ইউক্রেনের চেরনোবিল
পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র ছেড়েছে রুশ বাহিনী। শুক্রবার (১ এপ্রিল) পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটির
কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।
ইউক্রেনের রাষ্ট্রীয়
পারমাণবিক সংস্থা এনারগোএটমের তথ্য অনুযায়ী, চেরনোবিল পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটির
কর্মীরা বলেছেন, বর্তমানে সেখানে কোনো বহিরাগত নেই।
জাতিসংঘের পরমাণু
শক্তি সংস্থা আইএইএ জানিয়েছে, ইউক্রেনের পক্ষ থেকে তাদের জানানো হয়েছে যে, রাশিয়ান
বাহিনী পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটির নিয়ন্ত্রণ হস্তান্তর করেছে এবং তারা নিজেদের সেনাদের
সরিয়ে নিয়েছে।
উল্লেখ্য, পশ্চিমা
দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য ২০০৮ সাল থেকে আবেদন করে ইউক্রেন। মূলত,
এ নিয়েই রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। তবে সম্প্রতি ন্যাটো ইউক্রেনকে
পূর্ণ সদস্যপদ না দিলেও ‘সহযোগী দেশ’ হিসেবে মনোনীত করায় দ্বন্দ্বের তীব্রতা
আরও বাড়ে। ন্যাটোর সদস্যপদের আবেদন প্রত্যাহারে চাপ প্রয়োগ করতে যুদ্ধ শুরুর দুই মাস
আগ থেকেই ইউক্রেন সীমান্তে প্রায় দুই লাখ সেনা মোতায়েন রাখে মস্কো। কিন্তু এই কৌশল
কোনো কাজে না আসায় গত ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দুই ভূখণ্ড দনেৎস্ক ও লুহানস্ককে
স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয় রাশিয়া। ঠিক তার দুদিন পর ২৪ তারিখ ইউক্রেনে সামরিক
অভিযানের ঘোষণা দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এরপর রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনী
স্থল, আকাশ ও সমুদ্রপথে ইউক্রেনে এই হামলা শুরু করে।
এ দিকে চলমান
এই যুদ্ধে ইতোমধ্যে ইউক্রেন ছেড়েছেন প্রায় ৩৯ লাখ মানুষ। এ ছাড়া জাতিসংঘ জানিয়েছে,
রুশ অভিযানে ইউক্রেনের এক হাজার ১৭৯ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।
যুদ্ধে ইউক্রেনের
১৩শ’ সেনা এবং রাশিয়ার ১৭ হাজার ৩০০ সৈন্য
নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে ইউক্রেন। তবে রাশিয়া বলছে, যুদ্ধে তাদের ১ হাজার ৩৫১ সেনা
নিহত এবং ইউক্রেনের আড়াই হাজারের বেশি সেনা নিহত হয়েছেন।
উল্লেখ্য, সাবেক
সোভিয়েত ইউনিয়নের চেরনোবিল পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে ১৯৮৬ সালেল ২৬ এপ্রিল ভয়াবহ
পারমাণবিক দুর্ঘটনা ঘটে। ওই দিনটি ‘চেরনোবিলের বিপর্যয়’ হিসেবে পরিচিত।
সোভিয়েতের পতনের
পর চেরনোবিল বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বর্তমান ইউক্রেনের অন্তর্ভুক্ত হয়। এই পারমাণবিক দুর্ঘটনাকে
স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ও বিপর্যয় হিসেবে মনে করা হয়ে থাকে।