Logo
শিরোনাম

ব্যাংক ঋণ নেওয়ায় রেকর্ড সরকারের

প্রকাশিত:সোমবার ১৮ জুলাই ২০২২ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৪ নভেম্বর ২০২৩ | ৮৬৫জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

ব্যাংকব্যবস্থা থেকে সরকারের ঋণ নেওয়ার রেকর্ড হয়েছে। সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরে ব্যাংকব্যবস্থা থেকে সরকারের নিট ঋণ নেওয়ার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৭২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা। এটি গত তিন অর্থবছরের মধ্যে সর্বোচ্চ এবং তার আগের অর্থবছরের চেয়ে প্রায় তিনগুণ বেশি। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো- অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে যে ঋণ নেওয়া হয়েছে, তার চেয়ে পৌনে তিনগুণ বেশি ঋণ নেওয়া হয়েছে শেষ মাস জুনে। ওই মাসে সরকারে নিট ঋণ নেওয়ার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪৬ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। অথচ অর্থবছরের প্রথম ১১ মাস পর্যন্ত নেওয়া হয়েছিল মাত্র ২৬ হাজার ৪৫০ কোটি টাকা। উন্নয়ন প্রকল্পের ব্যয় মেটানোসহ বাজেট বাস্তবায়নের চাপে শেষ সময়ে সরকারের ব্যাংক ঋণ বেড়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা। এদিকে চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরেও ব্যাংকব্যবস্থা থেকে রেকর্ড পরিমাণ ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে সরকার।

প্রতিবছরই বড় অঙ্কের ঘাটতি রেখে বাজেট পেশ করে আসছে সরকার। এই ঘাটতি মেটানো হয় দুটি উৎস থেকে। অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক খাত। বৈদেশিক খাত থেকে প্রয়োজনীয় অর্থ সহায়তা পাওয়া না গেলে অভ্যন্তরীণ উৎসের ওপরই বেশি নির্ভর করতে হয় সরকারকে। অভ্যন্তরীণ উৎসের মধ্যে রয়েছে ব্যাংকব্যবস্থা ও সঞ্চয়পত্র খাত। সাধারণত সরকার ব্যাংকব্যবস্থা থেকে বেশি ঋণ

নিলে বেসরকারি খাতের প্রয়োজনীয় ঋণ পাওয়া থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। সেই সঙ্গে ব্যাংক ঋণের সুদের হারও বৃদ্ধির আশঙ্কা থাকে। এতে বেসকারি বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত হয়। তাই অর্থনীতিবিদরা বরাবরই ব্যাংকব্যবস্থা থেকে যতটা সম্ভব কম ঋণ নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে আসছেন।

সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরের মূল বাজেটে ব্যাংকব্যবস্থা থেকে সরকারের ব্যাংক ঋণের নিট লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৭৬ হাজার ৪৫২ কোটি টাকা। যদিও সংশোধিত বাজেটে এই লক্ষ্যমাত্রা বাড়িয়ে ৮৭ হাজার ২৮৮ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে অর্থবছর শেষে সরকারের ব্যাংক ঋণ লক্ষ্যের নিচে থাকলেও বিগত কয়েক বছরের চেয়ে অনেক বেড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি বছরের ৩০ জুন শেষে ব্যাংকব্যবস্থা থেকে সরকারের ঋণ নেওয়ার মোট স্থিতি দাঁড়িয়েছে দুই লাখ ৭৪ হাজার ৮৬৪ কোটি টাকা। ২০২১ সালের ৩০ জুন শেষে যা ছিল ২ লাখ ২ হাজার ১১৫ কোটি টাকা। এ হিসাবে গত অর্থবছরজুড়ে ব্যাংকব্যবস্থা থেকে সরকারের নিট ঋণ নেওয়ার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭২ হাজার ৭৪৯ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে নেওয়া হয়েছে ৩১ হাজার ৪০৩ কোটি টাকা। আর বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো থেকে নেওয়া হয়েছে ৪১ হাজার ৩৪৬ কোটি টাকা।

২০২০-২১ অর্থবছরে সরকার বড় অঙ্কের ব্যাংক ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা দিয়েও শেষ পর্যন্ত অনেক কম ঋণ নিয়েছিল। ওই অর্থবছরের পুরো সময়ে ৮৪ হাজার ৯৮০ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে নিট ঋণ নেওয়ার পরিমাণ ছিল মাত্র ২৪ হাজার ২৯২ কোটি টাকা। তবে তার আগের ২০১৯-২০ অর্থবছরে ব্যাংকব্যবস্থা থেকে রেকর্ড ৭২ হাজার ২৪৬ কোটি টাকা ঋণ নেয় সরকার।

এদিকে চলতি অর্থবছরেও সরকারের ব্যাংক ঋণ নির্ভরতা অনেকটাই বাড়ানো হয়েছে। অর্থাৎ বাজেটে মোট ঘাটতি অর্থায়নের ৪৩ শতাংশের বেশি ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে করা হবে। এবার অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে এক লাখ ৪৬ হাজার ৩৪৫ কোটি টাকা ঋণ করার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। এর মধ্যে ব্যাংকব্যবস্থা থেকেই নেওয়া হবে ১ লাখ ৬ হাজার ৩৩৪ কোটি টাকা। এটি চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটের চেয়ে ৩৯ শতাংশ এবং সংশোধিত বাজেট লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২২ শতাংশ বেশি।

শুধু ব্যাংক ঋণই নয়, চলতি অর্থবছরের সঞ্চয়পত্র থেকেও ঋণ নেওয়ার পরিমাণ কিছুটা বাড়াতে চাইছেন অর্থমন্ত্রী। বাজেটে সঞ্চয়পত্র থেকে ৩৫ হাজার কোটি টাকা এবং অন্যান্য খাত থেকে ৫ হাজার ১ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য ধরা হয়েছে। ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে সঞ্চয়পত্র থেকে ৩২ হাজার কোটি টাকার ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য ছিল।

নিউজ ট্যাগ: ব্যাংক ঋণ

আরও খবর

এলপিজির দাম আরও বাড়ল

বৃহস্পতিবার ০২ নভেম্বর 2০২3