Logo
শিরোনাম

চাল-ডালে হৈ চৈ ডিমে উত্তাপ

প্রকাশিত:শনিবার ০৪ জুন ২০২২ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৪ নভেম্বর ২০২৩ | ১৮২০জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

কয়েকমাস ধরে অস্বাভাবিক চড়া নিত্যপণ্যের বাজার। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে নাজেহাল সাধারণ মানুষ। তেল-আটা-ময়দার পর এবার অস্থিরতা দেখা দিয়েছে চালের বাজারেও। যেন নৈরাজ্য চলছে চাল-ডাল-ডিমসহ নিত্যপণ্যের বাজারে। উৎপাদন বন্ধ করে যে যেভাবে পারছেন ধান মজুদ করছেন। ঘাটতির অজুহাতে বাড়ানো হচ্ছে চালসহ প্রায় সব নিত্যপণ্যের দর। এখনই এর লাগাম টানতে না পারলে সামনে ভয়ংকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

জানা গেছে, নওগাঁ বাইপাস সড়ক সংলগ্ন একটি চালকলে এখনো পুরাতন চাল পাওয়া যাচ্ছে। মূলত এটি নামেই চালকল, বছরজুড়ে এখানে চলে মজুদদারি। সূত্র মতে, নতুন করে চলতি মৌসুমের ধান মজুদ হচ্ছে চালকলটিতে। পাইকার ও খুচরা বিক্রেতাদের অভিযোগ, দেশের চালের বাজার নিয়ন্ত্রণ করতেন মিল মালিকরা। এখন তাতে দেশের শীর্ষস্থানীয় ৭-৮টি করপোরেট প্রতিষ্ঠান যোগ হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান যোগসাজশ করে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে প্রায় প্রতিদিনই বাড়াচ্ছে চালের দাম।

বাংলাদেশ হাসকিন মিল মালিক সমিতির সভাপতি আবদুর রশিদ বলেন, বোরোর মৌসুমে দেশে সব সময় চালের দাম কমে। কখনো দেখিনি চালের দাম বেড়েছে। এবার তা দেখতে হচ্ছে। তিনি জানান, বড় কিছু কোম্পানি ধান-চালের অবৈধ মজুদ গড়ে তুলছেন। এ কারণে বাজারে চালের দাম বাড়তি। পাইকারি বাজারের চেয়ে খুচরা বাজারে সব ধরনের চাল আরো ৫-৬ টাকা বাড়তি দরে বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বিক্রেতাদের অভিযোগ, পাইকারি বাজারে ঘণ্টায় ঘণ্টায় চালের দাম বাড়ানো হয়। এদিকে পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলেন, এর আগে তো মিলাররা ছিল, তারা মজুদ করে দাম তেমন একটা বাড়াত না। যেভাবেই হোক সরবরাহ নিশ্চিত করত। এখন চালের মৌসুমেও সরবরাহ নিশ্চিত নয়। বর্তমানে ৫০ শতাংশেরও কম চাল সরবরাহ হচ্ছে। তারা বলেন, এখন বড় বড় কোম্পানির হাতে চলে যাওয়ায় মাঝারি আকারের যেসব ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান ছিল, তা বন্ধ হয়ে গেছে। করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো এসে এমন অবস্থা করেছে যে এমন পরিস্থিতি বিগত ৩৫ বছরের ইতিহাসে আমরা দেখিনি। বাজার নিয়ন্ত্রণে মিল পর্যায়ে এখনই কঠোর নজরদারি করা না গেলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার আশঙ্কা পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতাদের।

এ ব্যাপারে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার প্রশ্ন রেখেছেন, বাজারে এখনো পুরোনো চাল বিক্রি হচ্ছে। তাহলে নতুন ধান কোথায় যাচ্ছে? মন্ত্রীর এ বক্তব্যের মধ্য দিয়েও ইঙ্গিত মেলে দেশের বিভিন্ন বড় বড় চাতাল মালিক, ব্যবসায়ী অধিক মুনাফার আশায় চাল মজুদ করছে। তবে এ তালিকায় বেশ কিছু বড় করপোরেট প্রতিষ্ঠানও যুক্ত হয়েছে। অপরদিকে মিলগেটে বেশি দামেও মিলছে না জিরাশাইল, কাটারি, নাজিরশাইল চাল। ফায়দা লুটতে দেশের করপোরেট হাউসগুলো ধান-চালের বাজারে অস্থিরতা তৈরি করেছে বলে অভিযোগ স্থানীয় চালকল মালিকদের। মোকামগুলোতে সপ্তাহের ব্যবধানে ৫০ কেজির বস্তায় চালের দর বেড়েছে আড়াইশ থেকে তিনশ টাকা পর্যন্ত।

জানা গেছে, গত কয়েক মাসে দফায় দফায় চালের দাম বেড়েছে। এ মূল্যবৃদ্ধির নেপথ্যে রয়েছে শক্তিশালী সিন্ডিকেট। বেশ কিছু করপোরেট প্রতিষ্ঠান ও মিল মালিকদের যোগসাজশে হু হু করে চালের দাম বাড়ছে। এক রাতেই রাজধানীতে পাইকারি পর্যায়ে কেজিতে সরু ও মোটা চালের দাম ৩-৭ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতি কেজি মিনিকেট ৬৩ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৬৮ টাকা করেছে। ব্রি ২৮ চালের নতুন দাম ৪৮-৫৫ টাকা। এছাড়া দিনের পর দিন ধরনা দিয়েও চাল না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন পাইকার ও খুচরা বিক্রেতারা।

রাজধানীর কাওরান বাজারের আল্লাহর দান রাইস এজেন্সির মালিক ও পাইকারি চাল বিক্রেতা মো. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, মিল থেকে প্রতি সপ্তাহে বাড়তি দরে চালের রেট দেয়া হচ্ছে। কিন্তু বোরো মৌসুমে এমন দাম বাড়ার চিত্র কখনো দেখিনি। এবারই প্রথম দেখলাম। মিল মালিকরা আগে দাম নিয়ে কারসাজি করলেও তাদের সঙ্গে বড় কিছু কোম্পানি যোগ হয়েছে। তারা ধান কিনে মজুদ করায় বাজারে কিছুটা ধানের সংকট হয়েছে। সেই অজুহাতে মিলাররা চালের দাম বাড়িয়েছে।

নওগাঁ ধান ও চাল আড়তদার সমিতির সভাপতি নিরোদ বরণ সাহা চন্দন বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে খাদ্য সংকট তৈরি হবে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রচার হয়েছে। যে কারণে অনেকেই ভাবছেন আমাদের দেশে চালের ক্রাইসিস তৈরি হবে। সে কারণে অনেকেই অবৈধ মজুদ করছেন। এ ধরনের অবৈধ মজুদদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানান তিনি।

কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, ধান উৎপাদন মৌসুমে চালের বাজার অস্থির। কিন্তু এটা হওয়ার কথা ছিল না। কেন এমন পরিস্থিতি হয়েছে তা বের করতে হবে। বিশ্ববাজারের সুযোগ নিয়ে ব্যবসায়ীরা যাতে চালের বাজার অস্থির করতে না পারেন সেদিকে নজর রাখতে হবে। কোনো অনিয়ম পেলে কঠোর শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

জানতে চাইলে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার বলেন, চালের বাজার স্থিতিশীল রাখতে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। মিল থেকে শুরু করে পাইকার ও খুচরা বিক্রেতাদের বেচাকেনার রসিদ দেখা হচ্ছে। অনিয়ম পেলে আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি দেয়া হবে। ভরা মৌসুমে বাড়ছে চালের দাম। এক মাসের ব্যবধানে মান ভেদে প্রতি কেজি চালের দাম ৫-১৫ টাকা বেড়েছে।

এমন অবস্থায় নিজ কার্যালয়ে বৈঠকে চালের দাম বৃদ্ধি নিয়ে অ্যাকশনে যেতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কেউ অবৈধভাবে চাল মজুদ করলে ব্যবস্থা নেয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার বিষয় মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানান, চাল ও তেল নিয়ে মার্কেট সার্ভে করে দ্রুত অ্যাকশনে যেতে বলা হয়েছে। তেলের মতো চাল ইস্যুতেও অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। মজুদ করলে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

এর আগে সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সভায় চালের দাম বৃদ্ধি নিয়ে ব্যবসায়ীদের সতর্ক করেছিলেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারও। ওই দিন খাদ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ধান কিনে মজুদ করার অসুস্থ প্রতিযোগিতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে ব্যবসায়ীদের মধ্যে। সবাই প্রতিযোগিতা করে ধান কিনছে, ভাবছে ধান কিনলেই লাভ। এ অসুস্থ প্রতিযোগিতা ভালো পরিণতি আনবে না। অধিকাংশ মিল মালিক বাজার থেকে ধান কিনলেও তারা উৎপাদনে যাচ্ছেন না। বাজারে নতুন চাল এখনো আসছে না। এখন বাজারে যে চাল পাওয়া যাচ্ছে তা গত বছরের পুরোনো। তাহলে নতুন ধান যাচ্ছে কোথায়? এ অবস্থা চলতে দেয়া হবে না। কে কত পরিমাণ ধান কিনছেন এবং কে কত পরিমাণ চাল ক্রাশিং করে বাজারে ছাড়ছেন তা খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের রিপোর্ট আকারে পাঠানোর কথা বলেন মন্ত্রী।

কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, হাওরে বন্যায় ৮০ হাজার টন চাল নষ্ট হওয়ার পরও এবার বোরো মৌসুমে ২ কোটি ৭ লাখ টনের ওপরে চাল উৎপাদিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগের (ইউএসডিএ) বৈশ্বিক দানাদার খাদ্যশস্য উৎপাদনবিষয়ক প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে গত বছরের তুলনায় এ বছর দেড় লাখ টন চাল বেশি উৎপাদন হবে। এমন চিত্রের পরও বাজারে চালের দাম বাড়ছে। এদিকে চাল-তেল-আটার পর এবার অস্থিরতা দেখা দিয়েছে ডালের বাজারেও। মাসের ব্যবধানে কেজিতে দাম বেড়েছে ২৫ টাকা। নিত্যপণ্যের ধারাবাহিকভাবে দাম বৃদ্ধিতে ক্রয়ক্ষমতা হারাচ্ছেন সীমিত আয়ের মানুষ। দাম বৃদ্ধির জন্য পাইকার ও আমদানিকারকদের দুষছেন খুচরা বিক্রেতারা। পাইকাররা বলছেন, বিশ্ববাজারে যে নৈরাজ্য চলছে তার প্রভাব পড়ছে স্থানীয় মোকামে।

কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, রাশিয়া ইউক্রেইনসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি হয় ডাল। ব্যবসায়ীরা বলছেন, যুদ্ধের প্রভাবে বেড়েছে জাহাজ ভাড়া, সঙ্গে ডলারের উচ্চমূল্য, তাই আমদানি খরচ বেড়ে যাওয়ায় অস্থির ডালের বাজার। আর খুচরা ব্যবসায়ীরা দুষছেন পাইকারদের। রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে, মোটা মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১১০ থেকে ১১৫ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ১০০ টাকা। দেশি ও নেপালি সরু দানার মসুর ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা, যা মাসখানেক আগেও পাওয়া যেত ২০ টাকা কমে। শুধু মসুর নয়, দাম বাড়ার তালিকায় আছে মুগ, ডাবলি, বুটসহ অন্যান্য ডালও। বাড়তি এই দাম পকেট কাটছে ক্রেতাদের।

টিসিবির পরিসংখ্যান বলছে, গত এক বছরে মোটা মসুর ডালের দাম বেড়েছে ৫৩ শতাংশ, আর মাঝারি ৪১ শতাংশ এবং ছোট দানা ২১ শতাংশ। অ্যাংকর ও ডাবলির দাম বেড়েছে কেজিতে ৪০ শতাংশ। এদিকে, বাজার নিয়ন্ত্রণে ৫ হাজার টন মসুর ডাল কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

সব পণ্যের দাম যখন বাড়ছে তখন থেমে নেই ডিমের বাজারও। কয়েক সপ্তাহের ব্যবধানে দফায় দফায় বেড়েছে ডিমের দাম। রাজধানীর খিলক্ষেত, ভাটারা, সোলমাইদ, নতুন বাজার, বাড্ডাসহ বেশ কিছু বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সপ্তাহ ব্যবধানে ডজনপ্রতি দাম বেড়েছে ১৫ থেকে ২০ টাকা। বর্তমানে প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩০-১৩৫ টাকায়। এক সপ্তাহ আগেও ডিমের ডজন ছিল ১১০ থেকে ১১৫ টাকা। আর ৪৫ টাকা হালি হিসেবে বিক্রি হচ্ছে দোকানগুলোতে। সপ্তাহের ব্যবধানে লাল ডিম ডজনপ্রতি ১১০ টাকা থেকে বেড়ে এখন ১৩০ টাকা। হাঁসের ডিম ১৩০ টাকা থেকে ১৬০ টাকায় দাঁড়িয়েছে। দেশি মুরগির ডিমে যেন আগুন। ১৭০ টাকা ডজন থেকে এখন ১৯০ টাকায় দাঁড়িয়েছে।

ছোলমাইদ এলাকার বাসিন্দা শরীফ শেখ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মাছ-মাংসের দাম বেড়ে গেছে। এরপর আবার ডিমের দামও বাড়ল। এক হালি ডিম কিনেছি ৪৫ টাকায়। অল্প টাকা বেতনে ঢাকায় থাকাই এখন দায় হয়ে গেছে। উৎপাদন কিংবা সরবরাহে ব্যাঘাত না ঘটলেও তবুও ডিমের দাম বাড়ায় হতাশ নিম্ন ও মধ্যবিত্তরা। ডিমের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণ সম্পর্কে খাতসংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, কম চাহিদার মৌসুমে এতদিন তারা ডিমে যে পরিমাণ লোকসান গুনেছেন, এখন দাম বাড়িয়ে তার কিছুটা হলেও সমন্বয়ের চেষ্টা করছেন। এদিকে কোরবানির ঈদের অজুহাতে মসলার বাজারেও অস্থিরতা দেখা গেছে।


আরও খবর

এলপিজির দাম আরও বাড়ল

বৃহস্পতিবার ০২ নভেম্বর 2০২3




বায়তুল মোকাররমে ঈদের প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১১ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১১ এপ্রিল ২০২৪ | ৮১৫জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে পবিত্র ঈদুল ফিতরের প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) সকাল ৭টায় এ জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এতে রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্তের মুসল্লিদের উপচেপড়া ভিড় নামে।

প্রথম জামায়াতে ইমামতি করেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মুফতি মাওলানা মো. মিজানুর রহমান। মুকাব্বির হিসেবে ছিলেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের মোয়াজ্জিন ক্বারী মো. ইসহাক।

জাতীয় মসজিদে ঈদের প্রথম জামাতে অংশ নিতে ভোর থেকেই বিভিন্ন প্রান্তের মুসল্লিরা আসতে শুরু করেন। নামাজের সময়ে মুসল্লিদের ঢল নামে। নামাজ শেষে দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনায় আল্লাহর কাছে দোয়া করেন। নামাজের পর একে অন্যের সঙ্গে কোলাকুলি করে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নেন।

জাতীয় মসজিদে বেলা ১১টা পর্যন্ত ঈদের পাঁচটি জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে দ্বিতীয় জামাত সকাল ৮টায় অনুষ্ঠিত হবে। ইমামতি করবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মুফতি মুহীউদ্দিন কাসেম। মুকাব্বির থাকবেন বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের মোয়াজ্জিন (অব.) হাফেজ মো. আতাউর রহমান।

তৃতীয় জামাত সকাল ৯টায় অনুষ্ঠিত হবে। ইমামতি করবেন আজিমপুর কবরস্থান মেয়র হানিফ জামে মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা ইমরান বিন নূরউদ্দীন। মুকাব্বির থাকবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খাদেম মো. আব্দুল হাদী।

চতুর্থ জামাত সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত হবে। ইমামতি করবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মুফাসসির ড. মো. আবু ছালেহ পাটোয়ারী। মুকাব্বির থাকবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খাদেম মো. জসিম উদ্দিন।

পঞ্চম ও সর্বশেষ জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল পৌনে ১১টায়। ইমামতি করবেন মিরপুর জামেয়া আরাবিয়া আশরাফিয়া ও এতিমখানার মুহতামিম মাওলানা সৈয়দ ওয়াহীদুজ্জামান। মুকাব্বির থাকবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খাদেম মো. রুহুল আমিন।

৫টি জামাতে কোন ইমাম অনুপস্থিত থাকলে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ভাষা শিক্ষক মাওলানা মোহাম্মদ নূর উদ্দীন বিকল্প ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।


আরও খবর



জাতীয় ঈদগাহে ঈদুল ফিতরের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১১ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১১ এপ্রিল ২০২৪ | ৮২০জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

রাজধানীর হাইকোর্ট সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে পবিত্র ঈদুল ফিতরের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৮টায় ঈদ জামাত শুরু হয়।

ঈদের প্রধান জামাতে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন, প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, সংসদ সদস্য, সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি, রাজনৈতিক নেতা, সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন মুসলিম দেশের কূটনীতিকসহ অংশ নেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশা ও বয়সের লাখো মুসল্লি।

ঈদের প্রধান জামাতে ইমামতি করেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব হাফেজ মাওলানা মুফতি মোহাম্মদ রুহুল আমিন। দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ শেষে সমগ্র মুসলিম উম্মাহসহ দেশ ও জাতির কল্যাণ, সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। এরপর রাষ্ট্রপতি উপস্থিত সবার সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

সিটি কর্পোরেশন থেকে জানানো হয়, এবার জাতীয় ঈদগাহের ২৫ হাজার ৪০০ বর্গমিটার আয়তনের মূল প্যান্ডেলে একসঙ্গে ৩৫ হাজার মুসল্লি ঈদের জামাত আদায়ের ব্যবস্থা করা হয়। ছিল ঈদগাহে নারীদের জন্যও আলাদা নামাজের ব্যবস্থা।

এদিকে জাতীয় ঈদগাহ ছাড়াও জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে মোট পাঁচটি জামাত আদায়ের ব্যবস্থা রয়েছে।  ইসলামিক ফাউন্ডেশনের তথ্য অনুযায়ী, বায়তুল মোকাররমে সকাল ৭, ৮, ৯ ও ১০ ও ১০টা ৪৫ মিনিটে ঈদের জামাত হবে।


আরও খবর



আজ ঈদ

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১১ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১১ এপ্রিল ২০২৪ | ৮৬৫জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

রোজা শেষে আবারও এলো ঈদ। খুশির বার্তা নিয়ে ঈদের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে দেশজুড়ে। বাংলাদেশের আকাশে মঙ্গলবার শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা না যাওয়ায় এবার ৩০ রোজা পূর্ণ হলো। এক মাস সিয়াম সাধনার পর আজ উৎসবের আমেজে মেতে উঠবেনে দেশবাসী।

আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মুসলিম উম্মাহর প্রতি নিয়ামত হিসেবে ঈদ দান করেছেন। হাদিস শরিফে বর্ণিত হয়েছে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মদিনায় আগমন করলেন তখন মদিনাবাসীদের দুটো দিবস ছিল যে দিবসে তারা খেলাধুলা করতো। হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞেস করলেন, এ দুদিনের কী তাৎপর্য আছে? মদিনাবাসী উত্তর দিলেন, আমরা জাহেলি যুগে এ দুই দিনে খেলাধুলা করতাম। তখন তিনি বললেন, আল্লাহ রাব্বুল আলামিন এ দুই দিনের পরিবর্তে তোমাদের এর চেয়ে শ্রেষ্ঠ দুটো দিন দিয়েছেন। তা হলো ঈদুল আজহা ও ঈদুল ফিতর। (সুনানে আবু দাউদ: ১১৩৪)

ঈদের দিনের শুরু হয় ঈদের নামাজের মধ্য দিয়ে।ঈদের দিন সকালে পুরুষদের জন্য ঈদের নামাজ আদায় করা ওয়াজিব। বিশেষ পদ্ধতিতে অতিরিক্ত তাকবিরসহ জামাতে দুই রাকাত নামাজ আদায় করা এবং তারপর ঈদের খুতবা দেওয়া ও শ্রবণ করা। ঈদের নামাজ খোলা ময়দানে আদায় করা উত্তম। 

ঈদুল ফিতরের দিন দেশের প্রধান জামাত সকাল সাড়ে ৮টায় অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে। আবহাওয়া খারাপ হলে জাতীয় ঈদগাহে সম্ভব না হলে বায়তুল মোকাররমে জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৯টায়।

এছাড়া প্রতিবারের মতো এবারও পবিত্র ঈদুল ফিতরে বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদে পর্যায়ক্রমে ৫টি ঈদের নামাজের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৭টায়। দ্বিতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৮টায়।  তৃতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৯টায়।  চতুর্থ জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ১০টায়। পঞ্চম ও সর্বশেষ জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে।

পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিন  সর্বসাধারণের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরকারি বাসভবন বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও তার স্ত্রী ড. রেবেকা সুলতানা ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। আর নিজের সরকারি বাসভবন গণভবনে সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

এবার পবিত্র ঈদুল ফিতর এবং বাংলা নববর্ষে সরকারি কর্মচারীদের ছুটি শুরু হয়েছে ১০ এপ্রিল। অফিস খুলবে ১৫ এপ্রিল। তবে অনেকেই ৮ ও ৯ এপ্রিল দুদিনের ছুটি নিয়ে ঈদের ছুটি কাটাচ্ছেন টানা ১০ দিন। লম্বা ছুটির কারণে ঈদযাত্রায় ভোগান্তি হয়েছে কম। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ সময় নিয়ে নিজের শেকড়ে ফিরতে পেরেছেন।

কর্মব্যস্ত এই নগরীর সবাই যখন ঈদ উদযাপনে ঢাকা ছেড়েছেন তখন এই ঢাকা হয়ে উঠেছে এক অন্য শহর। বদলে গেছে রাজধানীর চিত্র, নেই চিরচেনা রূপ। এখন আর ঢাকার সড়কে ঘণ্টা পর ঘণ্টা বসে থাকতে হয় না। মুহূর্তেই চলে যাওয়া যাচ্ছে শহরের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে।

এদিকে দেশের সবার জন্য সুখী, আনন্দময় ও নিরাপদ ঈদুল ফিতরের কামনা করে সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, একমাস সিয়াম সাধনার পর আবার আমাদের মধ্যে পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর এসেছে। ঈদ মানে আনন্দ। আসুন আমরা আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশীসহ সবার সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করি।

রাজনৈতিক নেতাদের অধিকাংশই নিজ এলাকায় ঈদ উদযাপন করবেন এবার। কেউ কেউ ঢাকায় ঈদ করবেন, আবার কেউ নামাজ শেষে যাবেন এলাকায়। সব মিলিয়ে  নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করবেন তারা, যোগ দেবেন সামাজিক অনুষ্ঠানেও।


আরও খবর