পশ্চিম আফ্রিকার
দেশ বুরকিনা ফাসোর সামরিক শাসক পল-হেনরি দামিবাকে পদচ্যুত করে দেশটির সরকার ভেঙে দেওয়াসহ
সংবিধান স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছেন সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ইব্রাহিম ট্রাওরে। রাষ্ট্রীয়
টেলিভিশনে শুক্রবার সন্ধ্যায় দেওয়া এক বিবৃতিতে এই ঘোষণা দেওয়া হয়।
ইব্রাহিম ট্রাওরে
জানান, দেশটিতে সশস্ত্র গোষ্ঠীর তৎপরতা বেড়ে যাওয়া ও তা নিয়ন্ত্রণে সরকারের ব্যর্থতার
কারণে সেনাবাহিনীর একদল কর্মকর্তা দামিবাকে অপসারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। খবর আল জাজিরার।
দেশটিতে গত
আট মাসের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো সামরিক হস্তক্ষেপের ঘটনা ঘটলো। এর আগে নিরাপত্তাহীনতার
একই রকম অভিযোগ তুলে গত জানুয়ারিতে এক অভ্যুত্থানে সাবেক প্রেসিডেন্ট রস কাবোরেকে পদচ্যুত
করেছিলেন দামিবা।
আল-কায়েদা এবং
ইসলামিক স্টেট জঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গে সম্পৃক্ত বেশ কিছু বিদ্রোহি সংগঠনের সঙ্গে লড়াই
চালিয়ে যেতে রীতিমতো কোণঠাসা অবস্থা বুরকিনা ফাসোর। দেশটির ৪০ ভাগ এলাকা এখনও সরকারের
নিয়ন্ত্রণের বাইরে। দেশের নিরাপত্তা নিয়ে হতাশা বাড়ছেই।
এদিকে পশ্চিম
আফ্রিকার অর্থনৈতিক সহযোগিতা সংস্থা-ইকোওয়াস শুক্রবার এব বিবৃতিতে কঠোর ভাষায় এই অভ্যুত্থানের
বিরোধিতা করেছে। সংস্থাটি এই তৎপরতাকে অনুপোযুক্ত সময়ের বলে উল্লেখ করেছে যে, সম্প্রতি
সাংবিধানিক পন্থায় ফিরে যেতে দেশটি বেশ অগ্রগতি অর্জন করেছিল।
এদিকে, ক্ষমতা
দখল করেই শুক্রবার ট্রাওরে দেশের সীমান্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ
জারি করেছেন। পাশাপাশি বাতিল করা হয়েছে রাজনৈতিক ও সুশীল সমাজের সব ধরনের তৎপরতা। এছাড়া,
জারি করা হয়েছে রাত ৯টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত কারফিউ।
রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে
মারাত্মক অস্ত্রে সজ্জিত সেনাদের উপস্থিতিতে এক সামরিক কর্মকর্তা ট্রাওরের স্বাক্ষর
করা বিবৃতি পড়ে শোনান। এ সময়ে ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘নিরাপত্তার প্রশ্নে আমরা বিভিন্ন সময়ে দামিবাকে দৃষ্টি দেওয়ার অনুরোধ
করেছি।’
বিবৃতিতে আরও
বলা হয়, দামিবা সামরিক কর্মকর্তাদের সেনাবাহিনীর পুনর্গঠনের এসব প্রস্তাব বাতিল করে
দিয়েছিলেন। যার কারণেই বিগত সরকারকে বিদায় নিতে হয়েছিল।
বিবৃতিতে বলা
হয়, জাতীয় অংশীজনদের খুব তাড়াতাড়ি আমন্ত্রণ জানানো হবে নতুন অন্তর্বতী সনদ প্রণয়ন করতে
আর দায়িত্ব দেওয়া হবে কোনো বেসামরিক অথবা সামরিক প্রেসিডেন্ট নিযুক্ত করার।
অন্যদিকে, এই
ঘটনায় জাতিসংঘ উদ্বেগ প্রকাশ করে সবাইকে শান্ত থাকার আবেদন জানিয়েছে।
এ বিষয়ে জাতিসংঘের
মুখপাত্র স্টেফানে ডুজারিক বলেন, ‘বুরকিনা ফাসোর জন্য প্রয়োজন শান্তি ও স্থিতিশীলতা। দেশটির বিভিন্ন এলাকায়
সশস্ত্র গোষ্ঠীর তৎপরতার বিরুদ্ধে সংগ্রামে দেশটির প্রয়োজন একতা।’