রাজধানীতে বায়ুদূষণ কমাতে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি
সমৃদ্ধ দুইটি ‘স্প্রে ক্যাননের’ মাধ্যমে পানি
ছিটাচ্ছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন। এই স্প্রে ক্যাননের দ্বারা পানি অনেক উঁচু ও দূর
পর্যন্ত ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। এতে করে বাতাসের সঙ্গে উড়তে থাকা ধুলোবালি পানির সঙ্গে
নিচে নেমে আসছে। এর ফলে আশপাশের কয়েক মিটার এলাকার ধুলোবালির দৌরাত্ম্য কমছে। শনিবার
(১৯ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর বনানী-উত্তরা ঘুরে এমনই চিত্র দেখা গেছে।
জানা যায়, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে
অত্যাধুনিক প্রযুক্তি সমৃদ্ধ দুইটি ‘স্প্রে ক্যানন’ গাড়ি জার্মানি
থেকে আমদানি করে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন। প্রতিটি গাড়িতে ১৫ হাজার লিটার পানি ধরে
এবং একটানা ৫ ঘণ্টাব্যাপী স্প্রে করতে পারে। এছাড়া রাস্তা ভেজানোর জন্যও রয়েছে স্প্রিং
লেয়ার সিস্টেম। রয়েছে সবগুলো সিস্টেম এক সঙ্গে চালানোর ব্যবস্থাও।
পুরো উত্তর সিটি করপোরেশনকে দুইটি অঞ্চলে
ভাগ করে ক্যানন-১, বনানী নেভি গেইট হতে স্প্রের কাজ শুরু করে। এয়ারপোর্ট, উত্তরা হাউস
বিল্ডিং হয়ে পুনরায় বনানী কবরস্থান এলাকায় এসে কাজ শেষ করে।
অন্যদিকে ক্যানন-২, মিরপুর মাজার রোড সিগন্যাল
থেকে স্প্রের কাজ শুরু করে। পরবর্তীতে গণভবন এলাকায়, মানিক মিয়া এভিনিউ, বিজয়নগর
স্মরণি, জাহাঙ্গীর গেট, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, ফার্মগেট, কাওরানবাজার হয়ে গাবতলী
এসে ওই দিনের কাজ শেষ করে।
ক্যানন-১ এর অপারেটিংয়ের দায়িত্বে আছেন
আরিফুল ইসলাম। তিনি বার্তা২৪.কম-কে জানান, তিনি শুরু থেকেই ক্যানন-১ এর অপারেটিংয়ের
দায়িত্বে আছেন। ওয়াটার স্প্রে ক্যানন দিয়ে ৪টা কাজ চালানো যায়। বায়ুদূষণ রোধে ওয়াটার
স্প্রে, রাস্তা পরিষ্কার করার জন্য সামনে পেছনে এক ধরনের স্প্রে যন্ত্র রয়েছে। তাছাড়া
উপরের দিকে অগ্নিনির্বাপক একটা ফ্লগ যন্ত্র রয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের কাজও করা যাবে।
প্রতিটি গাড়িতে ১৫ হাজার লিটার পানি ধরে। পানি শেষ হয়ে গেলে যেকোনো জলাশয় থেকে পানিও
নেওয়া যাবে।
বনানী- উত্তরা রোডে নিয়মিত যাতায়াত করেন
তাসরিফ সূর্য। তিনি বার্তা২৪.কম-কে বলেন, স্প্রে ক্যানন প্রতিদিন পানি ছিটাচ্ছে এটা
খুবই ভালো উদ্যোগ। তবে শুধুমাত্র কয়েকটা রাস্তায় পানি ছিটাচ্ছে অন্য এলাকাগুলোতেও পানি
ছিটানোর প্রয়োজন।
বায়ুদূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্রের (ক্যাপস) পরিচালক
ও পরিবেশ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার বার্তা২৪.কম-কে বলেন, গত কিছুদিন
যাবত পত্রপত্রিকায় দেখেছি দূষণ কমাতে স্প্রে করছে, এটা অবশ্যই ভালো উদ্যোগ। শুনেছি
সপ্তাহের ছুটির দিনগুলোতেও তারা স্প্রে করে। আমি গতকাল মিরপুর বেড়িবাঁধ থেকে আসার সময়
দেখেছি এটা পানি ছিটাচ্ছে। স্প্রে ক্যাননটা যেহেতু বেশিরভাগ সময় উপরের দিকে স্প্রে
করে সেক্ষেত্রে গাছ এবং রোড আইল্যান্ডের জন্যও ভালো। তবে এত বড় শহরের জন্য ২টা স্প্রে
গাড়ি যথেষ্ট নয়। কমপক্ষে ২০-২৫টা স্প্রে ক্যানন প্রয়োজন।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী
কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা বার্তা২৪.কম-কে বলেন, স্প্রে ক্যানন দুটি বায়ুদূষণ এবং পরিষ্কার
পরিচ্ছন্নতার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে ৷ তবে ২টা স্প্রে ক্যানন উত্তর সিটির জন্য পর্যাপ্ত
না। আমরা পরিকল্পনা করছি আরও কিছু স্প্রে ক্যানন কেনা যায় কিনা।