সীমান্তঘেঁষা চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে
পদ্মা নদীর পানি বাড়ছে। এতে উপজেলার পাকা ইউনিয়নের দক্ষিণ পাকা, মাঝিপাড়া ও ভূতপাড়া
এবং দুর্লভপুর ইউনিয়নের মনোহপুরের কুপপাড়া গ্রামে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছি। গত চারদিনে
একটি স্কুল, তিনটি মসজিদ, আড়াইশ বসতবাড়ি ও ২৩ হাজার বিঘা ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়ে
গেছে। হুমকির মুখে নদীর দুপাড়ের কয়েকশ স্থাপনা।
নদী তীরবর্তী বাসিন্দা ইমরাজ আলী বলেন,
‘১৫ দিন ধরেই এ
গ্রামে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে আমার প্রায় দেড় বিঘা জমির ধান নদীতে চলে গেছে। আমি অনেক
কষ্টে স্থানীয় এনজিও থেকে ৩০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে ধান চাষ করেছিলাম। কিন্তু এ ধান আর
আমার ঘরে উঠলো না।’
তিনি আরও বলেন, ‘গত পাঁচ-সাত বছর
থেকেই এ সময় আমাদের বাড়ি ভেঙে অন্য স্থানে নিয়ে যেতে হয়। কিন্তু আমাদের দেখার কেউ নাই।
পাই না কোনো সরকারি সুবিধাও।’
আনারুল ইসলাম নামে এক ধান চাষি বলেন, ‘অনেক কষ্টে দুই
বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছিলাম। কিন্তু মাত্র তিনদিনের ভাঙনে দেড় বিঘা ধান এখন নদীগর্ভে।
আমি এখন কী খেয়ে বাঁচবো। জমিতে আমার একটি পানির পাম্প ছিল সেটিও নদীতে হারিয়ে গেছে।‘
মানবাধিকার কমিশনের শিবগঞ্জ উপজেলার সাংগঠনিক
সম্পাদক আল-আমিন জুয়েল বলেন, আমার বাড়ি পাকা ইউনিয়নে। নদীভাঙনে আমার এলাকার মানুষ খুব
কষ্টে রয়েছে। প্রতিদিন স্থাপনা কিংবা বাড়িঘর নদীতে ভেঙে পড়ছে। আমার বাড়ির পাশে থাকা
একটি বিদ্যালয় এখন নদীগর্ভে। প্রায় ৩০০ বসতবাড়িও নদীগর্ভে।
তিনি আরও বলেন, জিওব্যাগ দিয়ে নদীভাঙন
রক্ষা হবে না। ফলে প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্থায়ীভাবে বাঁধ নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো)
ভারপ্রাপ্ত উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী ময়েজ উদ্দিন বলেন, উপজেলার দুর্লভপুর ও পাকা ইউনিয়নের
প্রায় ২৩ হাজার বিঘা জমি নদীতে তলিয়ে গেছে। দক্ষিণ পাকা এলাকার একটি উচ্চ বিদ্যালয়
নদীগর্ভে চলে গেছে। ঘরবাড়ি হারিয়ে দিশেহারা সাধারণ মানুষ। তবে আমরা ভঙনকবলিত এলাকা
পরিদর্শন করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে রিপোর্ট পাঠিয়েছি।