ফরিদপুরের ভাঙ্গা
উপজেলার পৌর বাজার থেকে ৪০ ভরি স্বর্ণ ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগে মামলায় ভাঙ্গা থানার এএসআই
বাবুল হোসেন (৩৫) ও তার সহযোগীসহ দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে প্রেরণ করেছে
পুলিশ। পরে বাবুলের তথ্যমতে, থানার দক্ষিণ পাশের কাপুড়িয়া সদরদী গ্রামের একটি ভাড়া
বাসা থেকে চারটি পিন্ডবার (৪০ ভরি) স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়।
এর আগে স্বর্ণ
ছিনতাইয়ের ঘটনায় গতকাল বুধবার ভাঙ্গা থানায় ৩৯২/৪১১ ধারায় মামলা করেন পাপ্পু বিশ্বাস
(৩৭) নামের এক স্বর্ণ ব্যবসায়ী। তিনি নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার কামঠানা গ্রামের অসিত
বিশ্বাসের ছেলে। যশোরে পিসি চন্দ্র নামে তার একটি বৈধ জুয়েলারির দোকান রয়েছে।
মামলার ১নং
আসামি বাবুল হোসেন ঢাকা জেলার ধামরাই উপজেলার জালসা গ্রামের হারুন অর রশিদের ছেলে এবং
ভাঙ্গা থানার এএসআই হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। আর ২নং আসামি হলেন ভাঙ্গা পৌর সদরের হুগলাডাঙ্গি
গ্রামের মিজানুর রহমান মুন্সির ছেলে মেহেদী হাসান মৃদুল।
মামলা সূত্রে
জানা যায়, গত ৮ জুলাই ভাঙ্গা বাজারের স্বর্ণ ব্যবসায়ী পলাশ বনিকের কাছ থেকে ১১টি স্বর্ণের
পিন্ডবার ক্রয় করেন পাপ্পু বিশ্বাস। সেখান থেকে বের হয়ে রাত ১টার দিকে ভ্যানগাড়িতে
করে বন্ধু বিজয়কে নিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। বনিক জুয়েলারি দোকান থেকে একটু সামনে পৌঁছালে
ভাঙ্গা থানার এএসআই বাবুল হোসেন পাপ্পু ও তার সঙ্গীর আসার কারণ ও নাম ঠিকানা নেন। সব
সঠিক বলার পরেও বাবুল হোসেন পাপ্পুর পকেট তল্লাশি করে দুই পকেট থেকে ১১টি পিন্ডবার
হাতিয়ে নেন।
তখন ২নং আসামি
মেহেদী হাসান মৃদুল পাপ্পুর হাতের মোবাইলটি নিয়ে নেন। তিনি ক্রয় করার কথা বললেও আসামিরা
৪টি পিন্ডবার রেখে ৭টি পিন্ডবার ফেরত দেয়। চারটি (৪০ ভরি) পিন্ডবারের মূল্য আনুমানিক
২৮ লাখ ৬২ হাজার টাকা। পরে মামলা ও আটকের ভয় দেখিয়ে আসামিরা মোবাইলটি হাতে দিয়ে দ্রুত
স্থান ত্যাগ করতে বলেন।
পাপ্পু মোবাইল
পেয়ে ভয়ে বিষয়টি শুধু স্বর্ণ ব্যবসায়ী পলাশ বনিকের নিকট অবহিত করেন। ওই রাতে বাড়ি না
গিয়ে তিনি আত্মীয় মহাদেব মৃধার বাড়িতে রাত কাটান। পরের দিন বাড়িতে পৌঁছে সবার সঙ্গে
পরামর্শ করে গত মঙ্গলবার ভাঙ্গা থানায় এসে এএসআই বাবুল হোসেন ও মেহেদী হাসান মৃদুলকে
আসামি করে একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
পরে তদন্ত পূর্বক
ঘটনার সত্যতা মিললে বুধবার একটি মামলা রুজু হয়। সেই মামলায় আসামিদের গ্রেপ্তার করে
জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়। পরে আসামিদের তথ্যমতে, হুবহু চারটি ৯৯৯.৯ পিন্ডবার ১নং আসামির
বাসা থেকে উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভাঙ্গা সার্কেল) ফাহিমা কাদের চৌধুরী বলেন, ‘অন্যায়ের ব্যাপারে আমাদের পুলিশের ভূমিকা জিরো টলারেন্স। বিষয়টি তদন্তাধীন। এদিকে, ভাঙ্গা থানা অফিসার ইনচার্জ মো. সেলিম রেজা বলেন, স্বর্ণ ছিনতাই ঘটনায় মামলা হয়েছে। বাবুল এই থানার এএসআই ছিলেন বলেও জানান তিনি।
অন্যদিকে, মামলার
তদন্তকারী অফিসার এসআই গোলাম মোন্তাছির মারুফ বলেন, আসামি দুজনকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে
পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে ভাড়া
বাসার মালিক নসু মিয়া বলেন, ভাঙ্গা থানায় চাকরি করেন এএসআই বাবুল। তিনি আমার বাসায়
ভাড়া থাকেন। মৃদুল নামের ছেলেটি মাঝে মাঝেই যাওয়া আসা করতো বাবুল দারোগার বাসায়। এ
নিয়ে তাকে দুদিন বলেছিও। কিন্তু বাবুল দারোগা কর্ণপাত করেনি। তার বাসায় দুদিন ধরে কেউ
নাই, তালা মারা রয়েছে এবং মোবাইলও বন্ধ রয়েছে, এর বেশি জানি না।