Logo
শিরোনাম

চলতি বছরের দ্বিতীয়ার্ধেই মন্দায় পড়তে পারে ইউরোপ

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০৫ জুলাই ২০২২ | হালনাগাদ:শনিবার ২৫ নভেম্বর ২০২৩ | ৮০৫জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের পর থেকেই ঊর্ধ্বমুখী জ্বালানির দাম। রাশিয়া সম্পূর্ণভাবে সরবরাহ বন্ধ করে দিতে পারে এমন উদ্বেগের মধ্যে ইউরোপে জ্বালানি তেল ও গ্যাসের দাম বাড়ছে। ক্রমবর্ধমান রয়েছে জ্বালানির বাইরের পণ্যের দামও। পাশাপাশি অঞ্চলটির বৃহত্তম রফতানি বাজার যুক্তরাষ্ট্রে ভোক্তা চাহিদায় পতন দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় ইউরোপীয় অর্থনীতিতে মন্দার আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা। জাপানি বিনিয়োগ ব্যাংক নোমুরার মতে, চলতি বছরের দ্বিতীয়ার্ধ থেকেই এ অঞ্চলের অর্থনীতিতে সংকোচন দেখা দেবে। খবর দ্য গার্ডিয়ান।

নোমুরার আশঙ্কা, ২০২৩ সালের গ্রীষ্ম পর্যন্ত ইউরোপীয় অর্থনীতিতে মন্দা অব্যাহত থাকতে পারে। এ সময়ে অঞ্চলটির মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) ১ দশমিক ৭ শতাংশ সংকুচিত হবে। কভিডজনিত লকডাউন তুলে নেয়ার পরে ২০২১ সালের মাঝামাঝি থেকেই শীর্ষ অর্থনীতিগুলোয় জ্বালানি দাম ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে। তবে ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের পরে সরবরাহ নিয়ে অনিশ্চয়তায় জ্বালানির দাম ত্বরান্বিত হয়।

ইউক্রেনে আগ্রাসনের পর থেকেই পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার বিস্তৃত খাতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এমনকি দেশগুলো রুশ জ্বালানি আমদানি বন্ধ করতেও চেষ্টা করছে। যদিও দেশগুলো এখনো জ্বালানি সরবরাহ নিয়ে রাশিয়ার ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল। এর প্রতিক্রিয়ায় মস্কোও ইউরোপের কয়েকটি দেশে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে। পাশাপাশি সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ করে দিতেও হুমকি দিচ্ছে দেশটি। এরই মধ্যে রাশিয়া নর্ড স্ট্রিম-১ পাইপলাইনের মাধ্যমে জার্মানিতে, তুর্কস্ট্রিম পাইপলাইনের মাধ্যমে বুলগেরিয়ায় এবং ইয়ামাল পাইপলাইনের মাধ্যমে পোল্যান্ডে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে।

নোমুরার একজন অর্থনীতিবিদ জর্জ বাকলি বলেন, জ্বালানির দাম বৃদ্ধি, মূল্যস্ফীতি, ভূরাজনৈতিক ঝুঁকি ও অনিশ্চয়তার মতো বৈশ্বিক অবস্থার সঙ্গে লড়াই করছে ইউরোপ। এজন্য আমরা মনে করছি, যুক্তরাষ্ট্রের মতো ইউরোপীয় অর্থনীতিগুলোও মন্দার পরিণতি ভোগ করবে।

এরই মধ্যে জুনে মূল্যস্ফীতি বার্ষিক ৮ দশমিক ৬ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। এ হার ১৯৯৯ সালে ব্লকটি তৈরি হওয়ার পর থেকে সর্বোচ্চ। গত সপ্তাহে মার্কিন বিনিয়োগ ব্যাংক জেপি মরগানের বিশ্লেষকরা বলেন, রাশিয়া জ্বালানি তেলের মূল্য পর্বতসম উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারে। কারণ বৃহৎ অর্থনীতির জোট জি৭ গ্রুপের মূল্য বেঁধে দেয়ার প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিতে দেশটি জ্বালানি তেলের উৎপাদন কমিয়ে দিতে পারে। বিশ্লেষকরা বলেছেন, রাশিয়া যদি দিনে ৫০ লাখ ব্যারেল জ্বালানি তেল উত্তোলন কমায় তবে দাম প্রতি ব্যারেল তিন গুণ বেড়ে ৩৮০ ডলারে উন্নীত হতে পারে। গত সপ্তাহ শেষে ফিউচার মার্কেটে সেপ্টেম্বরে সরবরাহের জন্য নির্ধারিত আন্তর্জাতিক বাজার আদর্শ ব্রেন্টের দাম ছিল ব্যারেলপ্রতি ১১১ ডলার। জেপি মরগানের বিশ্লেষকরা বলেছে, রুশ সরকার পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার প্রতিশোধ হিসেবে উত্তোলন কমিয়ে দিতে পারে। কারণ বৈশ্বিক জ্বালানি বাজারে রাশিয়ার শক্তিশালী প্রভাব রয়েছে।

ইউরোপের বৃহত্তম অর্থনীতি জার্মানি নর্ড স্ট্রিম-১ পাইপলাইন নিয়ে রাশিয়ার ওপর বিশেষভাবে দুর্বল। পরিকল্পিত বার্ষিক রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ১১ জুলাই থেকে গ্যাস পাইপলাইনটি ১০ দিনের জন্য বন্ধ রাখার কথা রয়েছে। জার্মান অর্থমন্ত্রী রবার্ট হ্যাবেক গত সপ্তাহে বলেছিলেন, সরকার আশঙ্কা করছে রাশিয়া পাইপলাইনটি পুনরায় চালু করতে অস্বীকৃতি জানাবে। এমনটা হলে শীতকালে গ্যাসের তীব্র ঘাটতি তৈরি হবে।

সেন্টার ফর ইকোনমিকস অ্যান্ড বিজনেস রিসার্চের কি নুইফিল্ড ও জোনাস কেক বলেন, একটি বিষয় স্পষ্ট হয়ে উঠছে যে ইউরোপে গ্যাসের ঘাটতি একটি গুরুতর মন্দা তৈরি করবে। কারণ ইউরোপীয় দেশগুলো কেবল জ্বালানি আন্তঃসংযোগের মাধ্যমেই নয় বরং অত্যন্ত সমন্বিত সরবরাহ ব্যবস্থার মাধ্যমেও যুক্ত। অঞ্চলটিতে গ্যাস সরবরাহ কমে যাওয়া মানে জ্বালানি ব্যয় আরো বেড়ে যাবে। মূল্যস্ফীতির চাপ বেড়ে যাবে এবং পরিবারের প্রকৃত আয়ে আরো বেশি প্রভাব ফেলবে। সবমিলিয়ে এ অঞ্চলে মন্দা প্রায় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে।


আরও খবর

রাশিয়া সফরে যাচ্ছেন এরদোয়ান

মঙ্গলবার ২৯ আগস্ট ২০২৩