Logo
শিরোনাম

চিংড়ি চাষ যেভাবে সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে

প্রকাশিত:সোমবার ০৪ জুলাই ২০২২ | হালনাগাদ:রবিবার ১২ নভেম্বর ২০২৩ | ১০৯০জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

ঝুঁকে বসে সারি সারি খাঁচাবন্দি কাঁকড়া পরীক্ষা করছিলেন আসাদুল ইসলাম। এক মনে খুঁজে চলেছিলেন, সদ্য খোলস ছেড়েছে এমন কাঁকড়া। এই অবস্থায় কাঁকড়ার খোলস নরম থাকে অল্পকিছু সময়ের জন্য। তাই দ্রুত সেগুলোকে ধরার পর রপ্তানির জন্য হিমায়িত করতে হয়। আসলে কাঁকড়া চাষের মাধ্যমে নিজের ভাগ্য বদলের স্বপ্নই দেখছেন আসাদুল। এমন স্বপ্ন দেখতেন তার বাবাও। তবে কাঁকড়া নয়, চিংড়িতে।

এ ইতিহাসের শুরু ১৯৮০'র দশকে। তখন থেকেই বাড়তে শুরু করে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা, বাড়ছিল জলোচ্ছ্বাস। এতে প্রতিনিয়ত নদীর কূল উপচে ফসলি জমিতে অনুপ্রবেশ শুরু করে নোনা পানি। নষ্ট হতে থাকে ক্ষেতের ফসল। এসময় আসাদুলের বাবাসহ উপকূলের লাখো চাষি ধান ক্ষেত লোনাপানিতে প্লাবিত করে- এসব ছোটবড় পুকুর বা ঘেরে ব্ল্যাক টাইগার প্রন প্রজাতির চিংড়ি চাষ শুরু করেন।

এতে সমর্থন দিয়েছিল তৎকালীন সরকারও। সরকারিভাবে চিংড়িকে রপ্তানির সম্ভাবনায় ভরপুর এক পণ্য হিসেবেও দেখা হয়। বেসরকারি সহায়তা সংস্থাগুলো ধান চাষ থেকে চিংড়ি চাষের রুপান্তরকে জলবায়ু সহনশীলতা তৈরির বুদ্ধিদীপ্ত সমাধান হিসেবে প্রশংসা করে। এভাবে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় ৬ লাখ ৮০ হাজার একর জমিকে চিংড়ি চাষের আওতায় আনা হয়। আসলে সেসময় মনে করা হয়েছিল, কৃষকেরা যেহেতু লোনা পানি ঠেকাতে পারছেন না, ফসলের ক্ষতি মাঝেমধ্যেই হচ্ছে- তাহলে লোনা পানিতে ক্ষেত ডুবিয়ে তাতে চিংড়ি চাষ করলে বরং বাড়তি দুই পয়সা রোজগার হবে। এই কৌশল একটা পর্যায় পর্যন্ত কাজেও এসেছিল। এসময় রপ্তানি বাজারে সফল হয়ে বাংলাদেশে 'সাদা সোনা' খ্যাতিলাভ করে চিংড়ি চাষ।

তবে মাত্র কয়েক দশক উচ্চ আয়ের রিটার্ন দেওয়ার পর দেখা দিতে থাকে বিপদ। প্রাকৃতিক পরিবেশের চরম বিপর্যয় তৈরি হয়; কয়েক দশক ধরে সেই দুরবস্থা আজো বহন করে চলেছে উপকূলের মানুষ। চিংড়ির ঘের নিয়ে খুন-জখমও নতুন কিছু নয়। এতে আরো প্রমাণিত হয়েছে জলবায়ুর সাথে ভুল উপায়ে মানিয়ে চলার চেষ্টা ভুক্তভোগীদের দুর্ভোগ বাড়ায় বৈ কমায় না। এতে তারা দুর্যোগ মোকাবিলায় আরো দুর্বল হয়ে পড়ে। 

লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্সের ভূগোলবিদ কাসিয়া পাপরোকি। তিনি 'থ্রেটেনিং ডিসটোপিয়া: দ্য গ্লোবাল পলিটিক্স অব ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যাডাপশন ইন বাংলাদেশ' গ্রন্থেরও লেখক। কাসিয়া বলেছেন, "চিংড়ি চাষকে এককালে জলবায়ু-পরিবর্তনের সাথে মানিয়ে চলার কৌশল বলা হয়েছিল। যেসব এলাকা ইতোমধ্যেই পানিতে তলিয়ে গেছে, সেখানে একে একমাত্র উপায় বলে উল্লেখ করেছিল উন্নয়ন সংস্থাগুলো। অথচ যেসব সামাজিক ও পরিবেশগত সমস্যা এড়ানোর জন্য এটি গ্রহণ করা হয়- এখন সেই সমস্যাগুলোই এটি তৈরি করছে।" 

সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, ঘন ঘন এবং আরো শক্তিশালী সাইক্লোনের আঘাত হানা, প্রচণ্ড জলোচ্ছ্বাস ও চরম তাপমাত্রার মতো নানান জলবায়ু বিপদ কবলিত বাংলাদেশ। এসব থেকে সুরক্ষিত থাকার চেষ্টাই যখন প্রাণান্তকরঠিক তখনই ব্যাপকহারে চিংড়ি চাষের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিণতির শিকার হয়েছে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল। 

কাঁকড়া চাষি আসাদুল ইসলাম থাকেন গাবুরা দ্বীপে। বঙ্গোপসাগরের কাছে খোলপেটুয়া নদী-বিধৌত এই দ্বীপ বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ সুন্দরবন দিয়েও বেষ্টিত। জলবায়ু সংবেদনশীল দ্বীপটিতে বাস করে ৪০ হাজার মানুষ। ২০২০ সালের মে মাসে এখানে আঘাত হানে সাইক্লোন আম্ফান। এতে দ্বীপটির কিছু অংশ পরবর্তী ১৮ মাস ধরে লোনাপানিতে ডুবে ছিল। এখন মানুষজন আবার তাদের মাটির ঘর মেরামত করছেন। আলকাতরা দিয়ে নৌকা নিশ্ছিদ্র করছেন, প্রস্তুতি নিচ্ছেন পরবর্তী সাইক্লোন মৌসুমের। দ্বীপটির ক্রমে ক্ষয় হতে থাকা উপকূল রক্ষা বাঁধ সংস্কারে ১০৮ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করেছে বাংলাদেশ সরকার। এই সংস্কার শেষ হলেও বাঁচার উপায় নেই গাবুরার, কারণ লোনাজল দ্বীপটিকে ভেতর থেকে বিষাক্ত করে রেখেছে।

গত তিন দশকে গাবুরার দুই-তৃতীয়াংশের বেশি কৃষিজমিকে চিংড়ির ঘেরে রূপান্তর করা হয়েছে। এসব ঘেরকে ডাঙ্গার বুকে লোনাপানির মরুভূমি বলছেন বিশেষজ্ঞরা। চিংড়ি চাষ করতে গিয়ে এসব ঘেরে বিপুল পরিমাণ সার ও অন্যান্য রাসায়নিক দেওয়া হচ্ছে- এতে এগুলো হয়ে উঠেছে রোগব্যাধি উৎপত্তির আদর্শস্থল। যেমন- প্রাদুর্ভাব বেড়েছে হোয়াইট স্পট বাকুলোভাইরাসের। এটি চিংড়ির দেহে সরাসরি আক্রমণ করে। কোনো ঘেরে এর প্রাদুর্ভাব ঘটলে মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে মারা পড়তে পারে সব চিংড়ি। রোগব্যাধি সৃষ্ট লোকসান পুষিয়ে নিতে চাষিরা প্রায়ই ঘের পুকুরে বেশি বেশি চিংড়ির রেণু ছাড়েন। কিন্তু এ কৌশল অটেকসই।

আসাদুল ইসলাম জানান, ১০ বছর আগে প্রথম এ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। অনেক চিংড়ি তাতে মারা পড়ে। ক্ষতি পোষাতে আগে যে পরিমাণ জায়গায় আমরা ৫০০ চিংড়ি চাষ করতাম- সেখানে পরে ১,০০০ এবং পরের বার ৩,০০০ পর্যন্ত চিংড়ি ছেড়েছি। কিন্তু, বেশি চিংড়ি একই পরিমাণ জায়গায় রাখায় রোগ-ব্যাধিও দিন দিন প্রকট হচ্ছে। চিংড়ি চাষিদের সাথে অন্য কৃষকদের বিরোধ সামাজিক অশান্তি বৃদ্ধি করছে।

 কৃষকদের অভিযোগ, ঘেরের লোনা পানি চুইয়ে আসছে তাদের ক্ষেতে। পরিবেশবিদরাও বলছেন, চিংড়ির ঘেরে দেওয়া খাদ্য ও সার স্থানীয় জীববৈচিত্র্যকে ধ্বংস করছে। স্থানীয় বেকার মানুষের অভিযোগ, ধান উৎপাদনে যে পরিমাণ শ্রমিক দরকার হয়, তার চেয়ে সামান্য অংশই দরকার হয় ঘেরে। এলাকার ক্ষুধার্ত মানুষ চেয়ে চেয়ে দেখে, এককালে যে জমি তাদের অন্নের সংস্থান করতো তা এখন রপ্তানি পণ্য উৎপাদনে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। প্রভাবিত হয়েছে খাবার পানিও, উপকূলীয় বাংলাদেশের ৫০ শতাংশের বেশি ভূগর্ভস্থ পানির জলাধারকে দূষিত করেছে লবণের অনুপ্রবেশ। এজন্য সাইক্লোন ও জলোচ্ছ্বাস অনেকাংশে দায়ী হলেও, লোনা পানিতে অ্যাকুয়াকালচার কৃষিও দায়ী।

গাবুরায় মিঠাপানি উত্তোলনে সক্ষম গভীর নলকূপের সংখ্যা মাত্র একটি। এজন্য খাবার পানি, গোসল ও কাপড় ধোয়া ইত্যাদি কাজে ব্যবহারের জন্য বৃষ্টির পানি ধরে রাখে এমন ছয়টি পুকুরের ওপর নির্ভরশীল এলাকাবাসী। ২০১৯ সালের এক সরকারি গবেষণার তথ্যমতে, এসব পুকুরের মধ্যে তিনটি ব্যবহার হচ্ছিল অ্যাকুয়াকালচারে। আর নিরাপদ খাবার পানি মিলতো মাত্র একটি পুকুর থেকে। মিঠাপানির সংকট নারীদের ওপর প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি করেছে, বেড়েছে তাদের লিঙ্গবৈষম্য। যেসব এলাকায় উচ্চ লবণাক্ততা রয়েছে, সেখানকার নারী ও কন্যা শিশুদের পরিবারের জন্য খাবার পানি সংগ্রহে কমপক্ষে সাড়ে তিন কিলোমিটার দূরে যেতে হয়।   বাংলাদেশ দ্রুত উন্নয়নশীল একটি দেশ। লোনাপানিতে মৎস সম্পদ চাষ অর্থনীতিতে অবদানও রাখছে। করোনা মহামারির বৈশ্বিক সরবরাহ চক্রে ব্যাঘাত সৃষ্টি হওয়ার আগে ২০১৯ সালে বাংলাদেশ ৩০ হাজার টন চিংড়ি রপ্তানি করেছে, যার বাজারমূল্য ছিল প্রায় ৩৫০ মিলিয়ন ডলার। 

কাসিয়া পাপরোকি জানান, ১৯৮০'র দশক থেকে উন্নয়ন সংস্থাগুলো উপকূলীয় এলাকার মানুষের দারিদ্র্য দূরীকরণের উপায় হিসেবে চিংড়ি চাষকে উৎসাহিত করেছে। অথচ এর সামাজিক উদ্বেগগুলিকে তারা পরোয়া করেনি। আর এখন গবেষণা বলছে, এতে দারিদ্র্য দূরীকরণে খুব সামান্যই অবদান যোগ হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই শিল্প থেকে সিংহভাগ আয়ের সুবিধা পাচ্ছে রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী মধ্যস্বত্বভোগী ও ধনী জমি মালিকেরা। স্থানীয়ভাবে প্রায়ই এই গোষ্ঠীকে বলা হয়- চিংড়ি মাফিয়া। এই বাণিজ্যের আধিপত্য ধরে রাখতে তারা প্রায়ই হুমকিধামকি ও বলপ্রয়োগ করে।

এমন মারাত্মক এক ঘটনার বিবরণ দিয়েছেন গাবুরা থেকে ৪০ মাইল উত্তরের এক গ্রামবাসী ও কৃষক তপন গোয়ালদার। তিনি জানান, ১৯৯০ এর দশকে স্থানীয় এক ধনী ব্যবসায়ী গুণ্ডাপাণ্ডা ভাড়া করে এনে জোরপূর্বক একটি বাঁধ কেটে দিতে আসে। ওই এলাকার কৃষিজমি যাতে লোনাপানিতে ভেসে যায় এবং সেগুলো যাতে দখল করে চিংড়ি চাষ করা যায়- সেজন্যই এ চেষ্টা করে ওই ব্যক্তি। আমরা জোর প্রতিবাদ জানিয়েছিলাম। আমরা আমাদের গাছ, ভূমি, মিঠাপানির পুকুর- আমাদের সর্বস্ব জীবিকা এভাবে ধ্বংস হতে দিয়ে চাইনি।

দুই পক্ষের মুখোমুখি অবস্থানের সময় গুণ্ডারা একজন নারীকে হত্যা করে। তারপরও তপন গোয়ালদারসহ অন্য কৃষকেরা প্রতিরোধ চালিয়ে যান। তাদের প্রতিরোধের কারণেই আজো গ্রামটির মাঠে মাঠে সবুজ ধানগাছের দেখা মিলে। দেখা যায়, চোখজুড়ানো সবজি বাগানও। উপকূলের অন্যান্য এলাকাতেও এ ধরনের প্রতিরোধ হয়েছে। কিন্তু, দুর্ভাগ্য গাবুরার। এখানকার উপকূল রক্ষাবাঁধের অনেক জায়গায় ফাটল রয়েছে, কিছু  জায়গায় পাইপের মাধ্যমে লোনাপানি টেনে নিচ্ছে চিংড়ি ঘেরের মালিকেরা। ঘূর্ণিঝড় আম্ফানেও দুর্বল হয়েছে দ্বীপ রক্ষাবাঁধ।  

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের একজন প্রকৌশলী জানান, বাঁধ পুনর্নিমাণের সময় স্থানীয়দের সাথে সংঘাত এড়াতে চিংড়ির ঘেরগুলোকে নির্দিষ্ট এলাকাতে রাখার উদ্যোগ নেওয়া হবে।

তবে দুর্নীতি-বিরোধী সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের তদন্তে উঠে এসেছে, স্থানীয় রাজনীতিবিদ ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা প্রায়ই উপকূল রক্ষা বাঁধ কাটার মীমাংসায় চিংড়ি চাষিদের পক্ষ নেন। ২০২০ সালে প্রকাশিত সংস্থাটির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, একারণে এখনও অবৈধভাবে বাঁধ কাঁটার ঘটনা ঘটছে।

নিউজ ট্যাগ: চিংড়ি চাষ

আরও খবর

শখের নার্সারিতে সফল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মনির

মঙ্গলবার ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

জয়পুরহাটে ৮৫৫ হেক্টর জমিতে ভুট্টার চাষ

মঙ্গলবার ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২৩




আজ ঈদ

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১১ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১১ এপ্রিল ২০২৪ | ৮৬৫জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

রোজা শেষে আবারও এলো ঈদ। খুশির বার্তা নিয়ে ঈদের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে দেশজুড়ে। বাংলাদেশের আকাশে মঙ্গলবার শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা না যাওয়ায় এবার ৩০ রোজা পূর্ণ হলো। এক মাস সিয়াম সাধনার পর আজ উৎসবের আমেজে মেতে উঠবেনে দেশবাসী।

আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মুসলিম উম্মাহর প্রতি নিয়ামত হিসেবে ঈদ দান করেছেন। হাদিস শরিফে বর্ণিত হয়েছে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মদিনায় আগমন করলেন তখন মদিনাবাসীদের দুটো দিবস ছিল যে দিবসে তারা খেলাধুলা করতো। হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞেস করলেন, এ দুদিনের কী তাৎপর্য আছে? মদিনাবাসী উত্তর দিলেন, আমরা জাহেলি যুগে এ দুই দিনে খেলাধুলা করতাম। তখন তিনি বললেন, আল্লাহ রাব্বুল আলামিন এ দুই দিনের পরিবর্তে তোমাদের এর চেয়ে শ্রেষ্ঠ দুটো দিন দিয়েছেন। তা হলো ঈদুল আজহা ও ঈদুল ফিতর। (সুনানে আবু দাউদ: ১১৩৪)

ঈদের দিনের শুরু হয় ঈদের নামাজের মধ্য দিয়ে।ঈদের দিন সকালে পুরুষদের জন্য ঈদের নামাজ আদায় করা ওয়াজিব। বিশেষ পদ্ধতিতে অতিরিক্ত তাকবিরসহ জামাতে দুই রাকাত নামাজ আদায় করা এবং তারপর ঈদের খুতবা দেওয়া ও শ্রবণ করা। ঈদের নামাজ খোলা ময়দানে আদায় করা উত্তম। 

ঈদুল ফিতরের দিন দেশের প্রধান জামাত সকাল সাড়ে ৮টায় অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে। আবহাওয়া খারাপ হলে জাতীয় ঈদগাহে সম্ভব না হলে বায়তুল মোকাররমে জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৯টায়।

এছাড়া প্রতিবারের মতো এবারও পবিত্র ঈদুল ফিতরে বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদে পর্যায়ক্রমে ৫টি ঈদের নামাজের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৭টায়। দ্বিতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৮টায়।  তৃতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৯টায়।  চতুর্থ জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ১০টায়। পঞ্চম ও সর্বশেষ জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে।

পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিন  সর্বসাধারণের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরকারি বাসভবন বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও তার স্ত্রী ড. রেবেকা সুলতানা ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। আর নিজের সরকারি বাসভবন গণভবনে সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

এবার পবিত্র ঈদুল ফিতর এবং বাংলা নববর্ষে সরকারি কর্মচারীদের ছুটি শুরু হয়েছে ১০ এপ্রিল। অফিস খুলবে ১৫ এপ্রিল। তবে অনেকেই ৮ ও ৯ এপ্রিল দুদিনের ছুটি নিয়ে ঈদের ছুটি কাটাচ্ছেন টানা ১০ দিন। লম্বা ছুটির কারণে ঈদযাত্রায় ভোগান্তি হয়েছে কম। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ সময় নিয়ে নিজের শেকড়ে ফিরতে পেরেছেন।

কর্মব্যস্ত এই নগরীর সবাই যখন ঈদ উদযাপনে ঢাকা ছেড়েছেন তখন এই ঢাকা হয়ে উঠেছে এক অন্য শহর। বদলে গেছে রাজধানীর চিত্র, নেই চিরচেনা রূপ। এখন আর ঢাকার সড়কে ঘণ্টা পর ঘণ্টা বসে থাকতে হয় না। মুহূর্তেই চলে যাওয়া যাচ্ছে শহরের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে।

এদিকে দেশের সবার জন্য সুখী, আনন্দময় ও নিরাপদ ঈদুল ফিতরের কামনা করে সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, একমাস সিয়াম সাধনার পর আবার আমাদের মধ্যে পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর এসেছে। ঈদ মানে আনন্দ। আসুন আমরা আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশীসহ সবার সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করি।

রাজনৈতিক নেতাদের অধিকাংশই নিজ এলাকায় ঈদ উদযাপন করবেন এবার। কেউ কেউ ঢাকায় ঈদ করবেন, আবার কেউ নামাজ শেষে যাবেন এলাকায়। সব মিলিয়ে  নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করবেন তারা, যোগ দেবেন সামাজিক অনুষ্ঠানেও।


আরও খবর



বায়তুল মোকাররমে ঈদের প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১১ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১১ এপ্রিল ২০২৪ | ৮১৫জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে পবিত্র ঈদুল ফিতরের প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) সকাল ৭টায় এ জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এতে রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্তের মুসল্লিদের উপচেপড়া ভিড় নামে।

প্রথম জামায়াতে ইমামতি করেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মুফতি মাওলানা মো. মিজানুর রহমান। মুকাব্বির হিসেবে ছিলেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের মোয়াজ্জিন ক্বারী মো. ইসহাক।

জাতীয় মসজিদে ঈদের প্রথম জামাতে অংশ নিতে ভোর থেকেই বিভিন্ন প্রান্তের মুসল্লিরা আসতে শুরু করেন। নামাজের সময়ে মুসল্লিদের ঢল নামে। নামাজ শেষে দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনায় আল্লাহর কাছে দোয়া করেন। নামাজের পর একে অন্যের সঙ্গে কোলাকুলি করে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নেন।

জাতীয় মসজিদে বেলা ১১টা পর্যন্ত ঈদের পাঁচটি জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে দ্বিতীয় জামাত সকাল ৮টায় অনুষ্ঠিত হবে। ইমামতি করবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মুফতি মুহীউদ্দিন কাসেম। মুকাব্বির থাকবেন বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের মোয়াজ্জিন (অব.) হাফেজ মো. আতাউর রহমান।

তৃতীয় জামাত সকাল ৯টায় অনুষ্ঠিত হবে। ইমামতি করবেন আজিমপুর কবরস্থান মেয়র হানিফ জামে মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা ইমরান বিন নূরউদ্দীন। মুকাব্বির থাকবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খাদেম মো. আব্দুল হাদী।

চতুর্থ জামাত সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত হবে। ইমামতি করবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মুফাসসির ড. মো. আবু ছালেহ পাটোয়ারী। মুকাব্বির থাকবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খাদেম মো. জসিম উদ্দিন।

পঞ্চম ও সর্বশেষ জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল পৌনে ১১টায়। ইমামতি করবেন মিরপুর জামেয়া আরাবিয়া আশরাফিয়া ও এতিমখানার মুহতামিম মাওলানা সৈয়দ ওয়াহীদুজ্জামান। মুকাব্বির থাকবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খাদেম মো. রুহুল আমিন।

৫টি জামাতে কোন ইমাম অনুপস্থিত থাকলে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ভাষা শিক্ষক মাওলানা মোহাম্মদ নূর উদ্দীন বিকল্প ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।


আরও খবর



জাতীয় ঈদগাহে ঈদুল ফিতরের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১১ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১১ এপ্রিল ২০২৪ | ৮২০জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

রাজধানীর হাইকোর্ট সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে পবিত্র ঈদুল ফিতরের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৮টায় ঈদ জামাত শুরু হয়।

ঈদের প্রধান জামাতে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন, প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, সংসদ সদস্য, সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি, রাজনৈতিক নেতা, সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন মুসলিম দেশের কূটনীতিকসহ অংশ নেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশা ও বয়সের লাখো মুসল্লি।

ঈদের প্রধান জামাতে ইমামতি করেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব হাফেজ মাওলানা মুফতি মোহাম্মদ রুহুল আমিন। দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ শেষে সমগ্র মুসলিম উম্মাহসহ দেশ ও জাতির কল্যাণ, সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। এরপর রাষ্ট্রপতি উপস্থিত সবার সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

সিটি কর্পোরেশন থেকে জানানো হয়, এবার জাতীয় ঈদগাহের ২৫ হাজার ৪০০ বর্গমিটার আয়তনের মূল প্যান্ডেলে একসঙ্গে ৩৫ হাজার মুসল্লি ঈদের জামাত আদায়ের ব্যবস্থা করা হয়। ছিল ঈদগাহে নারীদের জন্যও আলাদা নামাজের ব্যবস্থা।

এদিকে জাতীয় ঈদগাহ ছাড়াও জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে মোট পাঁচটি জামাত আদায়ের ব্যবস্থা রয়েছে।  ইসলামিক ফাউন্ডেশনের তথ্য অনুযায়ী, বায়তুল মোকাররমে সকাল ৭, ৮, ৯ ও ১০ ও ১০টা ৪৫ মিনিটে ঈদের জামাত হবে।


আরও খবর