২০১৯ সালের শেষ দিকে চীনে প্রথম করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছিল। কয়েক মাসের মধ্যেই তা বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। বিশ্বকে বিপর্যয়ে ফেলে দেয়া এ সংক্রমণ প্রতিরোধে সবচেয়ে কার্যকরী হিসেবে বিবেচিত হয়েছিল ফেস মাস্ক। এজন্য মহামারী নিয়ন্ত্রণের অংশ হিসেবে প্রতিটি দেশের সরকার মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করেছিল। এতে রাতারাতি বেড়ে যায় ফেস মাস্কের বিক্রি। বিশ্বজুড়ে বেড়ে যায় বাজারটির আকারও। তবে সংক্রমণ কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন দেশ মাস্ক ব্যবহারের বাধ্যবাধকতা তুলে দিয়েছে। ফলে ফেস মাস্কের বিক্রিও নিম্নমুখী হয়েছে।
বাজার ও ভোক্তা গবেষণা প্রতিষ্ঠান স্ট্যাটিস্টার তথ্য অনুসারে, কোভিড মহামারীতে ফেস মাস্কের বিক্রি কয়েক গুণ বেড়ে গিয়েছিল। স্ট্যাটিস্টা কনজিউমার মার্কেট ইনসাইটস শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালে বিশ্বজুড়ে ফেস মাস্ক বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ২৫০ কোটি ইউনিট। এ হিসেবে সার্জিক্যাল, এন৯৫-এর মতো রেসপিরেট ও কাপড়ের মাস্ক অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এরপর ২০২০ সালে ফেস মাস্ক বিক্রি ৩০ গুণ বেড়ে ৩৭ হাজার ৮৯০ কোটি ইউনিটে পৌঁছে গিয়েছিল। সে হিসেবে জনপ্রতি ৫০টি করে মাস্ক বিক্রি হয়েছে।
২০২০ সালে চাহিদা বেড়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ফেস মাস্কের দামও কয়েক গুণ বেড়ে গিয়েছিল। এরপর উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো সস্তা ফেস মাস্কের উৎপাদন বাড়াতে ঝাঁপিয়ে পড়ে। এতে ২০২১ সালে মাস্কের দাম কিছুটা কমে যায়। ওই বছর ২০২০ সালের তুলনায় ইউনিটের হিসাবে ফেস মাস্কের বিক্রি বাড়লেও উৎপাদনকারী সংস্থাগুলোর আয় প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছিল। গত বছর এটির বিক্রির পরিমাণ এবং সংস্থাগুলোর আয় কয়েক গুণ নেমে এসেছে বলে মনে করেন স্ট্যাটিস্টার বিশ্লেষকরা। কারণ অনেক দেশ মাস্ক ব্যবহারের বাধ্যবাধকতা বাদ দিয়েছে এবং অনেক মানুষ তাদের প্রাক-কোভিড অভ্যাসে ফিরে এসেছে।
এ অবস্থায় স্ট্যাটিস্টার বিশ্লেষকদের অনুমান, চলতি বছর ও আগামী বছরগুলোয় ফেস মাস্কের বিক্রি ক্রমহ্রাসমান থাকবে। পাশাপাশি আগামী বছরের মধ্যে মাস্কের ব্যবহার চিকিৎসাসেবায় নিয়োজিত এবং ক্লিনিক্যালভাবে দুর্বলদের মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে যাবে। তবে বিশ্বে কোভিডের নতুন বিপজ্জনক ধরন কিংবা অন্য কোনো মহামারী দেখা দিলে আবারো ফেস মাস্কের ব্যবহার বেড়ে যাবে।