দেশের দুই জেলায় কালবৈশাখী ঝড় ও বজ্রপাতে শিশুসহ আটজনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে ঝড়ে তিনজন ও শাল্লায় বজ্রপাতে দুজন এবং হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ের দুই ইউনিয়নে তিনজন। বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) ভোর ৪টা থেকে সকাল সাড়ে ১০টার মধ্যে পৃথক ঘটনাগুলো ঘটে।
সুনামগঞ্জ:
জগন্নাথপুরে পাটলী ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সোলেমানপুর গ্রামের লন্ডনপ্রবাসী বুলু মিয়ার বাড়িতে কেয়ারটেকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন হারুন মিয়া। তিনি পরিবার নিয়ে টিনশেড ঘরে বাস করতেন। ভোরে কালবৈশাখী ঝড় শুরু হলে একটি গাবগাছ ও আমগাছ উপড়ে তার ঘরের ওপর পড়ে।
এ সময় ঘরের ভেতর থাকা স্ত্রী মৌসুমা বেগম (৩৫), মেয়ে মাহিমা আক্তার (৪) ও ছেলে মো. হোসাইন (১) গুরুতর আহত হয়। পরে তাদের উদ্ধার করে জগন্নাথপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তিনজনকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত নারীর স্বামী মো. হারুন মিয়ার চাচাতো ভাই জানান, ঘটনার সময় তার চাচাতো ভাই মসজিদে নামাজ পড়তে যান। পরে কালবৈশাখী শুরু হয়। ঝড় শেষে তিনি বাড়ি এসে এ দেখেন তার স্ত্রী-সন্তানরা মৃত্যুবরণ করেছে।
জেলার শাল্লা উপজেলার সদর ইউনিয়নের শাল্লা গ্রামের বাসিন্দা মকবুল খাঁ (৪৫) ও তার ছেলে মাসুদ খাঁ (১২) সকাল সাড়ে ৬টার দিকে বাড়ির পাশের হাওর থেকে গরুর জন্য খড় আনতে যান। এ সময় বজ্রপাতে গুরুতর আহন হন তারা।
পরে স্থানীয়রা তাদের হাওর থেকে উদ্ধার করে পার্শ্ববর্তী আজমিরীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে শাল্লা থানার ওসি মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, বাবা-ছেলের মরদেহের সুরতহাল চলছে। পরে তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
হবিগঞ্জ:
হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলায় বজ্রপাতে দুই শিশু ও এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) সকালে পৃথক স্থানে এ তিনজনের প্রাণহানি ঘটে।
নিহতরা হলেন, বানিয়াচং উপজেলা সদরের তিন নম্বর দক্ষিণ-পূর্ব ইউনিয়নের তাতারী মহল্লার বাসিন্দা আক্কেল আলীর ছেলে হোসাইন আহমেদ (১২), একই মহল্লার আব্দুর রহমানের মেয়ে রুমা আক্তার (১২) ও খাগাউড়া ইউনিয়নের এড়ালিয়া গ্রামের সামছুল মিয়ার ছেলে আলমগীর মিয়া (২৬)।
স্থানীয়রা জানান, রুমা ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী। সকাল ৭টার দিকে সে বাড়ির পাশের মাঠে লাকড়ি শুকাচ্ছিল। এসময় বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই মেয়েটির মৃত্যু হয়।
অন্যদিকে সকালে হোসাইন আহমদ ও আলমগীর মিয়া নিজেদের এলাকার হাওরে কৃষি কাজ করছিলেন। পৃথক স্থানে দু’জন বজ্রপাতে আহত হলে স্থানীয়রা তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। এসময় দায়িত্বরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বানিয়াচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এমরান হোসেন জানান, নিহত ব্যক্তিদের মরদেহ তাদের নিজ নিজ বাড়িতে রাখা হয়েছে। প্রয়োজনীয় কাজ শেষে তাদের দাফন করা হবে।