতি মুহীউদ্দিন কাসেম। মুকাব্বির থাকবেন বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের মোয়াজ্জিন (অব.) হাফেজ মো. আতাউর রহমান।

তৃতীয় জামাত সকাল ৯টায় অনুষ্ঠিত হবে। ইমামতি করবেন আজিমপুর কবরস্থান মেয়র হানিফ জামে মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা ইমরান বিন নূরউদ্দীন। মুকাব্বির থাকবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খাদেম মো. আব্দুল হাদী।

চতুর্থ জামাত সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত হবে। ইমামতি করবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মুফাসসির ড. মো. আবু ছালেহ পাটোয়ারী। মুকাব্বির থাকবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খাদেম মো. জসিম উদ্দিন।

পঞ্চম ও সর্বশেষ জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল পৌনে ১১টায়। ইমামতি করবেন মিরপুর জামেয়া আরাবিয়া আশরাফিয়া ও এতিমখানার মুহতামিম মাওলানা সৈয়দ ওয়াহীদুজ্জামান। মুকাব্বির থাকবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খাদেম মো. রুহুল আমিন।

৫টি জামাতে কোন ইমাম অনুপস্থিত থাকলে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ভাষা শিক্ষক মাওলানা মোহাম্মদ নূর উদ্দীন বিকল্প ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।


আরও খবর



আজ ঈদ

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১১ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১১ এপ্রিল ২০২৪ | ৯১৫জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

রোজা শেষে আবারও এলো ঈদ। খুশির বার্তা নিয়ে ঈদের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে দেশজুড়ে। বাংলাদেশের আকাশে মঙ্গলবার শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা না যাওয়ায় এবার ৩০ রোজা পূর্ণ হলো। এক মাস সিয়াম সাধনার পর আজ উৎসবের আমেজে মেতে উঠবেনে দেশবাসী।

আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মুসলিম উম্মাহর প্রতি নিয়ামত হিসেবে ঈদ দান করেছেন। হাদিস শরিফে বর্ণিত হয়েছে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মদিনায় আগমন করলেন তখন মদিনাবাসীদের দুটো দিবস ছিল যে দিবসে তারা খেলাধুলা করতো। হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞেস করলেন, এ দুদিনের কী তাৎপর্য আছে? মদিনাবাসী উত্তর দিলেন, আমরা জাহেলি যুগে এ দুই দিনে খেলাধুলা করতাম। তখন তিনি বললেন, আল্লাহ রাব্বুল আলামিন এ দুই দিনের পরিবর্তে তোমাদের এর চেয়ে শ্রেষ্ঠ দুটো দিন দিয়েছেন। তা হলো ঈদুল আজহা ও ঈদুল ফিতর। (সুনানে আবু দাউদ: ১১৩৪)

ঈদের দিনের শুরু হয় ঈদের নামাজের মধ্য দিয়ে।ঈদের দিন সকালে পুরুষদের জন্য ঈদের নামাজ আদায় করা ওয়াজিব। বিশেষ পদ্ধতিতে অতিরিক্ত তাকবিরসহ জামাতে দুই রাকাত নামাজ আদায় করা এবং তারপর ঈদের খুতবা দেওয়া ও শ্রবণ করা। ঈদের নামাজ খোলা ময়দানে আদায় করা উত্তম। 

ঈদুল ফিতরের দিন দেশের প্রধান জামাত সকাল সাড়ে ৮টায় অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে। আবহাওয়া খারাপ হলে জাতীয় ঈদগাহে সম্ভব না হলে বায়তুল মোকাররমে জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৯টায়।

এছাড়া প্রতিবারের মতো এবারও পবিত্র ঈদুল ফিতরে বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদে পর্যায়ক্রমে ৫টি ঈদের নামাজের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৭টায়। দ্বিতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৮টায়।  তৃতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৯টায়।  চতুর্থ জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ১০টায়। পঞ্চম ও সর্বশেষ জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে।

পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিন  সর্বসাধারণের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরকারি বাসভবন বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও তার স্ত্রী ড. রেবেকা সুলতানা ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। আর নিজের সরকারি বাসভবন গণভবনে সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

এবার পবিত্র ঈদুল ফিতর এবং বাংলা নববর্ষে সরকারি কর্মচারীদের ছুটি শুরু হয়েছে ১০ এপ্রিল। অফিস খুলবে ১৫ এপ্রিল। তবে অনেকেই ৮ ও ৯ এপ্রিল দুদিনের ছুটি নিয়ে ঈদের ছুটি কাটাচ্ছেন টানা ১০ দিন। লম্বা ছুটির কারণে ঈদযাত্রায় ভোগান্তি হয়েছে কম। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ সময় নিয়ে নিজের শেকড়ে ফিরতে পেরেছেন।

কর্মব্যস্ত এই নগরীর সবাই যখন ঈদ উদযাপনে ঢাকা ছেড়েছেন তখন এই ঢাকা হয়ে উঠেছে এক অন্য শহর। বদলে গেছে রাজধানীর চিত্র, নেই চিরচেনা রূপ। এখন আর ঢাকার সড়কে ঘণ্টা পর ঘণ্টা বসে থাকতে হয় না। মুহূর্তেই চলে যাওয়া যাচ্ছে শহরের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে।

এদিকে দেশের সবার জন্য সুখী, আনন্দময় ও নিরাপদ ঈদুল ফিতরের কামনা করে সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, একমাস সিয়াম সাধনার পর আবার আমাদের মধ্যে পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর এসেছে। ঈদ মানে আনন্দ। আসুন আমরা আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশীসহ সবার সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করি।

রাজনৈতিক নেতাদের অধিকাংশই নিজ এলাকায় ঈদ উদযাপন করবেন এবার। কেউ কেউ ঢাকায় ঈদ করবেন, আবার কেউ নামাজ শেষে যাবেন এলাকায়। সব মিলিয়ে  নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করবেন তারা, যোগ দেবেন সামাজিক অনুষ্ঠানেও।


আরও খবর



জাতীয় ঈদগাহে ঈদুল ফিতরের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১১ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১১ এপ্রিল ২০২৪ | ৮৩৫জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

রাজধানীর হাইকোর্ট সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে পবিত্র ঈদুল ফিতরের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৮টায় ঈদ জামাত শুরু হয়।

ঈদের প্রধান জামাতে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন, প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, সংসদ সদস্য, সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি, রাজনৈতিক নেতা, সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন মুসলিম দেশের কূটনীতিকসহ অংশ নেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশা ও বয়সের লাখো মুসল্লি।

ঈদের প্রধান জামাতে ইমামতি করেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব হাফেজ মাওলানা মুফতি মোহাম্মদ রুহুল আমিন। দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ শেষে সমগ্র মুসলিম উম্মাহসহ দেশ ও জাতির কল্যাণ, সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। এরপর রাষ্ট্রপতি উপস্থিত সবার সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

সিটি কর্পোরেশন থেকে জানানো হয়, এবার জাতীয় ঈদগাহের ২৫ হাজার ৪০০ বর্গমিটার আয়তনের মূল প্যান্ডেলে একসঙ্গে ৩৫ হাজার মুসল্লি ঈদের জামাত আদায়ের ব্যবস্থা করা হয়। ছিল ঈদগাহে নারীদের জন্যও আলাদা নামাজের ব্যবস্থা।

এদিকে জাতীয় ঈদগাহ ছাড়াও জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে মোট পাঁচটি জামাত আদায়ের ব্যবস্থা রয়েছে।  ইসলামিক ফাউন্ডেশনের তথ্য অনুযায়ী, বায়তুল মোকাররমে সকাল ৭, ৮, ৯ ও ১০ ও ১০টা ৪৫ মিনিটে ঈদের জামাত হবে।


আরও খবর