সম্প্রতি দেশজুড়ে আলোচিত সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে
রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪ শিক্ষার্থীর চুল কেটে দেওয়ার ঘটনার প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত
কমিটি। এজন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষক
ফারহানা ইয়াসমিনকে অভিযুক্ত করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করেছে কমিটি।
ওই তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২৬ সেপ্টেম্বর
সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষার হলে প্রবেশপথে
অভিযুক্ত শিক্ষক ফারহানা ইয়াসমিন নিজ হাতে ১৪ শিক্ষার্থীর চুল কেটে দেন।
ওই ঘটনার প্রতিবাদে ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে
শিক্ষার্থীরা সব পরীক্ষা বন্ধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। ৩০ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়
প্রশাসন ফারহানাকে সাময়িক বরখাস্ত করে। এ ঘটনা তদন্তের জন্য রবীন্দ্র অধ্যয়ন বিভাগের
চেয়ারম্যান লায়লা ফেরদৌসকে চেয়ারম্যান করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয়
প্রশাসন। কমিটি সরেজমিনে তদন্ত করে বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার
সোহরাব আলীর কাছে প্রতিবেদন জমা দেয়।
তদন্ত প্রতিবেদনের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের
রেজিস্ট্রার সোহরাব আলী বলেন, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পেয়ে শুক্রবার (২২ অক্টোবর) সিন্ডিকেট
সভা ডাকা হয়েছিল। সেখানে আইনগত বিষয়গুলো পর্যালোচনার জন্য ১০ কার্যদিবস সময় নিয়ে সভা
মুলতবি করা হয়। বুধবার (২৭ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) একটি তদন্ত
দল বিষয়টি তদন্ত করতে ক্যাম্পাসে আসবে। তারপর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এদিকে শিক্ষক ফারহানাকে স্থায়ীভাবে বরখাস্তের
দাবিতে আবারো উত্তাল হয়ে উঠেছে রবি ক্যাম্পাস। ২৪ অক্টোবর সকালে সিরাজগঞ্জ পৌর শহরের
বিসিক মোড় এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পাসের একাডেমিক ভবন ও কান্দাপাড়া এলাকায়
প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়ে বাইরে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। এতে দুপুর ২টা থেকে রাত
১০টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে রেজিস্ট্রারসহ ৩০ জন শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী বিশ্ববিদ্যালয়ের
অস্থায়ী একাডেমিক ভবন-১-এ অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন।
দুপুরের দিকে আন্দোলনরত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য
ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র শামীম হোসেন বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা
করেন। তাকে শাহজাদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যদিকে একই বিভাগের
প্রথম বর্ষের ছাত্র আবিদ হাসান নামের আরেক ছাত্র ব্লেড দিয়ে হাত কেটে আত্মহত্যার চেষ্টা
করলে অন্যরা তাকে নিবৃত্ত করেন।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের বিষয়ে রবীন্দ্র
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের রুটিন দায়িত্বে থাকা কোষাধ্যক্ষ আবদুল লতিফ বলেন, রেজিস্ট্রার
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সার্বিক বিষয় নিয়ে কথা বলছেন। আমরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনার
চেষ্টা করছি।