আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে সর্তকবাণী দেওয়ার পর এবার তার প্রশংসা করলেন নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভার মেয়র পদপ্রার্থী আবদুল কাদের মির্জা। একই সঙ্গে তিনি নির্বাচনে নিয়োজিত ম্যাজিস্ট্রেটদের সতর্ক করে দিয়েছেন।
সোমবার সকালে তিনি বসুরহাট বাজারে ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি ও সব ব্যবসায়ীদের উদ্যোগে বসুরহাটের রূপালী চত্বরে আয়োজিত নির্বাচনী সমাবেশে তিনি বলেন, নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ, বসুরহাট ও কবিরহাট এলাকার এমন কোনো জায়গা নেই যেখানে ওবায়দুল কাদেরের উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি।
এসময় তিনি নির্বাচনে নিয়োজিত ম্যাজিস্ট্রেটদের সর্তক করে দিয়ে বলেন, আপনারা নিরপেক্ষ থাকবেন। ম্যাজিস্ট্রেটরা নির্বাচনের দিন কোনো অনিয়ম করলে তাদের খবর আছে। নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কেউ যদি অনিয়ম করে তবে তার খবর আছে।
সম্প্রতি কাদের মির্জা তার বড় ভাই ওবায়দুল কাদের, দলের কেন্দ্রীয় ও জেলা পর্যায়ের নেতা এবং নোয়াখালী জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে বক্তব্য দেন।
জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি আবদুল কাদের মির্জা বলেন, 'আমি অন্যায় অসত্যের বিরুদ্ধে কোনো আপোস করব না। আগামী ১৬ জানুয়ারির এই নির্বাচনকে অনিয়মের বিরুদ্ধে আন্দোলনের অংশ হিসেবে নিয়েছি। নির্বাচন অবাধ নিরপেক্ষ এবং সুষ্ট হতে হবে।'
নির্বাচনকে বানচাল করতে ষড়যন্ত্র চলমান রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'এক যুবলীগ নেত্রী আমাকে মোবাইলফোনে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করে হুমকি দিয়েছেন। মোবাইল প্রযুক্তি ব্যবহার করে ওই নারীর নাম-ঠিকানা পরিচয় পাওয়া গেলেও ডিসি এসপি এবং নির্বচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা কোনো ব্যবস্থা নেননি। আমি এসব কথা বললেই কেন্দ্রের নেতারা ক্ষেপে যান। ১৬ জানুয়ারির ভোটে যে কেন্দ্রে অনিয়মের অভিযোগ উঠবে সঙ্গে সঙ্গে সে কেন্দ্রের ভোট বন্ধ হয়ে যাবে। আমি যদি অনিয়মের ভোটের সঙ্গে জড়িত থেকে বিজয়ী হই তবে সেই দিনই যেন আমার মৃত্যু হয় এই প্রার্থনা করবো। আমি আমার প্রতিপক্ষ প্রার্থীকে অভিনন্দন জানাই।'
তিনি অভিযোগ করেন, নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক একরামুল করিম চৌধুরী ও তার ছেলে সাবাব চৌধুরীর বাড়িতে অস্ত্র এনেছে। যদি নির্বাচনের দিন কোন লোক মারা যায় কিংবা কোন লোক আহত হয় অথবা কারো ঘরে অগ্নি সংযোগ করা হয় তবে ডিসি, এসপি ও রিটার্নিং কর্মকর্তার রেহাই নেই।
তিনি ১৯৯৬ ও ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিরপেক্ষ হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'নির্বচনের অনিয়ম নিয়ে কথা বললেই আমি খারাপ। আমাদের মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এ এলাকার সংসদ সদস্য। আমি তার শুভাকাঙ্ক্ষী নই। নোয়াখালীর ডিসি খোরশেদ আলম খান একরাম চৌধুরীর মাস্ক মুখে লাগিয়ে চলেন। তার কাছ থেকে কি করে ন্যায় ও ভালো কিছু আশা করবে জনগণ?
আবদুল কাদের মির্জা অভিযোগ করেন, কোম্পানীগঞ্জের কৃতি সন্তান নির্বাচন কমিশনার শাহাদাত হোসেন বসুরহাট পৌরসভা নির্বাচন পর্যবেক্ষণে ১২ জানুয়ারি থেকে এলাকায় অবস্থান করার কথা থাকলেও অদৃশ্য শক্তির ইশারায় তিনি আসবেন না। তবে নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথা দিয়েছেন তিনি।'
তিনি বলেন, নিরপেক্ষ ভোটে যদি আমাকে ভালো লাগে নৌকায় ভোট দেবেন। আমি হেরে গেলে প্রতিপক্ষকে অভিন্দন জানাবো। আমাকে, আমার ভাই ওবায়দুল কাদের ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভালো না লাগলে তাদের নাম হৃদয়ে ধারণ না করলেও চলবে। কিন্তু জীবন ও যৌবন উৎসর্গ করে এই দেশ যে স্বাধীন করেছেন সেই বঙ্গবন্ধুর কথা, তার নীতি আদর্শ হৃদয়ে ধারণ করবেন।
সভায় উপস্থিত ছিলেন-কোম্পনীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহাবউদ্দিন, উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি খিজির হায়াত খান নূর নবী চৌধুরীসহ প্রমুখ।