বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে রেমিট্যান্স আহরণ বেড়েছে। এই মাসে ১৭০ কোটি ৪৪ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। যা আগের মাস ডিসেম্বরের চেয়ে ৭ কোটি ৩৮ লাখ ডলার বেশি।
মঙ্গলবার (১ ফেব্রুয়ারি) প্রকাশিত বাংলাদেশ ব্যাংকের রেমিট্যান্স সংক্রান্ত হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
তবে সার্বিকভাবে গত অর্থবছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরে এখন পর্যন্ত রেমিট্যান্স আহরণ কম। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছরের সাত মাসে রেমিট্যান্স এসেছে ১ হাজার ১৯৪ কোটি ৪০ লাখ ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে এসেছিল ১ হাজার ৪৯০ কোটি ডলার। সে হিসেবে চলতি অর্থ বছরের ১ম সাত মাসে ২৯৬ কোটি ডলার রেমিট্যান্স কম এসেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, একক মাস হিসেবে সবশেষ জানুয়ারিতে ১৭০ কোটি ৪৪ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে। যা আগের মাস ডিসেম্বরের চেয়ে ৭ কোটি ৩৮ লাখ ডলার বেশি। তবে এরপরও রেমিট্যান্সের এই পরিমাণ আগের বছরের জানুয়ারির চেয়ে ২৫ কোটি ৭৫ লাখ ডলার বা ১৩ শতাংশ কম।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত বছর কোভিডের কারণে প্রবাসীরা এক ধরনের অনিশ্চয়তা থেকে জমানো টাকা দেশে পাঠিয়েছেন। কেউ চাকরি হারিয়ে কিংবা ব্যবসা বন্ধ করে সব অর্থ পাঠিয়ে দেশে ফিরেছেন। এছাড়া ওই সময় অবৈধ চ্যানেলগুলোও বন্ধ ছিল। তাই বাধ্য হয়ে সবাই ব্যাংকিং চ্যানেলে অর্থ পাঠিয়েছেন। ফলে গত বছরের মাঝামাঝি পর্যন্ত রেমিট্যান্স প্রবাহ বেশি ছিল।
এখন ব্যবসা-বাণিজ্য সচল হয়েছে। শিক্ষা, চিকিৎসা, ভ্রমণসহ বহির্বিশ্বের সঙ্গে যাতায়াত বাড়ছে। ফলে ব্যাংকিং চ্যানেলের বাইরে চাহিদা বেড়েছে। এছাড়া সব টাকা না পাঠিয়ে অনেকে আবার জমাতে শুরু করেছেন। আবার সশরীরে যাওয়া-আসা শুরু হওয়ায় অনেকে বৈদেশিক মুদ্রা সঙ্গে করে নিয়ে আসছেন। এসব কারণে চলতি অর্থবছরে বৈধ পথে রেমিট্যান্স প্রবাহ কমেছে।
গত মাসে এক সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছিলেন, রেমিট্যান্স সংগ্রহের লক্ষ্য অর্জনে নগদ প্রণোদনা দুই শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২ দশমিক ৫ শতাংশ করা হয়েছে। প্রণোদনা দেওয়ার আগে বৈধ পথে মাত্র ৪৯ শতাংশ রেমিট্যান্স দেশে আসত। আমরা চেষ্টা করছি, প্রবাসীরা যত টাকা আয় করেন, তার পুরোটাই যেন বৈধ পথে আসে।
রেমিট্যান্স আহরণের হার বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে রেমিট্যান্সে এসেছে ১১৯৪ কোটি ডলার। এ হারে রেমিট্যান্স আসলে অর্থবছর শেষে রেমিট্যান্সের পরিমাণ দাঁড়াবে ২১ বিলিয়ন ডলারের মতো। যা অর্থমন্ত্রীর লক্ষ্যের চেয়ে ৫ বিলিয়ন ডলার কম।