একটি সংসারের মূল চালিকা শক্তি হলো স্বামী স্ত্রীর বন্ধন ।আমরা সকলেই জানি,
যে সংসারে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে সম্পর্ক ভালো থাকে সে সংসার সুখী সংসার।কিন্তু আজ আমরা
জানব,কি কি নিয়ম মেনে চললে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে সম্পর্ক ভালো থাকে? সংসারে সামান্য কিছু নিয়ম নীতি মেনে চললে সংসার
সুখের হতে বাধ্য।
দাম্পত্য জীবনে ঝামেলা এড়াতে জানুন কিছু টিপস:
বিশ্বাস- সম্পর্ক এর বন্ধন মজবুত করে:
যেখানে বিশ্বাস, সেখানে আস্থা। যেখানে আস্থা সেখানে ভরসা। যেখানে ভরসা সেখানে
ভালবাসা। যেখানে ভালবাসা সেখানেই সম্পর্কের দৃঢ়তা। ভালোবাসা থাকলেই বিশ্বাস আসবে – এমনটা নয়। বিশ্বাস থাকলেই ভালোবাসা আসবে। বিশ্বাসের মধ্যেই তো থাকে ভালোবাসার
বীজ। এই ভালোবাসার বীজ বড় হলেই তো ফল হিসেবে দেয় সুদৃঢ় সম্পর্ক। বিশ্বাস হল সম্পর্কের
ভীত। ভীত যদি মজবুত না হয়, সম্পর্ক কিভাবে মজবুত হবে?
সম্মান- সম্পর্ক এর মাধুর্য বাড়িয়ে দেয়:
কে বলেছে সম্মান করাটা শুধু ছোটদের দায়িত্ব? বড়রাই কি শুধু সম্মান পাওয়ার
যোগ্য হয়? না, এমনটা নয়। ছোট বড় সবারেই একটা নির্দিষ্ট সম্মান আছে। তাই বাড়ীর সকলেরই
উচিৎ সকলকে সম্মানের মর্যাদা দেওয়া। তবে হ্যাঁ,
সম্মান দেওয়ার ওয়ে টা ভিন্ন হয়। ছোটদের জন্য এক রকম আর বড়দের জন্য এক রকম।
ক্ষমা- সম্পর্ক কে এক নিমেষে সুন্দর করে তুলে:
ক্ষমা এক পরম ধর্ম, এক বড় গুন। যারা কখনো কাউকে ক্ষমা করেনি, তাদের পক্ষে ক্ষমা
করাটা খুব জটিল কাজ। যে কোন কাজই শুরুতে কঠিন মনে হয়। দীর্ঘদিন করার ফলে ধীরে ধীরে
তা সহজ হয়ে যায়। ধরুন আপনার সাথে আপনার ভাইএর কোন বেপারে খুব বচসা হয়েছে। যদিও আপনার
ভাই এরই দোষ ছিল। শেষমেশ আপনি যেটা চাইছিলেন না সেটাই করতে হল। কারন তা না হলে আপনার
ভাই হুমকি দিচ্ছিল, আপনার ভাই এর কিছু অসুবিধেও হচ্ছিল। কিন্তু আপনি সেইরকম কোন সুযোগ
পাচ্ছেন না। এদিকে আপনি খুব রেগে আছেন। সেইদিনের ঘটনা কিছুতেই ভুলতে পারছেন না। এইরকম
কখনো কারো সাথে ফেস করেছেন? এই ক্ষেত্রে আপনি যদি আপনার ভাইকে মনে মনে ক্ষমা করে দেন,
আপনি অনেক হাল্কা বোধ করবেন। প্রকাশ্যে ক্ষমা করার দরকার নেই যতক্ষণ না অবধি উলটো দিক
থেকে অন্যজন ক্ষমা চাইছে। আপনার রাগ হচ্ছে তো মনে মনে। মনের রাগ দূর করার একমাত্র উপায়
মনে মনে ক্ষমা করে দেওয়া। আপনি ক্ষমা করে দিলে, ধীরে ধীরে ওই দিনের ঘটনা টা আপনি ভুলেই
যাবেন। তখন আবার ভাইয়ের সাথে কথা বলার ইচ্ছে হবে যা এতদিন ধরে ওই একটি ঘটনার জন্য
বন্ধ ছিল।
বন্ধু হয়ে থাকুন:
ভালো ও খারাপ সবসময়েই স্বামীর পাশে থাকুন। স্বামীকে সাহায্য করুন। ভালো পরামর্শ
দিন। তার যৌক্তিক কথায় সমর্থন করুন। স্বামীর সঙ্গে ভালো থাকার উৎকৃষ্ট উপায় হলো প্রশংসা
করা। তার মতামতের মূল্য দিন এবং দয়াশীল থাকুন। প্রশংসা পেলে স্বামী সবসময় আপনার ওপর
খুশি থাকবেন। তাই নিন্দা করবেন না এবং স্বামীর মা-বাবা ও আত্মীয়-স্বজনকে নিয়ে কটু মন্তব্য
করবেন না। নিজের বন্ধুদের সামনে স্বামীকে আনুন এবং পরিচয় করিয়ে দিন।
সন্তুষ্ট থাকুন:
নিজে যা চান, তা স্বামী দিতে না পারলে হতাশ হবেন না। জীবনসঙ্গীর সামর্থ্যের
কথা বিবেচনা করুন। অনেক স্ত্রী স্বামী কী দিতে পারল না তা নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ করতে
থাকেন। অনেক সময়ে নিজের বান্ধবীদের কাছে এ বিষয়ে অভিযোগ করেন। যার ফলে স্বামীর সঙ্গে
সম্পর্ক শীতল হতে থাকে। স্বামীকে খুশি রাখার জন্য অল্পতে সন্তুষ্ট থাকা স্ত্রীর জন্য
উত্তম। স্বামী যে জিনিস উপহার হিসেবে দেবেন সেটি নিয়ে স্ত্রীকে সন্তুষ্ট থাকা দাম্পত্য
সম্পর্কের সুস্থতার ক্ষেত্রে বাঞ্ছনীয়।
একসঙ্গে ঘুরুন:
স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে কোথাও ঘুরতে গেলে উভয়ের মধ্যে সম্পর্ক ভালো হয়। অবসর
পেলে কোনো রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়া যেতে পারে। দীর্ঘ ছুটিতে গ্রামের বাড়ি বা কোনো দর্শনীয়
স্থান থেকে ঘুরে আসা যেতে পারে। মনে রাখতে হবে, স্বামী-স্ত্রী একে অপরের বন্ধু। সপ্তাহে
অন্তত একবার স্বামীর সঙ্গে ঘুরতে বের হোন।