কয়েক দশকের মধ্যে প্রথমবারের মতো কমতে শুরু করেছে চীনের জনসংখ্যা। গত বছরের পরিসংখ্যান বিবেচনা আমলে নিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নতুন মাইলফলকটি দেশটির অর্থনীতিতে দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলবে। আগামী সপ্তাহে প্রকাশ হতে যাওয়া ওই নথি সম্পর্কে মন্তব্য করেছেন স্বাধীন জনসংখ্যাবিদ হে ইয়াফু। তার মতে, সম্ভবত রেকর্ড এক কোটি কম জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে ২০২২ সালে।
এর আগের বছর ২০২১ সালে চীনে এক কোটি ছয় লাখ শিশু জন্মায়। যা জন্মহার কমার টানা ষষ্ঠ বছর ও ১৯৪৯ সালে গণপ্রজাতন্ত্রী চীন প্রতিষ্ঠার পর থেকে সর্বনিম্ন। একই বছরে এক কোটি এক লাখ মানুষ মারা যায়, এর পেছনে আংশিকভাবে কোভিভ দায়ী। এত দ্রুত জন্মহার হ্রাস বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটির প্রবৃদ্ধিতে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। এর মধ্যে চীনে শ্রমশক্তি সঙ্কুচিত হয়েছে। সামনে দীর্ঘমেয়াদী গৃহ চাহিদা আরো কমে যাবে। পেনশন ব্যবস্থা সরকারের মাথাব্যথা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলাফল হিসেবে অর্থনীতির আকারে যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়িয়ে যেতে বেগ পেতে হবে চীনকে। অন্যদিকে চলতি বছরে ভারতের কাছে সবচেয়ে জনবহুল দেশের মর্যাদা হারাতে পারে।
চীন এর আগে কড়াভাবে ‘এক-সন্তান নীতি’ কার্যকর করলেও সম্প্রতি আরো সন্তান নেয়ার অনুমতি দিয়েছে।কিছু অঞ্চল দম্পতিদের সন্তান ধারণের জন্য প্রণোদনা দেয়া শুরু করেছে। মাতৃত্বকালীন ছুটির বাড়িয়ে দিয়েছে। শেনজেনে সন্তানের তিন বছর না হওয়া পর্যন্ত অভিভাবকদের ভর্তুকি দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে। তা সত্ত্বেও জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ক্রমশ কমছে।
২০১৯ সালে জাতিসংঘের পূর্বাভাস ছিল, ২০৩১ সালে চীনের জনসংখ্যা সর্বোচ্চ হবে এবং তারপরে হ্রাস পাবে। তবে গত বছর পূর্বাভাসটি সংশোধন করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়, চীন ২০৫০ সালের মধ্যে ১১ কোটি লোক হারাবে এবং শতাব্দীর শেষ নাগাদ তার বর্তমান আকারের প্রায় অর্ধেকে নেমে আসবে।