ঢাকা মহানগর পুলিশের
(ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেছেন, চাঞ্চল্যকর
ঘটনা রাজধানীর ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের (ইউল্যাব) শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ
ও হত্যার ঘটনায় করা মামলার অনুসন্ধানে গিয়ে দেখা গেছে, ঢাকা শহরের অনেক মেয়েরা সারাদিন
ঘুমায় আর রাতে সেজে টাকাওয়ালা ছেলেদের বিভিন্ন লাইসেন্সবিহীন রেস্টুরেন্টে নিয়ে যায়।
ডিজে পার্টির নামে সেখানে তারা মদ পার্টি করেন। পরে নাচানাচি করে ভোর বেলায় চলে যান।
তিনি বলেন, সম্প্রতি
উত্তরার ব্যাম্বু সুট রেস্টুরেন্টে এরই ধারাবাহিকতায় আরাফাত মদ খেয়ে মারা গেছেন আর
ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের (ইউল্যাব) ছাত্রী মাধুরী অতিরিক্ত মদপানে
অসুস্থ হয়েছেন পরে মারা গেছেন। আর এ ঘটনায় মাধুরীকে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় তার বাবার
করা মামলায় মাধুরীর বান্ধবী ফারজানা জামান নেহাও রিমান্ডে স্বীকার করেছেন তিনিও মদপানে
অসুস্থ হয়েছিলেন দুই দিন চিকিৎসাও নিয়েছেন।
আজ শনিবার তেজগাঁও
বিভাগের ডিসি মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ কার কার্যালয়ে এসব কথা বলেন।
এক প্রশ্নে জবাবে
মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, সমাজে বিচ্ছিন্নতার কারণে এইসব ঘটনা ঘটছে। দেখা গেছে
অনেকে পরিবারে বাবা-মায়ের মিল নেই। আর এর ফলে ছেলে-মেয়েদের মধ্যে বাজে প্রভাব পড়ছে।
তারা বাইরে গিয়ে নেশা করছেন। মদ খাচ্ছেন। এতে অনেকে বিষাক্ত মদ খেয়ে অসুস্থ হচ্ছেন
বা মারা যাচ্ছেন। এখন আমাদের কাজ হচ্ছে এই ধরণের মদ যারা বিক্রি করছেন তাদের বিরুদ্ধে
ব্যবস্থা নেয়া। আমাদের অভিযান চলছে। যারা ডিজে পার্টি, মদ পার্টির আয়োজক, যারা মদ বহন
করে পৌঁছে দেয় তাদের আমরা খুঁজে বের করছি।
পুলিশের এই কর্মকর্তা
বলেন, মাধুরীর বাবার করা মামলায় প্রত্যেক আসামিকে আমরা গ্রেপ্তার করেছি। এছাড়া আরও
যদি কেউ জড়িত থাকে তাদেরও গ্রেপ্তার করব।
তিনি বলেন, আমরা
দেখেছি ঢাকায় সপ্তাহে তিনদিন বৃহস্পতি, শুক্র ও শনিবার রাতে বাসা বা বিভিন্ন হোটেলে
ডিজে পার্টির নামে অরাজকতা ছড়িয়ে পরে। আরাফাত যে মারা গেলেন ওই রাতে গুলশানে আরও একটি
হোটেলে তিনি পার্টি করেছেন। আবার সেখান থেকে পার্টি করে তার এক গ্রুপ গেছে মাওয়াতে।
সেখান থেকে ফিরে এসে অসুস্থ হয়েছেন।
ডিসি হারুন বলেন,
সেই রাতে রায়হান মাধুরীকে নিয়ে মোহাম্মদপুরে একটি বাসায় আসেন। রিমান্ডে রায়হান স্বীকার
করেছেন তার সঙ্গে মাধুরীর শারীরিক সম্পর্ক হয়েছে ওই রাতে। পরে অসুস্থ হলে তাকে ইবনে
সিনা এরপর আনোয়ার খান হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে তার মৃত্যু হয়। তার প্রকৃত মৃত্যুর
কারণ রিপোর্ট না আসলে বলা যাচ্ছে না। তবে আমরা মনে করছি এবং রিমান্ডের থাকা তিনজনের
কথা বলে যেটা জানা গেছে মদপানে অসুস্থ হয়ে মৃত্যুটাই মূল কারণ হতে পারে।
নেহা সম্পর্কে তিনি বলেন, নেহা প্রতি রাতে ডিজে পার্টি করেন। সারা রাত বাইরে থাকেন। এই ডিজে পার্টির আড়ালে অন্য কোনও ব্যবসা আছে কিনা অথবা তার অন্য কোন পেশা কী, তার ইনকাম সোর্স কী, তার সঙ্গে কাদের সম্পর্ক আছে এসব নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।